সর্বকালের সেরা ক্রিকেটারদের তালিকা করলে বিরাট কোহলির নামটা রাখতে হবে উপরের দিকেই। ৩৬ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার তিন ফরম্যাট মিলিয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির মালিক। গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিকে বিদায় বলেছেন তিনি। আর আজ আচমকাই বিদায় জানিয়েছেন টেস্ট ক্রিকেটকে।
লাল বলের ক্রিকেটে আরও বছর দুয়েক অনায়াসেই খেলে যেতে পারতেন কোহলি, এমনটাই ধারণা করেন তার সমর্থকরা। তবে কোহলি নিজের বিদায়ী বার্তায় জানিয়েছেন, ছেড়ে দেওয়ার সঠিক সময় এটাই।
বিজ্ঞাপন
লাল বলের ক্রিকেটে সাম্প্রতিক সময়ে খুব একটা ভালো ফর্মে ছিলেন না কোহলি। সব মিলিয়েই তিনি সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এমনটাই ভাবছেন সবাই। তবে ভারতের সংবাদমাধ্যম দৈনিক জাগরণের একটি প্রতিবেদনে দেওয়া হয়েছে চমকপ্রদ এক তথ্য। বাজে ফর্মের কারণে টেস্ট দলে জায়গা নিশ্চিত নয়, এমনটা বলার কারণেই কোহলি অবসর নিয়েছেন, এমনটাই জানানো হয়েছে প্রতিবেদনে।
গত শনিবার সকালে খবর আসে যে কোহলি টেস্ট ক্রিকেট থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত বিসিসিআইকে জানিয়ে দিয়েছেন। কোহলি ভক্তদের জন্য এই খবর চরম হৃদয়বিদারক সন্দেহ নেই। কোহলির এমন সিদ্ধান্তের প্রভাব এতটাই ছিল যে, খবর অনুযায়ী, বিসিসিআই মরিয়া হয়ে কোহলিকে তাঁর সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার অনুরোধ করেছে। যাতে জুন-জুলাইয়ের গুরুত্বপূর্ণ ইংল্যান্ড সফরে ভারতীয় দল অনভিজ্ঞ না থেকে যায়, বোর্ডের তরফে সেই চেষ্টাই করা হচ্ছে বলে খবর।
কেননা রোহিত শর্মা এবং রবিচন্দ্রন অশ্বিন ইতিমধ্যেই টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন। রবীন্দ্র জাদেজা এবং জসপ্রিত বুমরাহকে ইংল্যান্ড সিরিজের দলে নিশ্চিতভাবেই রাখা হবে। যেহেতু এই সিরিজ দিয়ে ভারত নতুন ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চক্র শুরু করছে, তাই কোহলি না থাকলে তা ভারতের জন্য বড় ধাক্কা হতে পারে।
তবে, দৈনিক জাগরণের একটি প্রতিবেদনে সম্পূর্ণ বিপরীত দাবি করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে যে, কোহলিকে তাঁর সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে বলা হয়নি। বরং, সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীরা কোহলিকে স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন যে, খারাপ ফর্মের কারণে ভারতের টেস্ট দলে তাঁর জায়গা পাওয়ার নিশ্চিত নয়।
বিজ্ঞাপন
অস্ট্রেলিয়ায় তাঁর শেষ টেস্ট সিরিজে কোহলি পাঁচটি টেস্টে সাকুল্যে ১৯০ রান করেন। তাঁর ব্যাটিং গড় ছিল ২৩-এর সামান্য বেশি। আসলে সেই ১৯০ রানের মধ্যে ১০০ রান বিরাট একটি ইনিংসেই করেছিলেন। বাকি সিরিজে তাঁর সার্বিক অবদান ৯০ রানের।
জাগরণের প্রতিবেদনে একটি সূত্রের উদ্ধৃতি দেওয়া হয়েছে, যেখানে সংশ্লিষ্ট সূত্র বলেন, ‘বিসিসিআই কাউকে অনুরোধ করে না। একজন খেলোয়াড়ের সিদ্ধান্ত তাঁর ব্যক্তিগত পছন্দ। আমরা এতে হস্তক্ষেপ করি না।’
উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, ভারত বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফির আগে ঘরের মাটিতে নিউজিল্যান্ডের কাছে টেস্ট সিরিজে ৩-০ হোয়াইটওয়াশ হয়। সেই সঙ্গে প্রথমবারের মতো ভারতীয় দল ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠতে ব্যর্থ হয়। পুরো বিষয়টিকে বিসিসিইয়ের উপর বড়সড় প্রভাব ফেলে।
৭ মে মুম্বাইয়ে একটি বৈঠক হয়, যেখানে প্রাক্তন টেস্ট অধিনায়ক রোহিতকে জানানো হয়েছিল যে তিনি আর ভারতের টেস্ট দলের জন্য উপযুক্ত নন। জানা গেছে, কোহলিকেও একই বার্তা দেওয়া হয়েছে, যদিও তাঁর চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে। কোহলি ইংল্যান্ডে যাবেন কিনা জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট বিসিসিআই সূত্র বলেন, ‘আশা করি যাবেন না।’

