শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

পাওয়েলের ৬১ রান যখন সাকিবের ইনিংস সর্বোচ্চ ৬৮ থেকেও বড়

স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪ জুলাই ২০২২, ০৯:৪০ এএম

শেয়ার করুন:

পাওয়েলের ৬১ রান যখন সাকিবের ইনিংস সর্বোচ্চ ৬৮ থেকেও বড়

গতকাল দিবাগত রাতে ডমিনিকায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ-বাংলাদেশের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে দুই দলের মধ্যে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলেছেন টাইগার অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। ৫২ বলে  ৬৮ রানের হার না মানা ইনিংসে ম্যাচ সেরা আর হতে পারলেন কই। সাকিবের থেকেও ৭ কমে ৬১ রানের ঝড়ো ইনিংসে ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন স্বাগতিক হার্ড হিটার ‘রভম্যান পাওয়েল!’ 

সাকিব বেশি রান করে হার না মানলেও হার মেনেছেন বাকি ব্যাটাররা। জিততে হলে যেখানে বাংলাদেশ দলের দরকার ছিল ১৯৪ রান, যা প্রথাগত হার্ড হিটার ব্যাটার না থাকা টাইগারদের জন্য সহজ নয়। সেখানে অন্তত লড়াইয়ের আশা করেছিলেন দেশের সমর্থকেরা। প্রথম থেকে অ্যাটাক করে খেলা উচিত ছিল যে ইনিংসের মূল নীতি, সেখানে কিনা লড়াইয়ের মানসিকতাই দেখা যায়নি সফরকারীদের। 


বিজ্ঞাপন


এর প্রমাণ মিলে ছোট একটা চিত্রে। প্রথম ৪৫ বলে বাংলাদেশ দলের ইনিংসে ছিল না কোনো বাউন্ডারি। এ যেন বড় লক্ষ্যকে দেখে নিজেদের চুপ হয়ে থাকা! কোনো রকম ব্যাট করে হারের পাল্লা হালকা করার লড়াইয়ে ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ হিসেবে দেখা দেয় নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানো। 

১৯৪ রান যেখানে তাড়া করে জিততে হবে সেখান তো প্রথম থেকেই উইকেট ধরে রেখে আক্রমণাত্মক মেজাজে খেলা উচিত। কিন্তু সে আক্রমণ তো দূরের কথা, মাত্র ৮ রানেই ফিরে যান দলের দুই টপ অর্ডার ব্যাটার-  এনামুল হক বিজয় ও লিটন দাস।

ইনজুরির কারণে মুনীম শাহরিয়ার না থাকায় ওপেনিংয়ে ব্যাট হাতে নামা বিজয় ফিরে যান মাত্র ৩ রান করে আর লিটন করেন ৫। দুজনকেই তুলে নেন ওবেদ ম্যাকয়।


বিজ্ঞাপন


এ দিন সুবিধা করতে পারেননি অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও। ৭ বলে এক চার আর এক ছক্কায় লড়াইয়ের ইঙ্গিত দিয়েও শেষ পর্যন্ত আউট হয়েছেন মাত্র ১১ রানেই।

ব্যাটিংয়ে মূলত বাংলাদেশের হয়ে লড়েছেন সাকিব। তাকে সঙ্গ দিয়েছেন ২৭ বলে ৩৪ রান করা আফিফ হোসেন। সাকিব ৩ ছক্কা আর ৫ চারের সাহায্যে ৫২ বলে অপরাজিত থাকেন ৬৮ রানে। 

কিন্তু সাকিবের ৬৮ রান যেন প্রথমে ব্যাট করা পাওয়েলের থেকেও কম! কারণও আছে অবশ্য। সাকিবের এমন ইনিংস মূল্যহীন হয়েছে মূলত বাংলাদেশের ব্যাটারদের ব্যর্থতায়। 

সাকিবের ৫ টি চার আর ৩ ছক্কার সঙ্গে আফিফই ছিলেন একমাত্র সঙ্গী। এ বাঁহাতি ব্যাটার খেলেন ৩ টি চার ও ১ ছক্কার মার। ব্যাটিং ইনিংসে বলার মতো এ দুজন ছাড়া আর কেউই লড়তে পারেননি গতকাল। 

২০১৯ সালের পর জাতীয় দলে সুযোগ পেয়ে গতকালও ব্যর্থ হন বিজয়। আর তাকে অনুসরণ করেন লিটন, মাহমুদউল্লাহ, মোসাদ্দেক হোসেনরা।

সাকিব আর আফিফ ছাড়া আর কোন ব্যাটারই ২০ রানের কোটাও ছুঁতে পারেননি গতকাল। দুই অঙ্কের ঘরে রান নিতে পারেননি চার ব্যাটার। সাকিব আর আফিফের মোট ৮ টি চার আর ৪ টি ছক্কা ছাড়া বাকি ৬ ব্যাটারদের থেকে আসে মাত্র ৩ টি চারের মার আর ২ টি ছক্কা। 

এ ছাড়া সাকিব যখন ওয়ান ডাউনে ব্যাট হাতে নামেন তখন থেকেই চাপে ছিলেন তিনি। এক প্রান্ত তিনি আগলে রাখলেও নিয়মিত বিরতিতে ফিরে গেছেন বাকিরা। তাই আফিফের সঙ্গে ৪৪ বলে ৫৫ আর মোসাদ্দেকের সঙ্গে ২৮ বলে ৫৩ রানের জুটি গুলোয় বড় অবদান রেখেও হয়েছেন ব্যর্থ। দল থেমেছে প্রতিপক্ষের চেয়েও ৩৫ রান কমে।

বিপরীতে মাত্র ২৮ বলে ৬ ছক্কা আর ২ চারের সাহায্যে ক্যারিবীয় মিডল অর্ডার ব্যাটার পাওয়েলের ৬১ রানের অপ্রতিরোধ্য ইনিংস দলকে দিয়েছে বড় রানের সংগ্রহ। 

পাওয়েল ব্যাট হাতে নামার আগেই দল পায় শক্ত ভিত। তেরো ওভার না যেতেই দলীয় ১০০ রান ছঁয়ে ফেলে স্বাগতিকেরা। ব্র্যান্ডন কিংয়ের ৫৭ আর অধিনায়ক নিকোলাস পুরানের ৩৪ রানে ভালো সূচনা পায় দল। 

তখন পতন হয় মাত্র ৩ উইকেটের। এমন সময় ব্যাট হাতে নেমে অনায়াসেই বাকি কাজটা সারেন পাওয়েল। সাকিবের মতোই হার না মানা ৭ রানের কম ইনিংস নিয়ে তাই দলকে বড় পুঁজি এনে দেওয়ায় শেষ পর্যন্ত টাইগার অলরাউন্ডারকে ছাড়িয়েছেন পাওয়েল। 

পাওয়েলের ঝড়ে শেষ পর্যন্ত ৫ উইকেটে ১৯৩ রানের বড় সংগ্রহ পায় স্বাগতিকেরা। রোববার টস হেরে বোলিংয়ে প্রথম ব্যর্থতার পর ব্যাট হাতেও হতাশ করে বাংলাদেশ। পেতে হয়েছে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ৩৫ রানের হার। 

সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টিতে ৭ জুলাই মুখোমুখি হবে দুই দল। ১-০ তে এগিয়ে আছে স্বাগতিকেরা। 

এসও 

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর