ফুটবল ইতিহাসের গ্র্যান্ড ট্যাপেস্ট্রিতে এমন বেশ কিছু মুহূর্ত আছে যা স্বপ্নজয়ের উল্লাস-উচ্ছ্বাসের এক অবিস্মরণীয় উদাহরণ হিসেবে বিশ্বব্যাপী ভক্তদের সম্মিলিত স্মৃতিতে প্রোথিত হয়ে আছে। ঠিক এক বছর আগে এমনই এক স্বপ্নজয়ের বাস্তবতায় ভেসেছিল গোটা ফুটবল বিশ্ব যে মুহূর্ত পৃথিবীর বুকে অগণিত মানুষের হৃদয়ে খুশির এক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল, যে রাতে ফুটবল জাদুকর লিওনেল মেসি ফিফা বিশ্বকাপের সোনালী সেই ট্রফি হাতে জয় যাত্রা সাজিয়েছিলেন।
গত বছরের এই দিনে কাতারের দোহায় চিরন্তন উল্লাসের এক উপলক্ষ তৈরি করেছিলেন মেসি, ৩৬ বছরের আক্ষেপ ঘুচিয়ে যিনি আর্জেন্টিনাকে এনে দিয়েছিলেন চির আকাঙ্ক্ষিত সেই শিরোপা, যে শিরোপা জয় করতে না পারার গ্লানিতে, আক্ষেপে তিন যুগ ধরে পুড়েছে আর্জেন্টাইন ফুটবলের সমর্থকরা।
বিজ্ঞাপন
নিজের ক্যারিয়ারে অসংখ্য অর্জনে নিজেকে অনন্য এক উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন মেসি। ক্লাব ক্যারিয়ারে সম্ভাব্য সব শিরোপা জয় করে প্রজন্মের শ্রেষ্ঠ ফুটবলারের তকমা অনেক আগেই জুটে গিয়েছিল তার। কিন্তু তবুও দিয়েগো ম্যারাডোনার উত্তরসূরি হিসেবে বিশ্বকাপের সেই সোনালি ট্রফি না ছুঁতে পারার বাস্তবতা তাকে এক ট্র্যাজিক হিরোতে রূপান্তরিত করেছিল। তবে ক্যারিয়ার সায়াহ্নে এসে ফুটবল জাদুকর নিজেকে ঠিকই পৌঁছে দিয়েছেন অবিসংবাদিত শ্রেষ্ঠত্বের আসনে।
২০২২ সালের কাতার বিশ্বকাপ আর্জেন্টিনা তথা মেসির জন্য যেন অর্জনের পসরা সাজিয়ে বসেছিল। আর স্বপ্নজয়ের যাত্রাও ছিল যেন কোনো রূপকথার রোমাঞ্চকর এক অধ্যায়। আসরের প্রথম ম্যাচেই অখ্যাত সৌদি আরবের বিপক্ষে হার! এরপর প্রত্যাবর্তনের কি দারুণ এক উদাহরণ। একে একে সব বাঁধা জয় করে অবশেষে হাতের নাগালে বাস্তবতা হয়ে ধরা দেয় আজন্ম লালিত সেই স্বপ্ন।
পুরোটা ক্যারিয়ার জুড়ে নিজের প্রতিভা আর দক্ষতা জাদুতে গোটা ফুটবল বিশ্বকে বুঁদ করে রেখেছিলেন মেসি। ফুটবল জাদুকরকেও তাই খালি হাতে ফেরাননি ফুটবল বিধাতা। ২০১৪ সালে শিরোপা ছোঁয়ার খুব কাছে গিয়েও যে না পাওয়ার আক্ষেপে পুড়েছিলেন তিনি, ২০২২ সালে কাতারের মরুর বুকে সে ট্রফিই যেন এসে ধরা দেয় তার কাছে।

