ম্যাচ শেষে স্কোরকার্ডে দেখা যাচ্ছে ১২ রানে হেরেছে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। কিন্তু আসল লড়াইটা আরও আগে, ম্যাচের প্রথম ছয় ওভারে হেরেই বসে গিয়েছিল পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নরা, এমনটাই মনে করছেন দলের হেড কোচ মাহেলা জয়াবর্ধনে।
সোমবার রাতে ওয়াংখেড়েতে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর (RCB) কাছে হারের পর ম্যাচ শেষে জয়াবর্ধনে বলেন, “পাওয়ারপ্লে আমাদের জন্য বড় একটা উদ্বেগের জায়গা- ব্যাটে ও বলে দু’দিক থেকেই। গত কয়েক ম্যাচেও বল হাতে আমরা অনেক রান দিয়ে ফেলেছি। আজকেও শুরুটা ভালো হয়েছিল, প্রথম ওভারেই উইকেট পেয়েছিলাম। কিন্তু এরপর আমরা ছন্দ হারিয়ে ফেলি।”
বিজ্ঞাপন
ট্রেন্ট বোল্ট আইপিএলের ইতিহাসে ৩১তম বার প্রথম ওভারেই উইকেট তুলে নেন। কিন্তু এরপর কোহলি ও পাডিক্কাল মিলে ইনিংসের রঙ পালটে দেন। বিশেষ করে দীপক চাহারের এক ওভারে ২০ রান তুলে নেয় আরসিবি। শেষ পর্যন্ত পাওয়ারপ্লেতে বেঙ্গালুরু তুলেছিল ১ উইকেটে ৭৩ রান যা ওয়াংখেড়েতে মুম্বাইয়ের বিপক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আর আইপিএলের ইতিহাসে তাদের বিপক্ষে চতুর্থ সর্বোচ্চ।
মুম্বাইয়ের বল হাতে পাওয়ারপ্লের চিত্র আরও ভয়াবহ। চলতি আসরে প্রথম ছয় ওভারে তাদের ইকোনমি রেট ১০.৩৬, সর্বোচ্চ। আর এই সময়টায় তারা মাত্র ৬টি উইকেট তুলতে পেরেছে।
ব্যাটিংয়েও সমস্যাটা একই। লক্ষ্য ২২২, আর পাওয়ারপ্লে শেষে স্কোর ৫৪/২। চলতি মৌসুমে প্রথম ছয় ওভারে তারা হারিয়েছে ১০টি উইকেট। এই তালিকায় দ্বিতীয় মুম্বাই, (শীর্ষে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ, ১২ উইকেট)।
জয়াবর্ধনের ভাষ্য, “ব্যাট হাতে শুরুটা ভালো হলেও আমরা সেটা ধরে রাখতে পারিনি। দ্রুত দুটি উইকেট পড়ে যাওয়ার পর গতি হারিয়ে ফেলি। কিছু বড় শট এলেও আমরা প্রথম ১০ ওভারে খেলায় ছিলাম না।”
বিজ্ঞাপন
আইপিএলের ১০ দলের পয়েন্ট টেবিলে এখন অষ্টম স্থানে মুম্বাই, একমাত্র জয়টা এসেছে কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিপক্ষে। তবুও জয়াবর্ধনে দলে বড় কোনো পরিবর্তনের পক্ষে নন। তিনি বলেন, “আমি এখনো সিনিয়রদের ওপর ভরসা রাখি। ওদের দক্ষতা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। আমাদের আরও নিষ্ঠুর হতে হবে। মাঝে মাঝে দুই-একটা ওভারে আমরা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলি—এটাই সমস্যা।”
তিনি আরও বলেন, “হারতে হারতে আত্মবিশ্বাস কমে যায়। তখন দলে নতুন কাউকে ঢোকানো আরও চ্যালেঞ্জিং হয়ে যায়। যাদের অভিজ্ঞতা আছে, তারা জানে এমন পরিস্থিতি কীভাবে সামলাতে হয়। তাই আমরা ওদের ওপরই ভরসা রাখছি।”
জয়াবর্ধনের মতে, “আমাদের অধিকাংশ খেলোয়াড়ই ম্যাচ উইনার। শুধু আমরা ধারাবাহিকভাবে ছন্দটা খুঁজে পাচ্ছি না। হার্দিক যখন ব্যাট করতে নামছিল, আমি তাকে বলেছিলাম, ‘তিনটা বড় ওভার বের করার চেষ্টা করো’। ও সেটাই করেছিল। তিলকও ওকে ফলো করে গিয়েছিল।”
শেষ পর্যন্ত সেই ঘুরে দাঁড়ানোর গল্পটা অসমাপ্তই থেকে যায়। মুম্বাইয়ের কোচ বলেন, “আমরা খুব কাছাকাছি পৌঁছেছিলাম, কিন্তু যথেষ্ট ভালো ছিলাম না। অনুভূতিগুলো দারুণ ছিল ঠিকই, কিন্তু বাস্তবতা হলো—আমরা আমাদের সেরা ক্রিকেট খেলছি না।”