সাঁতার এমন এক খেলা, যেখানে নিয়ম-কানুন খুব বেশি নেই। কিছু সহজ বিষয় মাথায় রাখলেই চলে- পুলের পাশে দৌড়ানো যাবে না, কম পানিতে ডাইভ দেওয়া যাবে না, আর হ্যাঁ… পুলে প্রস্রাব করা যাবে না। কিন্তু বাস্তবতা কি সত্যিই এতটা পরিষ্কার?
না, মোটেও না। অলিম্পিক গেমসের গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ খ্যাত ক্রীড়া ইভেন্টেও প্রায় সব সাঁতারুই পুলেই প্রস্রাব করে থাকেন! হ্যা, অবাক করার মত শোনালেও বেশ কয়েকজন আন্তর্জাতিক সাঁতারুই তা স্বীকার করেছেন।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন- কেন মুখ ঢেকে কথা বলেন ফুটবলাররা?
আরও পড়ুন- বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কে প্রথম হ্যাটট্রিক করেছিলেন?
এমনকি এই বিষয়ে খোলাখুলি মন্তব্য করেছেন অনেক অলিম্পিয়ান সাঁতারু। প্যারিস অলিম্পিকের সময় আমেরিকান সাঁতারু কেট ডগলাস বললেন, “আপনি ভাবছেন যতটা, আসলে তার চেয়েও বেশি সংখ্যক সাঁতারু এটা করে।” ববি ফিঙ্ক আরও সোজাসাপ্টা বলেন, “যারা সত্যি বলে আর যারা মিথ্যা বলে। সবারই অভ্যাস আছে পুলে প্রস্রাব করার।”

বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন-ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে যে সংকটে বাংলাদেশ
আরও পড়ুন-মুস্তাফিজকে দলে নেওয়ায় আইপিএলের ম্যাচ বয়কটের দাবি!
আমেরিকান প্যারা সাঁতারু জেসিকা লং বলেন, “নিয়ম করে প্রস্রাব করার সময় কোথায়? হ্যাঁ, আমরা সবাই এটা করি।” এই বক্তব্যের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছিল পড়ে মুহূর্তেই। শুরু হয়েছিল ব্যাপক আলোচনা। কেউ কেউ ব্যাপারটা নিয়ে মজা করলেও, অনেকেই কড়া সমালোচনায় মুখর হয়েছিলেন।
আরও পড়ুন- ফুটবল ম্যাচে গোলকিপারদের জার্সি যে কারণে দলের সবার চেয়ে আলাদা
আরও পড়ুন- প্রায় ৯ কোটি পেল বাংলাদেশ, চ্যাম্পিয়নরা পাবে কত
একজন মন্তব্য করেছিলেন, “আমার ছেলে ২ বছরের, সে-ও পুল থেকে উঠে প্রস্রাব করে।” আরেকজন রীতিমতো বিস্ময় প্রকাশ করে লেখেন, “সবাই?! কি বলছেন! আমরা কি এখনও ৫ বছরের বাচ্চা?”
আরেকজন অবশ্য সাঁতারুদের পক্ষেই কথা বলেছেন, লেখেন, “সাঁতারুরা স্যুট পরতে ২০ মিনিট সময় নেয়, দুজন সহকারী লাগে, তাই তারা পুলেই প্রস্রাব করে, এটা তো স্বাভাবিক!” তবে সমালোচনাও কম হয়নি। একজন লিখেছেন, “এই লেভেলে এসে এসব কেন হচ্ছে? খুবই ঘৃণ্য। সঠিকভাবে ফ্যাসিলিটি থাকলে সবাই টয়লেটেই যেতো।”

তবে এখানেই শেষ নয়। দুইবারের অলিম্পিক সোনা জয়ী লিলি কিং এই ‘গোপন’ তথ্য আরও স্পষ্ট করেন দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে। তিনি বলেন, “আমি জীবনে যতগুলো পুলে সাঁতার কেটেছি, সবখানেই প্রস্রাব করেছি। এটাই বাস্তবতা।”
তাঁর মন্তব্যের পক্ষে সায় দেন আরও অনেক অলিম্পিয়ান। জেক মিচেল, যিনি টোকিও অলিম্পিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি ছিলেন, বলেন, “আমি সবসময় প্রস্রাব করতে চাই কারণ আমি খুব বেশি পানি খাই।” তিনবারের অলিম্পিক পদকজয়ী কেটি হফ বলেন, “বাইরের মানুষের কাছে এটা জঘন্য শোনালেও, পুলে এত ক্লোরিন থাকে যে সেটা নিয়ে কেউ ভাবে না।”

তবে যাঁরা জানেন না, তাঁদের জন্য জানিয়ে রাখা ভালো, সাঁতারের পুলে সাধারণত প্রচুর পরিমাণে ক্লোরিন ব্যবহার করা হয়। এই রাসায়নিক শুধু ব্যাকটেরিয়াই মারে না, বরং মানুষের ত্বক থেকে ঝরে পড়া মরা চামড়া, চুল এমনকি প্রস্রাব থেকেও সাঁতারুদের রক্ষা করে।
তবে তাই বলে পুলে প্রস্রাব করার অভ্যাসকে সমর্থন করা হয় না। কারণ, যত বেশি ময়লা বা মানবদেহের তরল থাকবে, তত বেশি ক্লোরিন মেশাতে হয়। অতিরিক্ত ক্লোরিনে চোখ ও ত্বকের ক্ষতি হতে পারে, এমনকি শরীরেও প্রভাব ফেলতে পারে।

