ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনার পারদ তুঙ্গে, বাজছে যুদ্ধের দামামা। কয়েক প্রস্থ হামলা-পাল্টা হামলা চালিয়েছে দুই দেশই। হামলার জেরে গতকাল ভারতের পশ্চিম সীমান্তে দেখা মিলেছে নজিরবিহীন ব্ল্যাকআউটের। আর ব্ল্যাক আউটের কারণে কালো ছায়া নেমে এসেছে চলমান আইপিএল আসরের ভবিষ্যতের উপরও।
ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) বাকি অংশ সরিয়ে নেওয়া হয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতে। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) জানিয়েছে, টুর্নামেন্টের বাকি ৮ ম্যাচের নতুন তারিখ ও ভেন্যু খুব শিগগিরই জানিয়ে দেওয়া হবে।
বিজ্ঞাপন
এদিকে গতকাল রাত ৯টা ৩৫ মিনিটের দিকে ধর্মশালায় পাঞ্জাব কিংস ও দিল্লি ক্যাপিটালসের মধ্যকার ম্যাচটি ১০.১ ওভারের পরই বন্ধ করে দেওয়া হয়। ধর্মশালা থেকে মাত্র ৯০ কিলোমিটার দূরের পাঠানকোটে সেদিন রাতেই হামলার ঘটনা ঘটে। এরপরই ভারতের ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) জরুরি বৈঠকে বসে টুর্নামেন্টের ভবিষ্যৎ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে।
বিসিসিআই সহ-সভাপতি রাজীব শুক্লা দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-কে বলেন, “আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি এবং সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আগামীকাল জানানো হবে। প্রতিদিনই নতুন নতুন ঘটনা ঘটছে। আমরা সরকার যা বলবে, তাই করব। এখন আমাদের মূল লক্ষ্য খেলোয়াড়, দর্শক এবং সংশ্লিষ্ট সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।”
বিসিসিআই এরইমধ্যে বিভিন্ন বিকল্প ভাবতে শুরু করেছে। এমনকি আইপিএল সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা বা নতুন সূচি তৈরি করাও বিবেচনায় রয়েছে।
সূত্র জানায়, ধর্মশালার ম্যাচ বন্ধের সিদ্ধান্ত আসে হিমাচল প্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে। ভারতীয় ক্রিকেটের এক শীর্ষ ক্রিকেট কর্মকর্তার ফোন পাওয়ার পরই স্টেডিয়ামের ফ্লাডলাইট বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং মাঠ আংশিক অন্ধকার হয়ে যায়। এরপরই দর্শকদের স্টেডিয়াম ছেড়ে যেতে বলা হয়।
বিজ্ঞাপন
সেই সময় আইপিএল চেয়ারম্যান অরুণ ধুমল বাউন্ডারি লাইন ধরে হাঁটতে হাঁটতে হাত নেড়ে দর্শকদের চলে যেতে বলেন। উভয় দলের খেলোয়াড়দের দ্রুত বাসে করে হোটেলে ফিরিয়ে নেওয়া হয়। এতটাই তাড়াহুড়ো ছিল যে, কেউ কেউ প্যাড পরেই হোটেলে পৌঁছে যান।
এক খেলোয়াড় দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-কে জানান, “পাঠানকোটে হামলার কথা জানানো হয়েছিল। আমাদের সঙ্গে সঙ্গে হোটেলে ফিরে যেতে বলা হয়। কিছুটা আতঙ্কও ছড়িয়েছিল। দিল্লির খেলোয়াড়রা পাঞ্জাবের বাসে উঠে পড়ে, পাঞ্জাবেররা দিল্লির বাসে। বাইরে বের হতে চাইলেও প্রচণ্ড ভিড় ছিল। বিদেশি খেলোয়াড়রা চিন্তিত হয়ে পড়েন। অনেকেই দেশে ফিরে যেতে চাইছিলেন।”
এদিকে বিমানবন্দর বন্ধ থাকায় বিসিসিআই ‘প্ল্যান বি’ নিয়ে ভাবছে। রাজীব শুক্লা বলেন, “আমরা দেখছি দলগুলোকে ট্রেনে করে দিল্লি নেওয়া যায় কি না। বিসিসিআই নিশ্চিত করতে চায়, সবাই যেন নিরাপদে থাকে।”
বিদেশি খেলোয়াড়দের পরিস্থিতি সম্পর্কে জানানো হয়েছে বলেও জানা গেছে। কেউ যদি দেশে ফিরে যেতে চায়, তাহলে তাদের জন্য ভ্রমণের ব্যবস্থা করা হবে। অন্য বোর্ডগুলোকেও পরিস্থিতি জানাবে বিসিসিআই, যাতে তাদের খেলোয়াড়দের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়।

