আইসিসি ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ (২০২৩–২৫) ফাইনালে উত্তেজনা এখন তুঙ্গে। লর্ডসের ঐতিহাসিক মাঠে অস্ট্রেলিয়াকে দ্বিতীয় ইনিংসে ২০৭ রানে গুটিয়ে দিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ফলে টেস্ট চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লড়াইয়ে প্রোটিয়াদের সামনে এখন ২৮২ রানের লক্ষ্য। তৃতীয় দিনের খেলা শুরু হয়েছিল অস্ট্রেলিয়ার ১৪৪/৮ স্কোর থেকে। খুব দ্রুতই নবম উইকেট হারায় দলটি, মাত্র ২ রান করা নাথান লায়নকে এলবিডব্লিউ করে দেন কাগিসো রাবাদা।
তবে এরপরেই দেখা মিলে দারুণ এক জুটির। শেষ উইকেটে মিচেল স্টার্ক ও জশ হ্যাজলউড গড়েন মূল্যবান জুটি। প্রতিটি রানই তখন গুরুত্বপূর্ণ, সেই চাপের মাঝেই দুই টেইলএন্ডার গড়েন ৫৯ রানের জুটি, যা অস্ট্রেলিয়ার লিডকে কিছুটা হলেও শক্ত ভিত্তি দেয়। এই ইনিংসে ব্যাট হাতে আলো ছড়ান স্টার্ক। ১১তম টেস্ট ফিফটি তুলে নেন বাঁহাতি এই পেসার। শেষ পর্যন্ত এই জুটি ভাঙেন আইডেন মার্করাম। ততক্ষণে অজিরা পায় লড়াই করার মত পুঁজি।
বিজ্ঞাপন
অবশ্য ম্যাচে আলো ছড়িয়েছেন রাবাদাই। ৪ উইকেট নিয়ে তিনি ছিলেন অস্ট্রেলিয়ান ইনিংস ধসানোর মূল নায়ক। পাশে ছিলেন লুঙ্গি এনগিদি—নেন ৩ উইকেট। এছাড়া মার্করাম, ইয়ান মুলডার ও মার্কো জানসেন নেন ১টি করে উইকেট।
এর আগে দ্বিতীয় দিনে অস্ট্রেলিয়া পড়ে ভয়ঙ্কর বিপাকে। দিনের শুরুতে স্কোর ছিল ৩২/২, কিন্তু সেখানে থেকেই মাত্র ৪১ রানে হারায় ৫টি উইকেট! প্রোটিয়া পেসারদের দাপটে হাল ধরতে পারেননি স্টিভ স্মিথ বা মার্নাস লাবুশেন কেউই। শেষদিকে আবার ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন অ্যালেক্স ক্যারি ও মিচেল স্টার্ক। ক্যারি করেন ৫০ বলে ৪৩ রান, আর স্টার্ক ১৬ রানে অপরাজিত ছিলেন দিনের শেষে। লায়ন ছিলেন ১ রানে অপরাজিত।
প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়া অলআউট হয়ে গিয়েছিল ২১২ রানে। বিউ ওয়েবস্টার করেন ৯২ বলে ঝড়ো ৭২, স্টিভ স্মিথ করেন ধৈর্যশীল ৬২ রান। রাবাদা ছিলেন এখানেও বিধ্বংসী, মাত্র ১৫.৪ ওভারে তুলে নেন ৫ উইকেট। পাশে ছিলেন মার্কো জানসেন, যিনি নেন ৩ উইকেট। জবাবে ব্যাট করতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকাও চাপে পড়ে যায়। ৫৭.১ ওভারে ১৩৮ রানেই গুটিয়ে যায় গোটা দল। ডেভিড বেডেনহাম করেন সর্বোচ্চ ৪৫ রান।
অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্স ছিলেন দুর্দান্ত, তুলে নেন ৬ উইকেট। স্টার্কও নেন ২টি উইকেট। এতে করে প্রথম ইনিংসে গুরুত্বপূর্ণ লিড পায় অজিরা। তৃতীয় দিনের শেষে ম্যাচ এখন একেবারে সমানে সমান। ফাইনাল ম্যাচে দুই দলই সমান সুযোগে, তবে দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে সুযোগ ইতিহাস গড়ার। ২৮২ রানের লক্ষ্য তাড়া করে যদি তারা জয় তুলে নিতে পারে, তাহলে প্রথমবারের মতো ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করবে প্রোটিয়ারা।

