বিরাট কোহলির টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসরের পেছনে কী ছিল? ভারতের সাবেক কোচ রবি শাস্ত্রী জানালেন, অবসরের ঘোষণার এক সপ্তাহ আগেই কোহলির সঙ্গে তার ব্যক্তিগত কথা হয়েছিল। সেই আলাপেই শাস্ত্রী বুঝে যান, কোহলি তার সিদ্ধান্তে একেবারে নিশ্চিত।
শাস্ত্রী বলেন, “আমি ওর সঙ্গে কথা বলেছিলাম, সম্ভবত ঘোষণার এক সপ্তাহ আগে। ওর মনটা খুব পরিষ্কার ছিল। বলল, ‘আমি সব কিছু দিয়ে দিয়েছি।’ কোনো আফসোস ছিল না ওর। আমি কিছু প্রশ্ন করেছিলাম, আর ব্যক্তিগত আলাপে ও খুব স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয়, ওর মনে কোনো দ্বিধা নেই। তখনই বুঝেছিলাম, হ্যাঁ, সময়টা বুঝি ঠিক।”
বিজ্ঞাপন
কোহলি এখনও ওয়ানডে ও ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে বড় ভূমিকা রাখতে পারবেন বলেই মনে করেন শাস্ত্রী। “অনেকে চায় ও চালিয়ে যাক। কিন্তু ও বড় ছবিটা দেখে। ও মনে করে, ওয়ানডে ক্রিকেটে অনেক কিছু দিতে পারবে। ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটেও অনেক বছর খেলার সুযোগ আছে। ওর কোনো আক্ষেপ থাকবে না, কারণ ও নিজেকে পুরোপুরি উজাড় করে দিয়েছে।”
১৪ বছরের ক্যারিয়ারে ১২৩ টেস্টে ৩০টি সেঞ্চুরি করা কোহলি ভারতের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল টেস্ট অধিনায়কও। কিন্তু তিন ফরম্যাটে এত উচ্চ পর্যায়ের চাপ সামলানো সহজ ছিল না, বললেন শাস্ত্রী।
“একজন ব্যাটসম্যান বা বোলার হিসেবে দায়িত্ব পালন করা এক জিনিস,” বলেন শাস্ত্রী। “কিন্তু বিরাটের ক্ষেত্রে মনে হতো, মাঠে নামলেই যেন ওকেই সব কিছু করতে হবে, সব উইকেট নিতে হবে, সব ক্যাচ ধরতে হবে, সব সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এই মানসিক চাপ থাকলে না বিশ্রাম নেওয়া পর্যন্ত কখনো না কখনো বার্নআউট হবেই। সেটাই হয়েছে। এখন সে টেস্ট থেকে সরে দাঁড়িয়েছে। দুঃখজনক, কারণ আমি ভাবতাম ও আরও দুই বছর খেলতে পারত। তবে সিদ্ধান্তটা তো ওর। যদি ওর মন বলে, ‘এটাই শেষ’, তাহলে সেটাই শেষ।”
শুধু রান-সেঞ্চুরিই নয়, মাঠে আবেগপ্রবণ আচরণ, তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার মনোভাব, এসব দিয়েও কোহলি টেস্ট ক্রিকেটে একটা নিজস্ব ছাপ রেখে গেছেন। শাস্ত্রীর চোখে, এসব গুণেই কোহলি হয়ে উঠেছেন ক্রিকেট-দুনিয়ার 'ইনফেকশাস' চরিত্র।
বিজ্ঞাপন
“ও সারা বিশ্ব থেকে সম্মান পেয়েছে। গত এক দশকে সম্ভবত কোনো ক্রিকেটারের এত বড় ফ্যানবেস ছিল না,” বললেন শাস্ত্রী। “অস্ট্রেলিয়া হোক বা দক্ষিণ আফ্রিকা, ও যেখানেই খেলেছে, মানুষ খেলা দেখেছে। অনেকের সঙ্গে ছিল ভালোবাসার সম্পর্ক।
“ওর উদযাপন, মাঠে আবেগ, গায়ের ভেতরে গেঁথে যেত। শুধু ড্রেসিংরুমেই নয়, টিভির পর্দার সামনে বসে থাকা মানুষদের ঘরেও সেটা ছড়িয়ে যেত। এক ধরনের ছোঁয়াচে আবেগ ছিল ওর ভেতরে। সেটাই সবচেয়ে মনে থাকবে।”

