রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

১০০ বছরের মধ্যে সেরা, তবুও অভাগা অজি এই পেসার

স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৬ জুলাই ২০২৫, ০৮:৪৮ এএম

শেয়ার করুন:

১০০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে সেরা, তবুও অভাগা অজি এই পেসার

অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে ‘অভাগা’ ক্রিকেটার হিসেবে নিজেকে দাবি করতে পারেন স্কট বোল্যান্ড। ২০২১ সালের বক্সিং ডে টেস্টে অভিষেকের পর ক্যারিয়ারের শেষভাগে যেভাবে আলো ছড়াচ্ছেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে শেষ টেস্টে হ্যাটট্রিক করে সেটি আরও উজ্জ্বল করলেন।

পরিসংখ্যান বলছে, গত ১০০ বছরের মধ্যে টেস্ট ইতিহাসের সেরা বোলারদের একজন তিনি। জামাইকায় অস্ট্রেলিয়ার মাত্র দশম পুরুষ বোলার হিসেবে হ্যাটট্রিক করার কীর্তি গড়েছেন বোল্যান্ড। এই কীর্তির দিনে অস্ট্রেলিয়াও গড়েছে রেকর্ড। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে মাত্র ২৭ রানে গুটিয়ে দিয়ে তারা ম্যাচ জিতেছে ১৭৬ রানে এবং ফ্র্যাঙ্ক ওয়ারেল ট্রফি জিতেছে ৩-০ ব্যবধানে।


বিজ্ঞাপন


শুরুতেই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ধসিয়ে দেন মিচেল স্টার্ক, ৬ উইকেট নেন মাত্র ৯ রানে। তবে বোল্যান্ড আবারও প্রমাণ করলেন কেন নির্বাচকেরা তাঁকে দলে নিয়েছিলেন। ১২ বছরে প্রথমবারের মতো সুস্থ নাথান লায়নকে বাদ দিয়ে চার পেসার নিয়ে খেলেছে অস্ট্রেলিয়া, আর বোল্যান্ড সেই সিদ্ধান্তকে পুরোপুরি সঠিক প্রমাণ করেছেন।

403771.4

ম্যাচের বল কে পাবে, এ নিয়ে রসিকতা করলেন বোল্যান্ড। সাংবাদিকদের বললেন, “মাঠে বল কেটে ভাগ করে নেওয়ার কথা হচ্ছিল। ১০০ টেস্ট আর ৪০০ উইকেট, ও (স্টার্ক) রাখতেই পারে!” বোল্যান্ডের দলে থাকা আরও একটি বড় অর্জনের দরজা খুলে দিয়েছে। গত ৬ দশকে ৩৬ বছর পার করে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলা একমাত্র পেসার ছিলেন গ্লেন ম্যাকগ্রা। এবার তার পাশে নাম লেখালেন বোল্যান্ড।

২০২১ সালে অভিষেকের পর অস্ট্রেলিয়া ৩৯টি টেস্ট খেললেও, বোল্যান্ড পেয়েছেন মাত্র ১৪টি ম্যাচে সুযোগ। অথচ এই ১৪ ম্যাচেই হ্যাটট্রিক, অভিষেকেই ৬ উইকেটের জাদু এবং গত গ্রীষ্মে সিডনিতে ১০ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েছেন। সব মিলিয়ে স্টার্ক বলতেই বাধ্য, “এই ব্যাগি গ্রিন পরা সবচেয়ে দুর্ভাগা খেলোয়াড়দের একজন ও।”


বিজ্ঞাপন


স্টার্ক বলেন, “অন্য কোনো দলে থাকলে বোল্যান্ড অনেক টেস্ট খেলত। তবে যখনই ও সুযোগ পায়, ঠিক জায়গায় বল করে, যেমনটা এবারও করল। ও সবসময় প্রস্তুত থাকে। এবারও সুযোগ পেয়ে দেখিয়ে দিল, কতটা দুর্দান্ত টেস্ট বোলার সে।”

Screenshot_2025-07-16_085106

তবে বোল্যান্ড আবার কবে টেস্ট খেলবেন, তা এখনো অনিশ্চিত। বারবার দেখা গেছে, অস্ট্রেলিয়ার নির্বাচকেরা স্টার্ক, জস হ্যাজলউড এবং প্যাট কামিন্সকেই পছন্দের তালিকায় শীর্ষে রাখেন। মাত্র একবারই এই তিনজনের কাউকে বাদ দিয়ে বোল্যান্ড খেলেছেন। এই গ্রীষ্মে অ্যাশেজ সিরিজের শেষ তিনটি টেস্ট হবে ২৩ দিনের ব্যবধানে। তাই যদি বড় তিন পেসারদের কাউকে বিশ্রাম দেওয়া হয়, তাহলে আবারও সুযোগ পেতে পারেন বোল্যান্ড।

না হলে তাঁকে হয়তো আবার অপেক্ষা করতেই হবে, যদিও তাঁর বোলিং গড় টেস্ট ইতিহাসে (সর্বনিম্ন ৫০ উইকেট নেওয়া খেলোয়াড়দের মধ্যে) ষষ্ঠ সেরা, মাত্র ১৬.৫৩! গত একশ বছরে এটাই সেরা গড়। হ্যাটট্রিকের কাছাকাছি বোল্যান্ড আগেও গিয়েছেন, কিন্তু এবার কিংস্টনে সব পরিকল্পনা নিখুঁতভাবে বাস্তবায়ন করেছেন। জোমেল ওয়ারিকানের অফ স্টাম্প উড়িয়ে দিয়ে পূর্ণ করেন হ্যাটট্রিক।

টেস্টে তাঁর আগে শেষ হ্যাটট্রিক করেছিলেন পিটার সিডল। সঙ্গে সঙ্গে বোল্যান্ডকে শুভেচ্ছা জানিয়ে পাঠান বার্তা, “ক্লাবে স্বাগতম!” তার আগে জাস্টিন গ্রেভসকে স্লিপে ক্যাচে এবং শামার জোসেফকে রিভিউয়ে এলবিডব্লিউ দিয়ে ফেরান বোল্যান্ড।

অধিনায়ক কামিন্স বললেন, “আজকের তিনটি উইকেটই ছিল একেবারে ক্লাসিক বোল্যান্ড স্টাইল, স্টাম্প বরাবর কিংবা খুব কাছাকাছি। ওর জন্য খুব খুশি লাগছে। গত এক-দুই বছর বেশিরভাগ সময় ড্রিঙ্কস বয়ে কেটেছে, কিন্তু যখনই মাঠে নামে, পারফর্ম করেই।” প্রমাণ আবারও মিলল, স্কট বোল্যান্ড শুধু দুর্ভাগাই নন, একই সঙ্গে এক অসাধারণ টেস্ট বোলারও।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর