একদিকে বলিউডের চিরসবুজ সৌন্দর্য ও রূপকথার নায়িকা রেখা, অন্যদিকে পাকিস্তানের হার্টথ্রব, সাবেক ক্রিকেট কিংবদন্তি ও পরবর্তীকালে রাজনীতির পোস্টার বয় ইমরান খান। যখন দুই জগতের দুই তারকা একে অপরের কাছাকাছি এসেছিলেন, তখন শুধু মুম্বাই বা লাহোর নয়, উত্তাল হয়েছিল গোটা উপমহাদেশ!
ভারত-পাকিস্তানের রাজনৈতিক টানাপোড়েনের মাঝেও বোম্বে শহরের বাতাস যেন ফিসফিসিয়ে বলত ‘রেখা আর ইমরান... এ তো ঠিক সিনেমার মতো!’
বিজ্ঞাপন
৪০ বছর পেরিয়ে গেলেও এই অসমাপ্ত প্রেমকাহিনি আজও মিডিয়ার হট কেক। এবং হ্যাঁ, আবারও আলোচনায়। কারণ ভাইরাল হয়েছে ১৯৮৫ সালের একটি পুরনো প্রতিবেদন, যেখানে স্পষ্টই বলা হয়েছিল, রেখা ও ইমরানকে প্রায়ই একসঙ্গে দেখা যেত মুম্বাইয়ের সমুদ্র সৈকতে, রেস্টুরেন্টে, কিংবা কোনো হাই-ফ্যাশন পার্টিতে। এমনটায় জানায় এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে।
প্রশ্নটা তখনকার মতো আজও উন্মুক্ত। তবে যাঁরা তাদের কাছ থেকে দেখেছেন, বলেছিলেন এই সম্পর্ক ছিল কেবল বন্ধুত্বের ছায়ায় ঢাকা কোনো ‘প্লেটোনিক’ কাহিনি নয়, বরং সেখানে ছিল রোমান্সের গাঢ় ছোঁয়া। এমনকি এমন গুঞ্জনও শোনা গিয়েছিল, ইমরান খান কয়েক সপ্তাহ মুম্বাইয়ে কাটিয়ে গিয়েছিলেন শুধুই রেখার সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য।
সেই সময়ের প্রতিবেদন আরও এক চমকপ্রদ তথ্য দেয়, রেখার মা পুষ্পাবল্লী ছিলেন ইমরান খানের দারুণ ভক্ত! তিনি নাকি এক জ্যোতিষীর কাছে গিয়েছিলেন মেয়ের ভাগ্য যাচাই করতে ইমরানের সঙ্গে বিয়েটা কতটা শুভ হবে তা জানার জন্য। যদিও সেই জ্যোতিষ কী বলেছিলেন, তা আজও অজানা। তবে মা বিশ্বাস করতেন, ইমরান তাদের পরিবারের একজন যোগ্য সদস্য হতে পারেন।
_20250905_145144938.webp)
বিজ্ঞাপন
যেখানে বলিউডে সম্পর্ক মানেই গসিপের খোরাক, সেখানে রেখা-ইমরান জুটির গল্প হয়ে উঠেছিল পুরোটাই এক রহস্য। এই সম্পর্ক নিয়ে রেখা কখনো কোনো মন্তব্য করেননি।
ইমরান খান অবশ্য একবার বলেছিলেন, ‘নায়িকাদের সঙ্গে কিছু সময় কাটানো মন্দ নয়। কিন্তু আমি কখনো কোনো সিনেমার নায়িকাকে বিয়ে করার কথা ভাবিনি।’
রেখা বিয়ে করেন দিল্লির ব্যবসায়ী মুকেশ আগরওয়ালকে। ১৯৯০ সালের ২ অক্টোবর, এক ভয়াবহ সকালে খবর আসে, আত্মহত্যা করেছেন মুকেশ। সেই সময় রেখা ছিলেন লন্ডনে। মুকেশের মৃত্যুর পর ‘বিধবা’ তকমা, মিডিয়ার ট্রায়াল আর একের পর এক সমালোচনার মুখে পড়ে গিয়েছিলেন রেখা। আর সেই থেকেই যেন হয়ে ওঠেন এক ‘রহস্যময়ী দেবী’। আর বিয়ের কথা? তিনি আর কখনোই সংসার পাতেননি।
রেখার সঙ্গে সম্পর্ক না হলেও, জীবনে প্রেমের অভাব হয়নি ইমরান খানের। তবে সবগুলো সম্পর্কই শেষ পর্যন্ত টেকেনি। ১৯৯৫ সালে বিয়ে করেন ব্রিটিশ ধনকুবের পরিবারের মেয়ে জেমিমা গোল্ডস্মিথকে। দুই সন্তানের জন্ম হলেও, এই বিয়ে টেকে মাত্র ৯ বছর। এরপর ২০১৫ তে বিয়ে করেন সাংবাদিক রেহাম খানকে। ১০ মাসেই বিচ্ছেদ।
২০১৮ বিয়ে করেন সুফি গুরু বুশরা বিবিকে। গুঞ্জন আছে, বুশরা স্বপ্নে দেখেছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার চাবিকাঠি নাকি তারই সঙ্গে ইমরানের বিয়ে। আর ঠিক সেটাই হয়। সেই বছরই প্রধানমন্ত্রী হন ইমরান খান। তবে ২০২২ সালে অনাস্থা ভোটে ক্ষমতা হারান। এরপর কারাগার, রাজনীতি, এবং আবারো উঠে আসে পুরনো প্রেমকাহিনির গল্প।

