ফুটবলে শুধু ট্যাকটিক্স আর ফর্মই নয়, অনেকে বিশ্বাস করেন- ভাগ্যও বড় একটা ব্যাপার। যখন হাজারো সমর্থকের আনন্দ-আশা জড়িয়ে থাকে মাঠের ১১ জনের পারফরম্যান্সের সঙ্গে, তখন অনেক খেলোয়াড়ই যুক্তি-বুদ্ধিকে পাশে রেখে আশ্রয় নেন কুসংস্কারে।
বিশ্বজুড়ে অসংখ্য ফুটবলার নিজেদের সফলতার পেছনে ‘লাকি জার্সি’ থেকে শুরু করে ‘বিশেষ রুটিন’- সবকিছুকে গুরুত্ব দেন। কেউ কেউ তো একজোড়া অন্তর্বাসকে পর্যন্ত সৌভাগ্যের প্রতীক মনে করেন! দল যখন জিততে থাকে, তখন সেই পুরনো অন্তর্বাসটা কেনই বা বদলাবেন? আর যদি বদলান, তখন কী হবে?
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন- কেন মুখ ঢেকে কথা বলেন ফুটবলাররা?
আরও পড়ুন- ফুটবল ম্যাচে গোলকিপারদের জার্সি যে কারণে দলের সবার চেয়ে আলাদা
চলুন জেনে নেওয়া যাক বিশ্ব ফুটবলের সবচেয়ে অদ্ভুত ১০টি কুসংস্কারের গল্প।
জন টেরি: ম্যাচের আগে ৫০টা কুসংস্কার!
ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক জন টেরি জানিয়েছেন, ম্যাচের আগে তাঁর ৫০টির মতো নির্দিষ্ট অভ্যাস রয়েছে, যেগুলো না করলে তিনি মাঠে নামতেই পারেন না!
বিজ্ঞাপন
তিনি ম্যাচের দিন গাড়িতে শোনেন একই আষার-এর গান। পার্কিং করেন নির্দিষ্ট একটি জায়গায়, বাসে উঠে বসেন একই সিটে। মোজার উপর টেপ জড়ান ঠিক তিনবার, আর শিনগার্ডের ব্যান্ড কাটেন একদম নির্দিষ্ট মাপে।

আরও পড়ুন- ফের বিশ্বের সর্বোচ্চ আয় করা ক্রীড়াবিদ রোনালদো, সেরা দশে আরও যারা
আরও পড়ুন- ইংলিশ ক্লাবগুলোকে টপকে তরুণ তারকাকে দলে নিল রিয়াল মাদ্রিদ
টেরি একজোড়া ‘লাকি’ শিনগার্ড ১০ বছর ধরে ব্যবহার করেছেন যতদিন না সেটা এক ম্যাচে বার্সেলোনায় হারিয়ে ফেলেন। ভাবুন তো, ম্যাচে নিষিদ্ধ থাকলেও যদি পুরো কিট পরে ডাগআউটে বসে থাকেন, সেটা হয়তো টেরির আরও একটা কুসংস্কারই!
পেলে: এক জার্সির খোঁজে ‘ফর্ম’ ফিরে পেলেন
কুসংস্কারের খপ্পরে পড়েননি এমন কিংবদন্তিও বিরল। পেলে তার মধ্যে অন্যতম। একবার তিনি খেলা শেষে নিজের জার্সি উপহার দেন এক ভক্তকে। এরপর থেকেই লক্ষ্য করলেন তার ফর্মে যেন ভাটা পড়েছে।

তৎক্ষণাৎ একজন বন্ধুকে দিয়ে শুরু করেন সেই পুরনো জার্সির খোঁজ। এক সপ্তাহ পর জার্সি ফিরে পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পেলে ফিরে পান গোলের ধার।
তবে মজার ব্যাপার হলো, বন্ধুটি আসলে পুরনো জার্সিটা খুঁজে পায়নি, আরেকটা জার্সি দেয় পেলেকে! যদি সত্যিটা পেলে জানতেন, তাহলে ইতিহাস হয়তো অন্যরকমও হতে পারতো!
ইয়োহান ক্রুইফ: চুইংগাম না পেলেই সর্বনাশ!
নেদারল্যান্ডসের সর্বকালের সেরা ফুটবলার ইয়োহান ক্রুইফ-এরও ছিল অদ্ভুত সব রিচ্যুয়াল। মাঠে নামার আগে তিনি প্রতিবার নিজের ক্লাব আয়াক্সের গোলরক্ষক গার্ট বালসকে পেটে হালকা থাপ্পড় দিতেন। এরপর হেঁটে প্রতিপক্ষের অর্ধে গিয়ে নিজের চুইংগাম ফেলে আসতেন।
একবার ভুলে চুইংগাম আনতেই ভুলে গিয়েছিলেন তিনি। আর ফলাফল? সেই ম্যাচেই আয়াক্স ৪-১ গোলে হারে। দুর্ভাগ্যবশত, সেটি ছিল ১৯৬৯ সালের ইউরোপিয়ান কাপ ফাইনাল, মিলানের বিপক্ষে।

এমন আরও অনেক তারকাই মাঠে নামার আগে আশ্রয় নেন আজব সব কুসংস্কারে। অনেকে বলেন, এসব আসলে মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকার একটা প্রক্রিয়া। তবে ফুটবলে মাঠের বাইরের এই কাহিনিগুলো কখনো কখনো মাঠের গল্পকেও হার মানায়!

