শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪, ঢাকা

যে আইনের মারপ্যাঁচে হেরে গেল রিয়াদ-হৃদয়রা

স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১ জুন ২০২৪, ০৫:২৩ পিএম

শেয়ার করুন:

যে আইনের মারপ্যাঁচে হেরে গেল রিয়াদ-হৃদয়রা

ইতিহাস গড়া হলো না বাংলাদেশের, লেখা হলো না প্রোটিয়া বধ রূপকথা। চেষ্টা করেও ভাগ্য বদলাতে পারলেন না মাহমুদউল্লাহ। খুব কাছে গিয়েও পুড়তে হলো আক্ষেপের অনলে। তাতে আবারও বাড়লো দক্ষিণ আফ্রিকাকে টি-টোয়েন্টিতে হারানোর অপেক্ষা। নিউইয়র্কে সোমবার মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকা। যেখানে টাইগার বোলাররা প্রোটিয়াদের ৬ উইকেটে ১১৩ রানে আটকে দিলেও হতাশ করেন ব্যাটাররা। ১০৯ রানে শেষ হয় টাইগারদের ইনিংস, ৪ রানের আক্ষেপে পুড়ে বাংলাদেশ। 

তবে এসব কিছুর ঊর্ধ্বে ম্যাচে আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। যা নিয়ে ম্যাচ শেষে ক্ষোভ প্রকাশ করে তাওহীদ হৃদয়। এছাড়া কথা বলেছেন তামিম ইকবাল, সঞ্জয় মাঞ্জরেকার, মরনে মরকেল ও রমিজ রাজা।


বিজ্ঞাপন


ম্যাচের ১৭তম ওভারের দ্বিতীয় বলে মাহমুদউল্লাহর সামনের প্যাডে আছড়ে পড়ে একটি বল। আউট দিয়ে দেন অনফিল্ড আম্পায়ার। ডিআরআস (ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম) নেন রিয়াদ। রিভিউয়ে দেখা যায় যে বলটা স্টাম্পে লাগছে না। এমন পরিস্থিতিতে অনফিল্ড আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত পালটে নেন তৃতীয় আম্পায়ার। 

কিন্তু অনফিল্ড আম্পায়ার আউট দিয়ে দেওয়ায় বলটা রিয়াদের প্যাডে লেগে বাউন্ডারিতে চলে গেলেও নিয়ম অনুযায়ী চার রান পায়নি বাংলাদেশ। যে চারটি রান বাংলাদেশ পেয়ে গেলে ১৯ তম ওভারেই সম্ভবত খেলা শেষ হয়ে যেত। শেষের দিকে যে চাপ তৈরি হয়েছিল, সেটাই হত না। আইসিসির যে আইন নিয়ে এত আলোচনা, সেই আইন কি বলছে? 

এমসিসির আইনের ২০.১.১.৩ ধারায় বলা হয়েছে, যে মুহূর্তে বলের সাপেক্ষে আউটের সিদ্ধান্ত আসবে, সেই মুহূর্ত থেকে এটি ডেডবল ঘোষণা করা হবে। এর মানে দাঁড়ায়, আম্পায়ার স্যাম নোগাস্কি- বার্টম্যানের আবেদনে আঙুল তোলার পর থেকেই সেটি ডেডবলই ছিল।

Sports_20240611_075558801


বিজ্ঞাপন


এছাড়া ক্রিকেটীয় আইনের ২০.২ ধারায় ডেড বল আইনে বলা আছে, ম্যাচে ডেড বল নির্ধারণের ক্ষমতা শুধুই আম্পায়ারের। বল শেষ পর্যন্ত মীমাংসা হয়েছে কি না, তা সিদ্ধান্ত নেবেন আম্পায়ার। অন্য আরেকটি ধারায় (২০.১.১.১) বলা হয়েছে, বল তখনই ডেড হবে যখন তা উইকেটরক্ষক কিংবা বোলারের হাতে জমা পড়বে। বোলিং প্রান্তের আম্পায়ার যখন বুঝতে পারবেন, ফিল্ডিং দল ও ব্যাটসম্যানদের খেলা থেমেছে, তখনই সেটা ডেড বল।

ম্যাচ শেষে ইএসপিএন ক্রিকইনফোর আলোচনাতেও স্থান পেয়েছে বিষয়টি। সেখানে বিষয়টি আলাপ করেছেন ভারতের সাবেক ক্রিকেটার সঞ্জয় মাঞ্জরেকার, বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল ও দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক ক্রিকেটার মরনে মরকেল।

শুরুতেই মাঞ্জরেকার বলেন, ‘এটা নিয়ে সমর্থকেরা অনেক কথা বলছেন। আমরাও এটা নিয়ে আলাপ করতে পারি। আম্পায়ার কি সবকিছু শেষ হয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারেন না? আম্পায়ার চাইলে বলটা বাউন্ডারি লাইন অতিক্রম করা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারেন এবং তারপর তার আঙুল তুলতে পারেন বা বলতে পারেন যে আউট হয়নি। এরপর সেটা আপনি রেকর্ড করলেন এবং রিভিউর পর যা হওয়ার তা হবে।’ 

মাঞ্জরেকারের সঙ্গে একমত পোষণ করে তামিম বলেন, ‘আমার মনে হয়, আপনার কাছে যখন সময় আছে, আপনি কয়েক সেকেন্ড অপেক্ষা করে দেখতে পারেন, বল কোথায় গেল। সেটা কি বাউন্ডারি হলো, নাকি হলো না! এরপর আপনি আপনার সিদ্ধান্ত জানান। যদি ব্যাটার আউট না হয়, আর বল যদি তার থাইপ্যাডে বা অন্য কোথাও লেগে বাউন্ডারির বাইরে চলে যায়, তবে সে ক্ষেত্রে রান দেওয়া উচিত। যদি সে আউট না হয় আর কি। এটাই আমি বিশ্বাস করি।’

এই ৪ রান ম্যাচের ভাগ্য পাল্টে দিতে পারতো মন্তব্য করে সাবেক টাইগার অধিনায়ক আরও বলেন, ‘এই ৪ রান বাংলাদেশের ভাগ্য বদলে দিতে পারত। এটা হতে পারত। আমি হয়তো সমর্থকদের মতো কথা বলছি। কিন্তু আপনি যদি ভাবেন, এই ৪ রান বাংলাদেশের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ধারাভাষ্যকক্ষেও সবাইকে এটা নিয়ে কথা বলতে শুনেছি। এটা এমন কিছু, যেখানে আইসিসি গুরুত্বের সঙ্গে মনোযোগ দিতে পারে। কারণ, এটা এমন কিছু নয় যে তাদের বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে হবে।’

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর