ভারতের টেস্ট অধিনায়ক শুবমান গিল। তার নেতৃত্বেই ইংল্যান্ডে ঐতিহাসিক টেস্ট সিরিজ ড্র করেছে ভারত। তিন ফরম্যাটের অধিনায়ক হিসেবেই ভাবা হচ্ছে তাঁকে। তবে এবার এশিয়া কাপের জন্য ভারতের স্কোয়াডে তিনি জায়গা পাচ্ছেন না, এমনটাই জানিয়েছে ভারতের সংবাদমাধ্যম। ১৫ সদস্যের চূড়ান্ত দলে তাকে কিভাবে রাখা যায়, তা নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন নির্বাচকরা। তাদের মতে, বর্তমান ভারতীয় টি-টোয়েন্টি পরিকল্পনায় গিলের জায়গা খুব একটা নিশ্চিত নয়।
দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৯ আগস্ট এশিয়া কাপের জন্য দল নির্বাচনী সভা বসার আগে এই সিদ্ধান্ত বোর্ড কর্তাদের জানিয়ে দেওয়া হবে। ইতোমধ্যে সুর্যকুমার যাদব ফিটনেস টেস্টে উত্তীর্ণ হওয়ায় তাকে অধিনায়ক রেখেই দল গঠনের পরিকল্পনা চলছে।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন- ৬ গোলে হেরে কান্নায় ভেঙে পড়লেন নেইমাররা, চাকরি হারালেন কোচ
আরও পড়ুন- পাকিস্তান ফিরিয়ে দেওয়ায় বাংলাদেশকেই আমন্ত্রণ ভারতের
নির্বাচনের আগেই কিছু অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় গিলকে একাদশে রাখার সম্ভাবনা নিয়ে কথা হয়। কারণ, তাকে দলে নিলে ওপেনার হিসেবেই খেলাতে হবে। কিন্তু সমস্যা হলো আভিষেক শর্মা এবং সঞ্জু স্যামসন ওপেনিংয়ে ওপরে দুর্দান্ত খেলে আগেই জায়গা পাকা করে ফেলেছেন। ফলে যাদের ওপর এতদিন ভরসা করে দল গড়া হয়েছে, তাদের সরানো একেবারেই চায় না ম্যানেজমেন্ট।
এক সময় তিলক বর্মাকে বাদ দিয়ে গিলকে রাখার কথাও ওঠে, তবে তাৎক্ষণিকভাবে তা নাকচ করে দেন টিম ম্যানেজমেন্ট। কারণ, আইসিসি টি-টোয়েন্টি ব্যাটারদের র্যাংকিংয়ে তিলক বর্তমানে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন। তাছাড়া, বেঞ্চে বসিয়ে রাখার জন্য তারা গিলকে দলে নিতে রাজি নন নির্বাচকরা। সম্প্রতি তরুণদের নিয়ে গড়া ভারতীয় দল ইংল্যান্ডে ২-২ ব্যবধানে টেস্ট সিরিজ ড্র করেছে। তবে এই লাল বলের সাফল্য সাদা বলের দলে খুব একটা প্রভাব ফেলবে না বলেই মনে করছেন অনেকে। নির্বাচকদের মতে, ভিন্ন ফরম্যাটে ভিন্ন পরিকল্পনা থাকা জরুরি।
বিজ্ঞাপন
বোর্ডের এক সূত্র জানিয়েছে, “গিল যদি স্কোয়াডে থাকেন, তাহলে তাকেই ওপেন করাতে হবে। কিন্তু খেলানো না হলে তাকে নেওয়ারই মানে হয় না। আর গিলকে জায়গা দিতে গেলে সঞ্জুকে বাদ পড়তে হবে, তখন হয়তো জিতেশের খেলার সুযোগ তৈরি হবে। কিন্তু সঞ্জু তো সাম্প্রতিক সময়ে ভালোই খেলেছেন, তাকে বাদ দেওয়া কতটা যুক্তিসঙ্গত হবে?”
এই মুহূর্তে তৃতীয় ওপেনার হিসেবে যশস্বী জয়সওয়ালকেই ভাবছে টিম ইন্ডিয়া। যদিও বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য হয়েও একটি ম্যাচও খেলতে পারেননি তিনি, তবু তাকে বাদ দিয়ে গিলকে নেওয়ার প্রস্তাব টিম ম্যানেজমেন্ট ইতোমধ্যে বাতিল করে দিয়েছে। জুলাই ২০২৪-এ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পাল্লেকেলেতে গিলের শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ ছিল। এরপর বাংলাদেশ, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইংল্যান্ড সিরিজে তাকে রাখা হয়নি। তবে লাল বলের ফরম্যাটে ধারাবাহিক পারফরম্যান্সের কারণে আবারও সাদা বলের দলেও তার দাবি জোরালো হচ্ছে।
আইপিএলেও গিল ছিলেন দুর্দান্ত। ৬৫০ রান করে তিনি চতুর্থ সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হয়েছিলেন। টেস্টে সাফল্য পাওয়ায় শুবমান গিলকে ভারতের তিন ফরম্যাটের অধিনায়ক করার কথাও ওঠে। তবে ইংল্যান্ড সিরিজে সাফল্য পেলেও নির্বাচকরা তড়িঘড়ি করে এমন সিদ্ধান্তে যেতে চাইছেন না। বরং বর্তমান অধিনায়ককেই রেখে দল চালিয়ে নিতে চাইছেন তারা, যিনি এখনও পর্যন্ত একটিও সিরিজ হারেননি।
এশিয়া কাপের স্কোয়াড ঘোষণার পরেই চূড়ান্তভাবে বোঝা যাবে গিলের ভাগ্যে কী লেখা আছে। তবে এখন পর্যন্ত যা আভাস, তা গিল ভক্তদের জন্য সুখবর নয় বলেই মনে হচ্ছে।

