টেস্ট ক্রিকেটে নতুন দিনের সূচনা হয়েছে বাংলাদেশের। পাকিস্তানের মাটিতে তদেরকে হোয়াইটওয়াশ করা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটের সেরা অর্জন। কেননা এর আগে কখনও পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট জিততে পারেনি টাইগাররা। এবার তাদের মাটিতে সিরিজের দুই ম্যাচের দুটিতেই জিতে স্বাগতিকদের হোয়াইটওয়াশ করলো বাংলাদেশ। এমন ঐতিহাসিক জয়ে দলের হয়ে বড় ভূমিকা রেখেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে দুই ম্যাচে ১৫৫ রান ও ১০ উইকেট নিয়ে হয়েছেন সিরিজসেরা হয়েছেন। সেই পুরস্কারের অর্থ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত রিক্সাচালকের পরিবারকে দেবেন মিরাজ। কেনো সিরিজ সেরা অর্থ রিক্সাচালকের পরিবারকে দেবেন, এ নিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক ভিডিও বার্তায় কথা বলেন মিরাজ।
বিজ্ঞাপন
বিসিবি প্রকাশিত ভিডিওতে মিরাজ বলেন, ‘প্রথম টেস্টের শেষ দিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখেছিলাম একটা ছেলে কান্না করেছে। ছেলেটার বয়স আমার ছেলের বয়সের মতোই। “আমার বাবা মারা গেছেন নামাজ পড়তে গিয়ে, গুলি খেয়ে মারা গেছেন, আমি রক্ত দেখেছি। আমার বাবা ফিরে আসে না” ওই কথাগুলো আমার এখনো কানে বাজে।’
তিনি আরও যোগ করে বলেন, ‘আমার খুব খারাপ লেগেছিল। তখনই নিয়ত করেছিলাম। “ম্যান অব দ্য সিরিজ” হব কি না, তা তো জানতাম না। তবে দেশে এসে ওদের সাহায্য করব, সেটা তখনই নিয়ত করেছি। যেহেতু ম্যান অব দ্য সিরিজ হয়েছি, সেটাই আমি উৎসর্গ করে দিয়েছি।’
সিরিজের দুই টেস্টে সব মিলিয়ে ১৫৫ রান করেছেন বাংলাদেশের এই অলরাউন্ডার। পাশাপাশি বল হাতে নিয়েছেন ১০ উইকেট। প্রথম টেস্টে বাংলাদেশ জয় পায় ১০ উইকেটের বড় ব্যবধানে। সেই জয়ে বড় অবদান রেখেছিলেন মিরাজ। দ্বিতীয় ইনিংসে নিয়েছিলেন ৪ উইকেট। দ্বিতীয় টেস্টে ব্যাট-বল দুই বিভাগেই তার বড় ভূমিকা রয়েছে। প্রথম ইনিংসে তিনি শিকার করেন ৫ উইকেট। এরপর ব্যাটিংয়ে নেমে করেন ৭৮ রান।
তার এমন দুর্দান্ত পারফরমেন্সে সিরিজ সেরা হয়ে ছাত্র আন্দোলনে নিহত রিকশাচালকের পরিবারকে দেওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, আমি প্রথমবারের মতো দেশের বাইরে ম্যান অব দ্য সিরিজ হয়েছি। সম্প্রতি আমাদের দেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন হয়েছে, যেখানে অনেকে শহীদ হয়েছেন। এই আন্দোলনে একজন রিকশাচালক আহত হয়েছিলেন, পরে উনি মারা যান। এই ম্যান অব দ্য সিরিজের পুরস্কারটা তাঁর পরিবারকে আমি দিতে চাই।’