ভারত-পাকিস্তান মানেই তো টানটান উত্তেজনা, আর সেই উত্তেজনা এবার জন্ম দিল এক নতুন বিতর্কের। হ্যান্ডশেক কাণ্ড! গত রোববার দুবাইয়ে এশিয়া কাপের ম্যাচে পাকিস্তানকে উড়িয়ে দেয় ভারত। জয়ের নায়ক ছিলেন অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব। তবে ম্যাচের পর যা ঘটল, তা ছাপিয়ে গেল খেলার উত্তাপকেও। জয়ের পর প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়দের সঙ্গে হাত মেলাননি সূর্যকুমার। এমনকি টসের সময়ও পাকিস্তানের অধিনায়ক সালমান আলী আগার সঙ্গে করমর্দন বা কুশল বিনিময় করেননি তিনি। অনেকেই এটিকে অখেলোয়াড়সুলভ আচরণ বলে সমালোচনা করছেন।
এই বিতর্ক ঘিরে সবচেয়ে বিস্ফোরক ঘটনা ঘটে পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার মোহাম্মদ ইউসুফের হাত ধরে। এক টিভি আলোচনায় সূর্যকুমারকে নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে তিনি একাধিকবার তাকে ‘শূকর’ বলে গালি দেন। এই মন্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় তোলে। এর জবাবে ভারতের সাবেক অলরাউন্ডার ও ১৯৮৩ বিশ্বকাপজয়ী মদন লাল ইউসুফকে তীব্র আক্রমণ করেন।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন-পাকিস্তানের ম্যাচ বাতিলের হুমকির মুখে যে সিদ্ধান্ত নিল আইসিসি
আরও পড়ুন-সূর্যকুমারকে ‘শূকর’ বললেন পাকিস্তানি কিংবদন্তি
ইন্ডিয়া টুডেকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে ইউসুফের মন্তব্যকে ‘লজ্জাজনক’ ও সাবেক ক্রিকেটারের অযোগ্য আচরণ বলে আখ্যা দেন। লালের ভাষায়, ‘দেখুন, এটাই পাকিস্তানের চরিত্র। আপনি কি কাউকে এভাবে গালি দিতে পারেন? এরা এগুলোই জানে, আর কিছু জানে না। এর বেশি কিছু বলার নেই। গালাগালি করা ভীষণ ভুল, আর সেটা যদি সাবেক ক্রিকেটারের কাছ থেকে আসে, তাহলে সেটা সম্পূর্ণ বোকামি।’
শুধু তাই নয়, ইউসুফের পক্ষ থেকে উত্থাপিত আম্পায়ারিং পক্ষপাতিত্বের অভিযোগকেও উড়িয়ে দেন লাল। তার মতে, ডিআরএসসহ আধুনিক প্রযুক্তির যুগে এ ধরনের দাবি ভিত্তিহীন। সাবেক ভারতীয় কোচের মতে, ইউসুফের মন্তব্য শুধু সূর্যকুমার যাদবকে অপমান করেনি, বরং খেলার চেতনাকেও আঘাত করেছে।
বিজ্ঞাপন
এর আগে পাকিস্তানের টিভি চ্যানেলে ইউসুফে সূর্যকুমারককে নিয়ে বলেন, ‘ভারত সিনেমার দুনিয়া থেকে বের হতে পারছে না। আম্পায়ার আর ম্যাচ রেফারির মাধ্যমে জিতছে। এটা লজ্জাজনক!’ এরপরই তিনি সূর্যকুমারকে গালাগাল দিতে থাকেন। এই মন্তব্য মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঝড় ওঠে। ভারতের ভক্তরা ইউসুফের এমন আচরণে চরম ক্ষুব্ধ।
আরও পড়ুন-জাভেদ মিয়াঁদাদের যে রেকর্ড ৩৮ বছরেও ভাঙতে পারেনি কেউ
আরও পড়ুন-জাপানে পাকিস্তান ফুটবল দলের কেলেঙ্কারি, এরপর যা হলো
বিতর্কের পর ইউসুফ এক্স-এ (সাবেক টুইটার) একটি পোস্টে বলেন, ‘আমি কাউকে অসম্মান করতে চাইনি। আবেগের বশে কথাগুলো বলে ফেলেছি। তবে ইরফান পাঠান যখন আফ্রিদিকে ‘ঘেউ ঘেউ করা কুকুর’ বলেছিল, তখন তো ভারতীয় মিডিয়া সেটাকে প্রশংসা করেছিল!’
ইউসুফ যে ঘটনার কথা বলছেন, সেটি ইরফান পাঠানের এক পুরনো সাক্ষাৎকার থেকে উঠে এসেছে। সেখানে পাঠান জানান, ২০০৬ সালের পাকিস্তান সফরে আফ্রিদির আচরণে বিরক্ত হয়ে তিনি ব্যঙ্গাত্মকভাবে বলেছিলেন, ‘আফ্রিদি তো অনেকক্ষণ ধরে ঘেউ ঘেউ করছে, নিশ্চয়ই কুকুরের মাংস খেয়েছে!’ তার কথায়, এরপর থেকে আফ্রিদি আর কখনো তার সঙ্গে বাকবিতণ্ডা করেননি।
এসটি

