বুয়েন্স আয়ার্সের রাতটা ছিল যেন স্বপ্নের মতো। আকাশজুড়ে আতঁশবাজির ঝলক, বাতাসে ছড়িয়ে থাকা অদ্ভুত এক আবেগ। মনুমেন্টাল স্টেডিয়ামে জায়গা নেই, গ্যালারিতে কাঁপছে নীল-সাদা ঢেউ। হাজারো কণ্ঠে একটাই নাম মেসি... মেসি... মেসি!
সেই আবেগঘন পরিবেশে ৩৯ মিনিটে সময় যেন থমকে গেল। জুলিয়ান আলভারেজের পাস থেকে চিরচেনা বাম পায়ের জাদু দেখালেন লিওনেল মেসি। ঠাণ্ডা মাথায় চিপ করে বল তুলে দিলেন ভেনেজুয়েলার গোলরক্ষক রোমোর মাথার ওপর দিয়ে। বল যখন জালে জড়াল, পুরো শহর যেন কেঁপে উঠল উল্লাসে। কান্না আর হাসির মিশ্রণে দর্শকের চোখে দেখা দিল এক অন্যরকম ছবি। যেন সবাই জানেন, এই গোল শুধু একটি গোল নয়, ইতিহাসের এক বিদায়ী মুহূর্ত।
বিজ্ঞাপন
লাউতারো মার্টিনেজ ব্যবধান দ্বিগুণ করার পরও গল্প শেষ হয়নি। ৮০ মিনিটে থিয়াগো আলমাদার নিখুঁত পাস পেয়ে আবারও সহজ-সরল ভঙ্গিতে জালে ঠেলে দিলেন বল। দ্বিতীয় গোলের পর মেসির সেই শান্ত হাসি, আলতো হাত নেড়ে দেওয়া অভিবাদন।
শেষ বাঁশি বাজতেই মনুমেন্টাল কেঁপে উঠল আরেকবার। সতীর্থরা এসে জড়িয়ে ধরলেন মেসিকে, গ্যালারি একসাথে গান ধরল। আতঁশবাজির আলোয় গর্জে উঠল বিদায়ের সুর।
এটা কেবল একটি ম্যাচ ছিল না, এটা ছিল এক যুগের শেষ দৃশ্যের শুরু। ফুটবলের সবচেয়ে বর্ণাঢ্য অধ্যায় লিখতে থাকা সেই মানুষটির বিদায়ের দিন গুনতে শুরু করেছে বিশ্ব। মেসি হয়তো আর একদিন মাঠে নামবেন, কিন্তু আর্জেন্টিনার মাটিতে এভাবে তাঁকে আর দেখা যাবে না।
মনুমেন্টালের আকাশ তাই সাক্ষী হলো এক অমর ছবির। যেখানে ফুটবল মানে মেসি, আর মেসি মানে চিরন্তন ভালোবাসা।

