টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ফেরিওয়ালা ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটাররা। তাদের মধ্যে অন্যতম আন্দ্রে রাসেল। বিশ্বের বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলেছেন দাপটের সঙ্গে। জাতীয় দলের জার্সিতেও তার অবদান অসামান্য, জিতেছেন সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের বিশ্বকাপ। এবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলছেন তিনি। তার আগে নিজের সবচেয়ে গর্বের মুহূর্তটা তুলে ধরলেন এই ক্যারিবীয় অলরাউন্ডার। ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সেমিফাইনালের সেই ম্যাচটাই তাঁর কাছে সবচেয়ে স্পেশাল।
মুম্বাইয়ে অনুষ্ঠিত ওই ম্যাচে ভারতের দেওয়া ১৯৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে পঞ্চম ব্যাটার হিসেবে ক্রিজে আসেন রাসেল। তখন ওয়েস্ট ইন্ডিজের দরকার ছিল ৪১ বলে ৭৭ রান। রাসেল খেলেন এক দুর্দান্ত ইনিংস, ২০ বলে ৪৩ রান করে অপরাজিত থেকে দলকে জেতান। ম্যাচের শেষ ওভারে বিরাট কোহলির বল মিড উইকেটের ওপর দিয়ে পাঠিয়ে জয় নিশ্চিত করেন, হাতে ছিল তখনও ২ বল।
বিজ্ঞাপন
ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রাসেল বলেন, “নিঃসন্দেহে ২০১৬ বিশ্বকাপের সেই সেমিফাইনালটা আমার সেরা মুহূর্ত। আমি আর লেন্ডল সিমন্স দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়ি। অবশ্য আমাদের ব্যাটারদের দারুণ শুরু না হলে এটা সম্ভব হতো না।”
ভারতের মাটিতে, পুরো গ্যালারি স্বাগতিকদের পক্ষে, সেই চাপের মধ্যেই ১৯০-র বেশি রান তাড়া করে জেতাটা ভীষণ স্মরণীয় ছিল বলে মনে করেন রাসেল। “ভারতের মতো দলের বিপক্ষে, তাদের মাঠে এমন রান তাড়া করাটা সহজ না। গ্যালারির পুরো চাপ ছিল আমাদের ওপর। তবে উইকেটটা ভালো ছিল, আর ড্রেসিংরুমে থাকা ব্যাটারদের ওপর আত্মবিশ্বাস ছিল, যেটা আমাকে নিজের খেলা খেলার স্বাধীনতা আর সাহস দিয়েছিল।”
ওই সেমিফাইনালের পর ফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে দ্বিতীয়বার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। রাসেল ছিলেন দুইবারই দলের অংশ। “দুইটা বিশ্বকাপ জেতা- এটাই আলাদা এক অনুভূতি। আপনি ঘুমাতে যান, তারপর জেগে দেখেন মাত্র দুই ঘণ্টা ঘুমিয়েছেন, কিন্তু একদম ফ্রেশ লাগছে, কারণ আপনি ইন্টারনেটে গিয়ে ওইসব মুহূর্ত আর শুভেচ্ছা বার্তাগুলো দেখতে চান,” বলেছেন রাসেল। তিনি বলেন, “ওই দুইটা মুহূর্তই ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে খেলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্মৃতি আমার জন্য।”
২০২৪ সালের ২০ ও ২২ জুলাই, জ্যামাইকার সাবিনা পার্কে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম দুই টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার পরই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেবেন আন্দ্রে রাসেল। নিজের ঘরের মাঠে ক্যারিয়ার শেষ করতে পারাটা বিশেষ কিছু মনে করছেন এই তারকা অলরাউন্ডার। তিনি বলেন, “সাবিনা পার্কে যখন আমি ছোট ছিলাম, তখন প্রথমবার স্টেডিয়ামে এসেছিলাম। তখন থেকেই এই মাঠটা আমার জন্য স্পেশাল। এখন এই মাঠেই আমি আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শেষ করব, এটা দারুণ অনুভূতি। গত কয়েক বছরে ক্রিকেট আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে, আর আমি চেষ্টা করেছি প্রতিটি সুযোগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে সেরাটা দিতে।”
বিজ্ঞাপন
রাসেল আরও বলেন, “ভালো দলের বিপক্ষে, এমন এক সিরিজে, এমন এক মাঠে বিদায় বলাটা নিঃসন্দেহে সঠিক সিদ্ধান্ত। সোশাল মিডিয়ায় যত বার্তা আসছে, যত পোস্ট দেখছি, মনটা একটু নরম হয়ে যাচ্ছে ঠিকই। তবে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছি। আমি মনে করি, যথেষ্ট কিছু করে ফেলেছি এই জার্সিতে। এখন বিদায়ের সময়।”

