বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের ঐতিহাসিক মুহূর্তের নেতৃত্ব দিয়ে আবারও আলোচনায় মোহাম্মদ ওয়াসিম। সংযুক্ত আরব আমিরাতের অধিনায়ক হয়েছেন আইসিসি ‘মে মাসের সেরা খেলোয়াড়’। এই নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো এই মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার জিতলেন তিনি।
স্কটল্যান্ডের ব্র্যান্ডন ম্যাকমুলেন ও যুক্তরাষ্ট্রের মিলিন্দ কুমারকে পেছনে ফেলে মে মাসের পুরস্কারটি নিজের করে নিয়েছেন ওয়াসিম। এর আগে ২০২৪ সালের এপ্রিলেও এই স্বীকৃতি পেয়েছিলেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। তিনি বলেন, "দ্বিতীয়বারের মতো আইসিসির প্লেয়ার অব দ্য মান্থ হওয়াটা দারুণ সম্মানের। ভোট দিয়ে যারা আমাকে সমর্থন দিয়েছেন, তাদের সবাইকে ধন্যবাদ। এই অর্জন শুধুই আমার না, আমার দলের প্রত্যেক খেলোয়াড়, কোচিং স্টাফ ও সাপোর্ট টিমের সবার অবদান রয়েছে এতে।"
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও যোগ করেন, "মে মাসে বাংলাদেশের বিপক্ষে শারজাহতে আমাদের সিরিজ জয় ছিল সত্যিকারের ঐতিহাসিক। এটা শুধু একটি জয় নয়, বরং আমিরাত ক্রিকেটের অগ্রগতির পরিচয়। সবচেয়ে বেশি খুশি হয়েছি তরুণদের পারফরম্যান্স দেখে। ডেবিউ করা ক্রিকেটার থেকে শুরু করে দলের জুনিয়র সদস্যরা সবাই দারুণ হৃদয় আর প্যাশন দেখিয়েছে।"
"এখন আমাদের লক্ষ্য আরও বড় দলগুলোর সঙ্গে শুধু প্রতিদ্বন্দ্বিতা নয়, জয় ছিনিয়ে নেওয়া। আমরা চাই বিশ্ব ক্রিকেটে নিজের উপস্থিতি দৃঢ়ভাবে জানান দিতে। বর্তমান খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স দেখেই আমি আশাবাদী, আমিরাত ক্রিকেট সামনে আরও অনেক দূর যাবে। এই পথচলায় এমিরেটস ক্রিকেট বোর্ডের সহযোগিতা ও সমর্থনের জন্যও আমি কৃতজ্ঞ। ব্যক্তিগতভাবে আমার লক্ষ্য থাকবে ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম করে যাওয়া। আজকের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের গতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে খেলে আমার দলকে আরও ভালো জায়গায় নিয়ে যাওয়ার জন্য কঠোর পরিশ্রম করাই এখন মূল লক্ষ্য।"
২৯ বছর বয়সী ওয়াসিম সত্যিকারের নেতৃত্ব দিয়েছেন সিরিজজুড়ে। তার ব্যাটে ভর করেই টি-টোয়েন্টি সিরিজে বাংলাদেশের বিপক্ষে নিজেদের ইতিহাসে প্রথম জয় পেয়েছে আমিরাত। সিরিজের প্রথম ম্যাচেই ৩৯ বলে ৫৪ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন ওয়াসিম। ৭ চার ও ২ ছক্কায় সাজানো ছিল তার ইনিংসটি, যদিও ম্যাচটি আমিরাত হারে ২৭ রানে।
পরের ম্যাচেই আরও ভয়ংকর হয়ে ওঠেন ওয়াসিম। মাত্র ৪২ বলে ৮২ রানের ইনিংস খেলেন, ৯টি চার আর ৫টি ছক্কা মারেন। সেই ইনিংসেই ভর করে বাংলাদেশকে ২০৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করে ম্যাচ জিতে নেয় আমিরাত, বাকি ছিল মাত্র এক বল। শেষ ম্যাচেও দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা ধরে রাখে আমিরাত। টানা দুটি জয় তুলে নিয়ে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ নিজেদের করে নেয় তারা, যেটি বাংলাদেশের বিপক্ষে তাদের প্রথম সিরিজ জয়।
বিজ্ঞাপন
পুরো সিরিজে তিনটি টি-টোয়েন্টি খেলে ওয়াসিম করেছেন ১৪৫ রান, স্ট্রাইক রেট ছিল চোখ ধাঁধানো- ১৬৬.৬৬। তাই তো সিরিজ সেরার পুরস্কার উঠেছে তার হাতেই। শুধু টি-টোয়েন্টিতেই নয়, ওয়ানডেতেও ছিলেন সমান উজ্জ্বল। মে মাসে ৫টি ওয়ানডেতে করেন ১৬৯ রান, গড় ৩৩.৮০, স্ট্রাইক রেট ৯০.৩৭, সব মিলিয়ে দুর্দান্ত একটা মাস কাটালেন ওয়াসিম।

