প্রতি বছরই ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) শুরুর আগে নিলাম হয়। তিন বছর পরপর হয় মেগা নিলাম। ২০২৫ আইপিএল শুরুর আগে সৌদি আরবের জেদ্দায় রোববার বিকেলে বসছে মেগা নিলাম, চলবে সোমবারও। আসন্ন আসরে ৫৭৭ ক্রিকেটার বিক্রি হওয়ার অপেক্ষায় আছেন। বিপরীতে ১০ ফ্র্যাঞ্চাইজি নামছে ৬৪১ কোটি ৫০ লাখ রুপি নিয়ে ( বাংলাদেশি টাকায় ৯০৭.৪৬ কোটি টাকা প্রায়)। বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টায় শুরু হবে নিলাম। যার জন্য আগে থেকেই আইপিএলের সাজ ধারণ করেছে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম আকর্ষণীয় শহরটি।
৫৭৪ ক্রিকেটারের মধ্যে ৩৬৬ জন ভারতীয়, ২০৮ জন ওভারসিজ। ৩ জন আছেন সহযোগী দেশের ক্রিকেটার। সর্বোচ্চ ২০৪ টি স্লটে ক্রিকেটাররা দল পাবেন, যার মধ্যে সর্বোচ্চ ৭০ জন বিদেশি ক্রিকেটারের কপাল খুলবে। সর্বোচ্চ ২ কোটি ভারতীয় রুপি ভিত্তমূল্যে আছেন ৮১ ক্রিকেটার, যেখানে নাম আছে বাংলাদেশের মুস্তাফিজুর রহমানের।
বিজ্ঞাপন
আইপিএল নিলামে ১২ বাংলাদেশি। সাকিব আল হাসান, মুস্তাফিজুর রহমান, লিটন দাসে আছেন যথারীতি। তারা আগেও খেলেছেন আইপিএল। তাদের সঙ্গে নিলামে আছেন রিশাদ হোসেন, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, তাওহিদ হৃদয়, মেহেদী হাসান মিরাজ, তানজিম হাসান, মেহেদী হাসান, নাহিদ রানা ও হাসান মাহমুদ।
বাংলাদেশের ১২ জনের মধ্যে আইপিএলে খেলার অভিজ্ঞতা আছে সাকিব, মুস্তাফিজ ও লিটনের। সাকিব ৯, মুস্তাফিজ ৭ এবং লিটন ১ মৌসুম আইপিএলে খেলেছেন। ২০১১ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে সাত মৌসুম খেলেছেন সাকিব। এর মধ্যে ২০১২ ও ২০১৪ সালে কলকাতার শিরোপাজয়ী দলের সদস্য ছিলেন তিনি। এছাড়া সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে দুই মৌসুম খেলেন তিনি।
এদিকে ২০১৬ সালে আইপিএল অভিষেকের পর পাঁচবার আইপিএলে খেলেছেন মুস্তাফিজ। সানরাইজার্স হায়দরাবাদ, মুম্বাই ইন্ডিয়ানস, রাজস্থান রয়্যালস, দিল্লি ক্যাপিটালস ও সবশেষ চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে দেখা গেছে মুস্তাফিজকে। ২০২৩ সালে কলকাতার হয়ে খেলেছেন লিটন। মাত্র এক ম্যাচ খেলার পর আর সুযোগ পাননি এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটার।
বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে সর্বোচ্চ দুই কোটি রুপি ভিত্তিমূল্য ক্যাটাগরিতে আছেন মুস্তাফিজ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভিত্তিমূল্য এক কোটি রুপির ক্যাটাগরিতে আছেন সাকিব, তাসকিন ও মিরাজ। ভিত্তিমূল্য ৭৫ লাখ রুপির ক্যাটাগরিতে আছেন- লিটন, রিশাদ, হৃদয়, শরিফুল, শেখ মাহেদি, তানজিম, হাসান ও রানা।
বিজ্ঞাপন
মেগা নিলামে মুস্তাফিজ-সাকিবদের টপকে দল পাবেন তাসকিন-রিশাদ
এই মেগা নিলামে বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে প্রথমে চর্চায় আসবে মুস্তাফিজুরের নাম। সানরাইজার্স হায়দরাবাদ, মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স, রাজস্থান রয়্যালস, দিল্লি ক্যপিটালসের হয়ে খেলেছেন তিনি। গত মৌসুমেও ছিলেন চেন্নাই সুপার কিংসে। সানরাইজার্সের হয়ে আইপিএল জিতেছেন। ২০১৬ সালে ১৬ ম্যাচে ১৭টি উইকেট নিয়েছিলেন। চেন্নাইয়ের হয়েও ৯ ম্যাচে ১৪ উইকেট ছিল তাঁর পকেটে। এবার তাঁর ন্যূনতম মূল্য ২ কোটি। বাঁহাতি পেসারের বিষাক্ত কাটারের জন্য নিতে চাইবে অনেক দলই।
সেই তুলনায় সাকিব আল হাসানের ভবিষ্যৎ একটু ধোঁয়াশা। বাংলাদেশের তারকা ক্রিকেটার সম্প্রতি ক্রিকেটের বাইরেও অন্যান্য কারণে আলোচনায় এসেছেন। বারবার বিতর্কও বেঁধেছে। সেই তুলনায় ব্যাটে রান আসেনি। বল হাতে স্পিনের ম্যাজিকও অনেকটা ফিকে হয়েছে। তার মধ্যে মেজাজ হারিয়ে প্রায়ই গণ্ডগোলে জড়ান। এবার আইপিএলে সাকিবের ন্যূনতম মূল্য ১ কোটি টাকা। বিতর্কিত ও অফ ফর্মের কারণে সাবেক নাইটকে নিয়ে আগ্রহ হারাতে পারে অধিকাংশ ফ্র্যাঞ্চাইজি।
বরং সুযোগ পেতে পারেন তাসকিন আহমেদ। বাংলাদেশি পেসার ভালো ছন্দে আছেন। নিজের জন্য মূল্য ধার্য করেছেন ১ কোটি। এর আগে কখনও আইপিএলে না খেললেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের অভিজ্ঞতা তাঁর জন্য ইতিবাচক দিক হতে পারে। একই সঙ্গে দল পেতে পারেন রিশাদ হোসেনও। ভারতের মাটিতে গত বিশ্বকাপে ভালো বল করেছিলেন তিনি। লেগ স্পিনারের খোঁজ থাকবে অনেক দলেরই। কাজ চালানোর মতো ব্যাটও করে দিতে পারেন। তাঁর মূল্য ৭৫ লক্ষ। শিঁকে ছিঁড়তে পারে মেহেদি হাসান মিরাজের। তাঁর মূল্য ১ কোটি।

