বিশ্বকাপ ফুটবলের পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল। ফুটবলের তীর্থভূমি দেশটি। পেলে-কাকা-রোনালদো নাজারিও, রোনালদিনিয়োর মত কিংবদন্তি ফুটবলাররা জন্মেছেন দেশটিতে যারা এ খেলার গতিপ্রবাহই বদলে দিয়েছিলেন। তবে ২০১৪ সালে ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ আয়োজন করেই চরম এক লজ্জার মুখে পড়তে হয়েছিল সেলেসাওদের। যে যন্ত্রণার আগুন এখনো পুড়িয়ে চলে সমর্থকদের। যে বিষাদময় স্মৃতি এখনো তাড়া করে। ২০১৪ সালের এই দিনেই ঘরের মাঠে বিশ্বকাপে জার্মানির কাছে ব্রাজিলের ৭-১ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছিলেন নেইমার জুনিয়ররা।
২০১৪ সালে বিশ্বকাপের আয়োজক ছিল ব্রাজিল। ঘরের মাঠে জাঁকজমকপূর্ণ সে টুর্নামেন্টে ব্রাজিল খেলেছে দুর্দান্ত। নেইমার-মার্সেলোদের দুর্দান্ত পারফর্ম্যান্সে সেলেসাওরা পৌঁছে যায় সেমিফাইনালে যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ ছিল জার্মানি। আর শেষ চারের এই লড়াইয়েই ভয়াবহতম অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে যেতে হয় সেলেসাওদের।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন- জুলাই মাস কেনো বারবার ব্রাজিলকে কাঁদায়?
ঘরের মাঠে জার্মানিকে উড়িয়ে ফাইনালে জায়গা করে নিবে ব্রাজিল- প্রিয় দলকে নিয়ে এমন আশা করেছিলেন বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ব্রাজিল সমর্থকরা। তবে জুলাইয়ের ৮ তারুখে অনুষ্ঠিত সে ম্যাচে আশাভঙ্গ হয় ত্রিশ মিনিট না পেরোতেই।

ম্যাচের ১১ মিনিটের খেলা চলছে তখন, জাররাম্নির হয়ে প্রথম গোলটি করেন টমাস মুলার। তবে তখনও আসন্ন বিপদের আঁচ করতে পারেননি ব্রাজিলিয়ানরা। এরপর ২৩ মিনিটে জার্মানদের হয়ে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন মিরোস্লাভ ক্লোসা। সেই শুরু, এরপর ৬ মিনিটের ঝড়ে বিধ্বস্ত হয় ব্রাজিলের বিশ্বকাপ স্বপ্ন। একে একে আরও ৩টি গোল হজম করে ব্রাজিল। ফলে ২৯ মিনিটেই ৫-০ গোলে পিছিয়ে পড়ে সেলেসাওরা।
বিজ্ঞাপন

২৪ ও ২৬ মিনিটে দুইটি গোল করেন টনি ক্রুস, ২৯ মিনিটে পঞ্চম গোলটি করে সামি খেদিরা। প্রথমার্ধে ৫ গোলে এগিয়ে যাওয়া জার্মানি দ্বিতীয়ার্ধে করে আরও ২ গোল। এদিকে ম্যাচের একেবারে শেষদিকে ব্রাজিলের হয়ে একটি গোল করেন অস্কার। কিন্তু তা যেন সমুদ্রের বুকে এক বিন্দু শিশির কণার মতই হারিয়ে যায়। জার্মানির কাছে সেদিন ৭-১ গোলে হেরে এভাবেই ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন ধূলিস্মাত হয় সেলেসাওদের।
![]()
মারাকানার সেই ট্র্যাজেডির পর এখনো নিজেদের চিরচেনা শৈল্পিক ছন্দে ফিরতে পারেনি ব্রাজিলের ফুটবল। ২০১৮ বিশ্বকাপে বেলজিয়ামের কাছে হেরে বাদ পড়ে নেইমাররা, এরপর কাতার বিশ্বকাপ্ব ক্রোয়েশিয়ার কাছেও হয় স্বপনভঙ্গ। এবারের কোপা আমেরিকায় ব্রাজিলের শোচনীয় পারফর্ম্যান্স ধারাবাহিক ব্যর্থতার তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন মাত্র।

