সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

ফাইনালে হারাতে প্রোটিয়াদের যে কথা মনে করিয়ে দিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া

স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৫ জুন ২০২৫, ০২:৩৫ পিএম

শেয়ার করুন:

ফাইনালে হারাতে প্রোটিয়াদের যে কথা মনে করিয়ে দিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া

লর্ডসে টেস্টের চতুর্থ দিন দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটারদের মানসিকভাবে চাপে ফেলতে চেয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। ‘চোকার’ তকমাটা আবারও ছুঁড়ে দিয়েছিল অজিরা। কিন্তু টেম্বা বাভুমা ও এইডেন মার্করামের দৃঢ়তায় সেই অপবাদ এবার ইতিহাসে জায়গা নিয়েছে।

জয়ের জন্য চতুর্থ দিনে ৬৯ রান দরকার ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার। মাঠে নামার সময় বাভুমা ও মার্করামকে মনে করিয়ে দেওয়া হচ্ছিল- ম্যাচ এখনো শেষ হয়নি। তখন চাপটা পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছিল। যখন ৬৫ রান দরকার, তখন প্যাট কামিন্সের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন বাভুমা। এরপর ৪১ রানের দূরত্বে থাকা অবস্থায় মিচেল স্টার্কের এক দুর্দান্ত বলে আউট হন ট্রিস্টান স্টাবস।


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন- ফাইনালে হেরে অস্ট্রেলিয়া দলে জায়গা হারাতে চলেছেন তারকা ক্রিকেটার

আরও পড়ুন- ফাইনালে হেরে অস্ট্রেলিয়া দলে জায়গা হারাতে চলেছেন তারকা ক্রিকেটার

তবে সেখান থেকে আর অস্বস্তিতে পড়তে হয়নি প্রোটিয়াদের। মার্করাম একাই দলকে জয়ের একেবারে দোরগোড়ায় নিয়ে যান, খেলেন স্মরণীয় এক ইনিংস। ম্যাচ শেষে বাভুমা বলেন, বর্তমান অস্ট্রেলিয়া দলের সঙ্গে খেলার অভিজ্ঞতা আগের মতো নয়। ২০১৮ সালের বিতর্কিত সিরিজের প্রসঙ্গ টেনেই ইঙ্গিত দেন, এখন মাঠে তারা অনেক বেশি পরিণত আচরণ করে।

বাভুমা বলেন, “গত কয়েক বছরে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে খেলাটা কিছুটা ভিন্ন হয়ে গেছে। আগের মতো খুব একটা কথাবার্তা বলেনা তারা। তবে শরীরী ভাষায় ও দক্ষতায় আগ্রাসনটা টের পাওয়া যায়।” বলেন। তবে আজ সকালে ‘চোকার’ কথাটা আবারও উঠেছিল। তাদের একজন খেলোয়াড় বলছিলেন, আমরা ৬০ রানের মধ্যে ৮ উইকেট হারিয়ে ফেলতে পারি। আমি স্পষ্ট শুনেছি সেটা।” তিনি আরও বলেন, “এইডেন প্রতি ওভার শেষে একটা কথা বলছিল, ‘লক ইন, লক ইন’, মানে নিজেদের মধ্যে মনোযোগ ধরে রাখার চেষ্টা করছিলাম। আমরা চেয়েছিলাম ওদের একটুও সুযোগ না দিতে। তাই খুব বেশি কথা হয়নি, শুধু এক-দুইটা মন্তব্য এসেছিল।”


বিজ্ঞাপন


অস্ট্রেলিয়া অবশ্য ম্যাচটা যতটা সম্ভব টেনে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল। দ্বিতীয় নতুন বলও নেওয়া হয় শেষ দিকে। তবে তখন প্রয়োজন মাত্র ১৪ রান, আর নতুন বলের প্রথম ডেলিভারিতেই মধ্য উইকেট দিয়ে দারুণ এক শটে চার মারেন মার্করাম। “আমরা চেয়েছিলাম যতটা সম্ভব খেলা বাড়াতে। বিশেষ করে পেসারদের দিয়ে দুই রান করে ওভার দেওয়াতে চেয়েছিলাম,” ম্যাচ শেষে বলেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। “লিয়ন (নেথান) তখন ভালো বোলিং করছিল। ভাবছিলাম, হয়তো আকাশে মেঘ আসবে, হয়তো নতুন বল কিছু করবে। এমন ছোট ছোট ব্যাপারেই তো খেলায় পার্থক্য আসে।”

তৃতীয় দিন সেঞ্চুরি করে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছিলেন মার্করাম। সেই আবেগের পেছনে ছিল পুরোনো হতাশা, বিশেষ করে গত বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ব্যর্থতার স্মৃতি। তাই এবার সেই পুরোনো কথাগুলো মুছে দিতে পেরেই স্বস্তি। “এই ‘চোকার’ শব্দটা আর না শুনলেই ভালো লাগবে,” বলেন মার্করাম। “এরকম ট্যাগ অনেক সময় মোটিভেশন দেয় ঠিকই, কিন্তু এটা খেলার উদ্দেশ্য হতে পারে না। এবার আমরা আসলেই কাজটা শেষ করেছি, জয় ছিনিয়ে এনেছি, আর এই তকমা ঝেড়ে ফেলাটা আমাদের দলের জন্য অনেক বড় একটা ব্যাপার।”

প্রতিপক্ষ হলেও দক্ষিণ আফ্রিকার প্রশংসা করেছেন প্যাট কামিন্স। বিশেষ করে মার্করামের ব্যাটিংয়ে মুগ্ধ তিনি। “আমাদের মধ্যে কয়েকজন আইপিএলে ওর সঙ্গে খেলেছে, খুবই সম্মানিত একজন ক্রিকেটার,” বলেন কামিন্স। “ও খুব ভালো একজন মানুষ। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের বিপক্ষে সে ব্যাট হাতে সবকিছু সহজ করে ফেলেছে। আমরা অনেক কিছুই চেষ্টা করেছি, কিন্তু তার সব কিছুর জবাব ছিল।”

শেষে কামিন্স বলেন, “প্রতিটা দল ভিন্ন পথে ফাইনালে পৌঁছায়। দক্ষিণ আফ্রিকা সেটা করেছে এবং পুরোপুরি প্রাপ্য হিসেবেই শিরোপা জিতেছে।”

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর