ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ ২০২৫-এর ফাইনালে উঠেছে ইংলিশ জায়ান্ট চেলসি। নিউ ইয়র্কের মেটলাইফ স্টেডিয়ামে রোববার তারা লড়বে শক্তিশালী প্যারিস সেন্ট জার্মেইনের (পিএসজি) বিপক্ষে। তরুণ খেলোয়াড়দের দল নিয়ে যেভাবে চেলসি এগিয়ে চলেছে, ঠিক সেভাবেই সামনে এগোচ্ছেন তাদের ২৫ বছর বয়সী অধিনায়ক রিস জেমস। দলে নেতা হিসেবে তার আত্মবিশ্বাস এখন চোখে পড়ার মতো।
ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে জেমস বললেন, এই ম্যাচটা আর দশটা ম্যাচের মতো না। এটা একবারেই এক সুযোগের খেলা, আর তারা জিততে চায়। “এটা খুবই উচ্চ মানের এক ম্যাচ। ওরা (পিএসজি) হয়তো এখন বিশ্বের অন্যতম ফর্মে থাকা দল, কিন্তু এটা একটা ফাইনাল, একটা ম্যাচের হিসাব। সবাই ভাবছে ওরা ফেভারিট, কিন্তু আমি অনেক ফাইনাল খেলেছি যেখানে আমরাই ফেভারিট ছিলাম, তবুও জিততে পারিনি। এই ট্যাগ আমার কাছে কিছু না, সত্যি বলতে আমি এসব নিয়ে ভাবিও না”, জোরালোভাবে বললেন জেমস।
বিজ্ঞাপন
অধিনায়কের এই আত্মবিশ্বাস দলের কোচ এনজো মারেস্কার চেয়ে ঢের বেশি দৃঢ়। সংবাদ সম্মেলনের শেষ প্রশ্নে ফরাসিতে উত্তর দেওয়ার পর মারেস্কা ইংরেজিতে বলেছিলেন শুধু, "আমরা আমাদের সর্বোচ্চটা চেষ্টা করব।"
জেমসের এই আত্মবিশ্বাসের কারণ, দলের প্রতি তার গভীর বিশ্বাস। নতুন যোগ দেওয়া ফরোয়ার্ড জোয়াও পেদ্রো ও লিয়াম ডেলাপের সঙ্গে দল এখন আরও ধারালো। নিজের ফিটনেস নিয়েও তিনি এখন অনেক স্বচ্ছন্দ। রক্ষণভাগের খেলোয়াড় হয়েও তিনি ড্রেসিংরুমে যেমন কণ্ঠস্বর তুলছেন, তেমনি মাঠেও দাপট দেখাচ্ছেন। ২০২৩-২৪ মৌসুম শুরুর আগে তাকে অধিনায়ক বানিয়েছিলেন তৎকালীন কোচ মাউরিসিও পচেত্তিনো। টড বোয়েহলি ও ক্লিয়ারলেক ক্যাপিটালের মালিকানায় চেলসির নতুন যুগ শুরুরও যেন প্রতীক ছিলেন জেমস।
তবে এই পথে ছিল চোটের বাধা। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে হ্যামস্ট্রিং সার্জারির কারণে পুরো মৌসুমে মাত্র পাঁচটি প্রিমিয়ার লিগ ম্যাচ শুরু করতে পেরেছিলেন। এরপর আবারও ২০২৪-২৫ মৌসুমের শুরুর আগেই ইনজুরির ধাক্কা, ফিরেছেন অক্টোবরের পর। তবে ধীরে ধীরে আবার জায়গা পোক্ত করছেন। সাম্প্রতিক কোয়ার্টার ফাইনালে প্যালমেইরাসের বিপক্ষে মাঠে নামার আগেই তাকে তুলে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেটি ছিল শুধুই সতর্কতা হিসেবে।
“আমি তখন নিজেকে একদম ঠিক মনে করছিলাম না। খেললে হয়তো পারতাম, কিন্তু যদি কিছু হয়ে যেত, নিজেকেই দোষ দিতাম। তাই রিস্ক নিইনি,” বলেন জেমস। সে ম্যাচে বেঞ্চ থেকে নেমে সেমিফাইনালে ফ্লুমিনেন্সের বিপক্ষে জিততে সাহায্য করেন। এবারের টুর্নামেন্টে দারুণ খেলেছেন রিস। শেষ ষোলোয় বেনফিকার বিপক্ষে অতিরিক্ত সময়ে দুর্দান্ত ফ্রি-কিকে গোল করেন। তিনটি ম্যাচে ছিলেন শুরুর একাদশে।
বিজ্ঞাপন
ফাইনালের আগে চেলসি পাচ্ছে ফুল স্কোয়াড, মোয়িসেস কাইসেডো ফিরেছেন, সাসপেনশন কাটিয়ে ফিরছেন লেভি কোলউইল ও লিয়াম ডেলাপ। এমন দল নিয়ে আত্মবিশ্বাসে টগবগ করছেন অধিনায়ক। “ওরা (পিএসজি) দুর্দান্ত দল, কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু আমরাও দুর্দান্ত দল। অনেকেই অবাক হবেন, কারণ আমরা অনেক দূর এসেছি এই যাত্রায়। ফাইনালের জন্য আমরা প্রস্তুত”, জানিয়ে রাখলেন রিস জেমস।
রোববার নিউ ইয়র্কের মাটিতে সেই প্রস্তুতিরই পরিণতি দেখাবে কিনা, সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা।

