বুধবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৫, ঢাকা

টি-টোয়েন্টিতে নিখুঁত ব্যাটিংয়ের নতুন অধ্যায় লিখছেন পুরান

স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:৫৬ পিএম

শেয়ার করুন:

টি-টোয়েন্টিতে নিখুঁত ব্যাটিংয়ের নতুন অধ্যায় লিখছেন পুরান

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ছক্কা হাঁকানো যেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটারদের পরিচিত এক দৃশ্য। একসময় ক্রিস গেইল ছিলেন এই ফরম্যাটের অপরাজেয় রাজা। এখন আলোচনার কেন্দ্রে নিকোলাস পুরান।

আইপিএল ২০২৫-এ লখনৌ সুপার জায়ান্টসের হয়ে ধারাবাহিকভাবে দুর্দান্ত পারফর্ম করছেন ২৯ বছর বয়সী এই বাঁহাতি ব্যাটার। শুধু রানই করছেন না, করছেন আগ্রাসী ভঙ্গিতে যা টি-টোয়েন্টির ব্যাটিং মানচিত্রে নতুন হিসাব কষতে বাধ্য করছে।


বিজ্ঞাপন


সব ক্ষেত্রেই সেরা পোরান
২০২৪ সাল থেকে এখন পর্যন্ত টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বেশি ছক্কা (২১১টি) মেরেছেন পুরান। তার পরে আছেন দক্ষিণ আফ্রিকার হেইনরিখ ক্লাসেন (১২৪টি)। গত বছর পুরান ভেঙেছেন ক্রিস গেইলের এক বছরের সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ডও (১৩৯টি বনাম গেইলের ১৩৫টি)।

আইপিএলের চলতি আসরে তার ইনিংসগুলো—৭০, ৭৫, ৪৪, ১২ এবং অপরাজিত ৮৭। প্রতিটি ম্যাচে গড়ে হাঁকিয়েছেন ৪.৮টি ছক্কা, যা আইপিএলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। এমনকি গেইলের সোনালি সময়েও এই গড় ছিল ৩.৯।

স্ট্রাইক রেট আর গড়—দুটোই শীর্ষে
টি-টোয়েন্টি ব্যাটসম্যানদের কেউ সাধারণত বেশি রান করে, কেউ বা বেশি দ্রুত। কিন্তু পুরান দুই জায়গাতেই দারুণ। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত তার গড় ৪২.৩১, স্ট্রাইক রেট ১৬২.৪৯। গত ১০ ইনিংসে গড় ৫৭.৭, স্ট্রাইক রেট ১৯৯।

স্পিন বোলারদের বিরুদ্ধে পুরান বিশ্বের অন্যতম সেরা হিটার। গত দুই আইপিএল মৌসুমে স্পিনারদের বিপক্ষে তার গড় ৮৯.৬ এবং স্ট্রাইক রেট ১৮৪.৪। শুধু তাই নয়, ডেথ ওভারে প্রতিটি লেন্থে তিনি স্ট্রাইক করেন ২০০’র বেশি রেটে, ব্যতিক্রম শুধু ইয়র্কার (স্ট্রাইক রেট ১৬৬)।


বিজ্ঞাপন


তবে পরিকল্পনা করে ছক্কা মারেন না বলেই জানিয়েছেন পুরান। তিনি বলেন, “আমি ছক্কা মারার পরিকল্পনা করি না। শুধু চেষ্টা করি ভালো পজিশনে যেতে, তারপর বলটা টাইমিং করার চেষ্টা করি।” পুরান বরং নিজেকে ভাগ্যবান মানেন, ব্যাটের গতি নিয়ে কখনও আলাদা করে কাজ করেননি। “আমি স্রেফ প্রতিভা নিয়ে এসেছি,” বলেন ক্যারিবিয় এই ব্যাটার।

ইংল্যান্ডের সাবেক অলরাউন্ডার সামিত প্যাটেল যিনি পুরানের সঙ্গে খেলেছেন, বলেন, “লোকজন যা দেখে না, সেটা হলো ওর পরিশ্রম। ছক্কা মারার জন্য ও যেভাবে অনুশীলন করে, তা অবিশ্বাস্য। ওর মনোভাব, প্রস্তুতি- সবই শতভাগ নিবেদিত।”

ক্রিকভিজ-এর তথ্য অনুযায়ী, পাওয়ারপ্লে, মিডল ওভারে এবং ডেথে—সমানভাবে ‘ব্যাটিং ইমপ্যাক্ট’ দেখানো একমাত্র ব্যাটার পোরান। তবে বাহাতি রিস্টস্পিন ও অফ-স্টাম্পের বাইরের শর্ট বল এখনও কিছুটা সমস্যার জায়গা। যদিও এই দুর্বলতা সামান্যই, কারণ কোথাও ভুল করলে পুরান সহজেই রান তুলতে পারেন।

টি-টোয়েন্টিতে নিখুঁত ব্যাটিং বলে কিছু যদি থাকে, সেটার কাছাকাছি পৌঁছে গেছেন নিকোলাস পোরান। ক্রিকেটবিশ্ব দেখছে, কীভাবে প্রতিভা, কৌশল আর পরিশ্রম মিলিয়ে একজন ব্যাটার হয়ে উঠছেন গেমচেঞ্জার।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর