১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২ শেষ হয় এবারের আইপিএলের মেগা নিলাম। এবারের আইপিএলে মোট ১০ দল মিলে নিলামে ৫৫১ কোটি ৭০ লাখ রুপি খরচ করে খেলোয়াড় কিনেছে। পাশাপাশি আগে থেকেই দলগুলো ৩২৮ কোটি রুপির বেশি বিনিয়োগ করে।
শুধু এবারের আইপিএল নয় এমন প্রতি মৌসুমেই কাঁড়ি কাঁড়ি টাকায় ফ্র্যাঞ্চাইজির দলে ভেড়েন ক্রিকেটাররা। কোন খেলোয়াড় ৮ কোটি, কেউ ১০, তো কেউ আবার ১৫ কোটিতে বিক্রি হয়ে থাকেন। কিন্তু মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে নিলামে বিক্রি হওয়ার পরে কী ভাবে সেই টাকা হাতে পান ক্রিকেটাররা?
বিজ্ঞাপন
নিলাম পরবর্তী যেভাবে ভাগবাটোয়ারা হয়ে অর্থ পান খেলোয়াড়রা সেজন্য নির্দিষ্ট নিয়ম তৈরি করেছে আইপিএল-এর গভর্নিং কাউন্সিল। সেই নিয়ম মেনেই টাকা দিতে হয় ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলিকে।
দেখে নেওয়া যাক যে নিয়ম মেনে টাকা পান ক্রিকেটাররা:
১) প্রথমেই এসে যায় আয়করের হিসাব। নিলামে যে দামে কোনও ক্রিকেটারকে কেনা হয় সেটিই তাঁর বেতন। কিন্তু বেতন বা তাঁর নিলামমূল্য থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণের আয়কর দিতে হয় । যার নিলামমূল্য যত বেশি, তাকে গুনতে হয় তত বেশি পরিমাণের আয়কর। আয়করের পর যে অর্থ কোনও ক্রিকেটার পাচ্ছেন সেটি শুধুমাত্র তাঁর। সেই টাকার উপর আর কারো দাবি থাকে না।
২) ধরুন কোনো খেলোয়াড়কে ১০ কোটি রুপিতে কেনা হয়েছে। এই ১০ কোটি রুপি হচ্ছে ওই ক্রিকেটারের এক মৌসুমের বেতন। ফলে, ১০ কোটি রুপিতে কোনো ক্রিকেটারকে কেনা হলে তার চুক্তির মেয়াদ যদি হয় ২ বছর তবে তিনি পাবেন ২০ কোটি রুপি। কিন্তু ব্যক্তিগত কারণে ম্যাচ খেলতে না পারলে টাকা কেটে নেওয়ারও নিয়ম রয়েছে।
বিজ্ঞাপন
৩) তিন বছর অথবা কোন নির্দিষ্ট সময়ের চুক্তিতে দলে আসা কোন ক্রিকেটারের চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে তাঁকে পরের মৌসুমের জন্য ওই দল ধরে রাখতে চাইলে বাড়াতে হয় চুক্তির সময়সীমা। এ ক্ষেত্রে ওই ক্রিকেটার আগের বছরের হিসেবেই টাকা পাবেন। কিন্তু সংশ্লিষ্ট ক্রিকেটার ও ফ্র্যাঞ্চাইজি আলোচনা করে দাম বাড়াতে পারে। সাধারণত কোনও ক্রিকেটারকে ধরে রাখলে টাকার অঙ্ক বাড়িয়েই তাঁর চুক্তি বাড়ানো হয়।
৪) এবার আসা যাক ফিটনেস নিয়ে। ধরুন কোন দল একজন ক্রিকেটারকে নিলামে কিনে গোটা মৌসুমে ফিট থাকার পরও কোন ম্যাচে তাকে মাঠে নামায়নি। তা হলে তাঁকে পুরো টাকা দিতে হয়। ফিট থাকা খেলোয়াড়ের ক্ষেত্রে কয়টি ম্যাচে খেলানো হল সেই হিসেব মুখ্য না।
৫) যদি কোনো ক্রিকেটার মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই ইনজুরিতে পড়ে পুরো মৌসুমের জন্য ছিটকে যান তাহলে তাঁকে কোনও টাকা দিতে হয় না। তবে কোনো ক্রিকেটার যদি মৌসুমের কয়েকটি ম্যাচ খেলে চোটের কারণে বাদ যান সেক্ষেত্রে তাঁকে কেনা দামের ১০ শতাংশ ও তার পরে ম্যাচ প্রতি টাকা দেওয়া হয়।
৬) মৌসুমের মাঝে কোনও ক্রিকেটার চোট পেয়ে গেলে তাঁর চিকিৎসার খরচ বহন করতে হয় সংশ্লিষ্ট ফ্র্যাঞ্চাইজিকেই।
৭) মৌসুম শেষ হওয়ার আগেই কোনও ক্রিকেটার তাঁর ফ্র্যাঞ্চাইজির কাছে তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার আবেদন করতে পারেন। যদি সেই আবেদনে ফ্র্যাঞ্চাইজি রাজি হয় তাহলে তাদের সেই ক্রিকেটারকে তাঁর চুক্তি অনুযায়ী পুরো টাকা দিতে হবে।
উল্লেখ্য, ২০০৮ সালে আইপিএল থেকে ইউএস ডলারে ক্রিকেটারের দাম ঠিক করা হত। এক ডলারের বিপরীতে ছিল ভারতীয় মুদ্রায় ৪০ রুপি। ২০১২ সাল থেকে ভারতীয় মুদ্রায় নিলাম শুরু হয়।
এসও

