সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

১৭ বছর পর শিরোপা জেতানো কোচকে ছাঁটাই টটেনহ্যামের

স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭ জুন ২০২৫, ০২:২৩ পিএম

শেয়ার করুন:

১৭ বছর পর শিরোপা জেতানো কোচকে ছাঁটাই টটেনহ্যামের

ইউরোপা লিগ জেতার কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই কোচ আনজে পোস্টেকোগলুকে বরখাস্ত করেছে টটেনহ্যাম হটস্পার। ক্লাবটি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “এটা আমাদের নেওয়া সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্তগুলোর একটি।” তবে একইসঙ্গে নতুন কোচ হিসেবে ব্রেন্টফোর্ডের থমাস ফ্রাঙ্ককে নিয়োগ দেওয়ার কথা ভাবছে স্পারস, যাঁকে পেতে হলে ১০ মিলিয়ন পাউন্ডের রিলিজ ক্লজ গুনতে হবে। সম্ভাব্য তালিকায় আছেন ফুলহ্যামের মার্কো সিলভাও।

গত ২১ মে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে হারিয়ে ইউরোপা লিগের শিরোপা জিতেছিল স্পারস। ১৭ বছর পর কোনো ট্রফি জিতে পুরো ক্লাব ও সমর্থকদের মধ্যে তৈরি হয়েছিল তুমুল উচ্ছ্বাস। অনেকেই তখন ভাবছিলেন, পোস্টেকোগলুর প্রতি ক্লাবটির আস্থা আরও দীর্ঘস্থায়ী হবে।


বিজ্ঞাপন


তবে মৌসুম শেষ হওয়ার পর ২৫ মে ব্রাইটনের বিপক্ষে শেষ ম্যাচ পর্যালোচনার পর চেয়ারম্যান ড্যানিয়েল লেভি ও বোর্ড সদস্যরা সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্তে পৌঁছান—প্রিমিয়ার লিগে দুই বছর ধরে গড়পড়তা পারফরম্যান্সের কারণে পোস্টেকোগলুর অধ্যায় শেষ করা দরকার। সেল্টিক থেকে এসে দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রিমিয়ার লিগে প্রথম ১০ ম্যাচে ৮ জয় ও ২ ড্র নিয়ে দারুণ শুরু করেছিলেন পোস্টেকোগলু। আগের মৌসুমে টটেনহ্যাম ছিল অষ্টম স্থানে।

গত মৌসুমে টটেনহ্যাম লিগ শেষ করেছে ১৭তম স্থানে, মাত্র ৩৮ পয়েন্ট নিয়ে—প্রিমিয়ার লিগ যুগে যা তাদের সবচেয়ে বাজে পারফরম্যান্স। পুরো ইতিহাসে এর চেয়েও খারাপ লিগ অবস্থান কেবল একবার হয়েছিল, ১৯১৪-১৫ মৌসুমে। এর আগে শুক্রবারই খবর এসেছিল, স্পারস কর্তারা থমাস ফ্রাঙ্কের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলোচনায় বসেছেন। ২০১৮ সালে ব্রেন্টফোর্ডের দায়িত্ব নেওয়ার পর ডেনিশ কোচ দলটিকে চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে ২০২০-২১ মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগে তুলে আনেন। এবার লিগ শেষ করেছেন ১০ নম্বরে, ৫৬ পয়েন্ট নিয়ে—যা স্পারসের নজর কাড়ার পেছনে বড় কারণ।

মার্কো সিলভার কাজেও টটেনহ্যাম সন্তুষ্ট হলেও থমাস ফ্রাঙ্কই আপাতত তাদের প্রধান লক্ষ্য। ব্রেন্টফোর্ডের প্রতিটি খেলোয়াড় ও স্টাফের মতো ফ্রাঙ্কেরও নির্ধারিত মূল্য আছে, সেই অনুযায়ী টটেনহ্যামকে ১০ মিলিয়ন পাউন্ড দিতে হতে পারে। পাশাপাশি বোর্নমাউথের আন্দোনি ইরাওলা ও ক্রিস্টাল প্যালেসের অলিভার গ্লাসনারকেও বিবেচনায় রেখেছিল স্পারস, তবে দুজনকেই এখন দূরে মনে হচ্ছে।

বিলবাওর শিরোপা জয়ে পোস্টেকোগলু হয়তো টটেনহ্যামের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়েই থাকবেন। বরখাস্তের পর এক আবেগঘন বার্তায় তিনি বলেন, খেলোয়াড়, স্টাফ ও সমর্থকদের সঙ্গে তিনি আজীবনের জন্য যুক্ত হয়ে গেলেন। তার প্রধান অনুভূতি ছিল গর্ব, আর বিলবাওর সেই রাত তার স্মৃতিতে চিরকাল বেঁচে থাকবে। তিনি বলেন, “বিলবাও ছিল দুই বছরের কঠিন পরিশ্রম, আত্মনিবেদন আর এক অসম্ভব স্বপ্নের প্রতি বিশ্বাসের ফসল। অনেক বাধা পেরিয়ে এসেছি, অনেক নেতিবাচক কণ্ঠ শুনেছি, তবু আমরা একসঙ্গে সেটিকে বাস্তবে রূপ দিয়েছি। আমরা এমন একটা ভিত্তি রেখে যাচ্ছি, যাতে ক্লাবটি আবার ১৭ বছর অপেক্ষা না করে সফলতা পেতে পারে।”


বিজ্ঞাপন


স্পারসের বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, পোস্টেকোগলু ক্লাবের খেলার ধরনে আক্রমণাত্মক মনোভাব ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছিলেন এবং ইউরোপীয় শিরোপার জন্য কৃতজ্ঞতা জানানো হয়। সেই সঙ্গে তাকে রাখা হয় কিংবদন্তি কোচ বিল নিকলসন ও কিথ বারকিনশ’র কাতারে যাঁরা ইউরোপে স্পারসকে সাফল্য এনে দিয়েছেন।

তবে ক্লাবটি আরও জানায়, বাজে লিগ পারফরম্যান্সের পেছনে চোট সমস্যা ও ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় অগ্রাধিকার দেওয়ার মতো বিষয়গুলোর প্রভাব ছিল। যদিও ইউরোপা জয়ের মতো সাফল্য স্পারসের ইতিহাসে বড় একটি মাইলফলক, তারপরও আবেগ নয়, পরবর্তী মৌসুম ও ভবিষ্যতের সফলতার জন্য তারা এখন বাস্তবতাকে গুরুত্ব দিতে চায়। এজন্যই পরিবর্তন জরুরি বলে মনে করছে ক্লাব।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর