আইসিসি ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২৫ ফাইনালে শিরোপা খরা কাটাতে দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে এখন কঠিন লক্ষ্য, প্রোটিয়াদের ২৮২ রানের লক্ষ্য দিয়েছে অজিরা। শুক্রবার লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডে শিরোপা লড়াইয়ে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে অস্ট্রেলিয়াকে ২০৭ রানে গুটিয়ে দেয় প্রোটিয়ারা।
দুই দিনের মধ্যেই ম্যাচে পড়ে গেছে ২৮টি উইকেট! এমন রোমাঞ্চকর লড়াইয়ের মাঝেই দ্বিতীয় ইনিংসে অস্ট্রেলিয়া ২৫০ রান ছাড়িয়ে যায়। মূল ভূমিকা রাখেন নং ৯ ব্যাটার মিচেল স্টার্ক, টেস্ট ক্যারিয়ারের ১১তম হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি। জশ হ্যাজলউডকে সঙ্গে নিয়ে শেষ উইকেটে গড়েন ৫৯ রানের জুটি, যা দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে বড় চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয়।
বিজ্ঞাপন
লর্ডসে এর আগে মাত্র তিনবারই ২৫০ রানের বেশি রান তাড়া করে জেতা গেছে। তার মানে এই যে, দক্ষিণ আফ্রিকাকে ইতিহাস গড়তেই হবে এই ম্যাচ জিততে হলে।
এই মাঠে সবচেয়ে বড় রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড ওয়েস্ট ইন্ডিজের। ১৯৮৪ সালে গর্ডন গ্রিনিজের দুর্দান্ত ডাবল সেঞ্চুরিতে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ৩৪৪ রান তাড়া করেছিল ক্যারিবীয়রা। এরপর ২০০৪ ও ২০২২ সালে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ২৮২ ও ২৭৯ রানের লক্ষ্য ছুঁয়ে জয় পেয়েছিল ইংল্যান্ড। ১৯৬৫ সালেও ২১৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জয় পায় স্বাগতিকরা।
লর্ডস টেস্টে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়:
৩৪৪/১ - ওয়েস্ট ইন্ডিজ বনাম ইংল্যান্ড, ১৯৮৪
বিজ্ঞাপন
২৮২/৩ - ইংল্যান্ড বনাম নিউজিল্যান্ড, ২০০৪
২৭৯/৫ - ইংল্যান্ড বনাম নিউজিল্যান্ড, ২০২২
২১৮/৩ - ইংল্যান্ড বনাম নিউজিল্যান্ড, ১৯৬৫
২০২২ সালের ম্যাচটি আবার ছিল ইংল্যান্ডের ‘বাজবল’ যুগের সূচনা, বেন স্টোকসের অধিনায়কত্বে মাত্র ৭৮.৫ ওভারে ২৭৭ রান তাড়া করে জয়।
লর্ডসে দক্ষিণ আফ্রিকার আগের সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়? মাত্র ১৫ রানের লক্ষ্য ছুঁয়ে ১০ উইকেটের জয়! এখানে ২০০৮ সালে এজবাস্টনে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২৮৩ রান তাড়া করে ৫ উইকেটে জেতাই ইংল্যান্ডের মাটিতে তাদের সেরা রান তাড়া।
তবে আশার কথা, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বড় লক্ষ্য তাড়া করে জেতার অভিজ্ঞতা আছে প্রোটিয়াদের। ২০০৮ সালে পার্থে ৪১৮ রান তাড়া করে ৬ উইকেটে জয় তুলে নেয় তারা, টেস্ট ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়। এছাড়া ২০০২ সালে কিংসমিডে ৩৪০ রান আর ১৯৫২ সালে মেলবোর্নে ২৯৭ রান তাড়া করে জয় পেয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা।
টেস্টের প্রথম ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকার বোলিং ছিল দুর্দান্ত। স্টিভ স্মিথ ও বিউ ওয়েবস্টারের ফিফটির পরও ২১২ রানেই থেমে যায় অস্ট্রেলিয়া। সেই ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়ে কাগিসো রাবাদা নিজের নাম লেখান লর্ডসের হোম ও অ্যাওয়ে- উভয় অনার্স বোর্ডে। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার জবাবে অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক প্যাট কামিন্স নেন ৬ উইকেট যার মধ্যে দিয়ে টেস্টে তার ৩০০ উইকেট পূর্ণ হয়। ফলে প্রোটিয়ারা পড়ে চাপের মুখে।
সবদিক বিবেচনায়, দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে এখন দারুণ এক সুযোগ। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অতীতে তাদের সাহসী রান তাড়ার নজির আছে, এবার শুধু দরকার ঐতিহাসিক এক ইনিংস, যা শেষ করে দিতে পারে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ শিরোপার দীর্ঘ প্রতীক্ষা।

