কদিন আগেই ভারতকে হারিয়ে ষষ্ঠ বারের মত ওয়ানডে বিশ্বকাপের শিরোপা ঘরে তুলেছে অস্ট্রেলিয়া। এবার নিজেদের ঘরের মাটিতে সাদা পোশাকের ক্রিকেট নিয়ে মাঠে ফিরছে অজিরা যেখানে প্রতিপক্ষ পাকিস্তান। তিন টেস্টের এই সিরিজের প্রথমটির জন্য ইতিমধ্যেই দল ঘোষণা করেছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। ১৪ সদস্যের এই দলে জায়গা পেয়েছেন ডেভিড ওয়ার্নার। দেশের হয়ে এটিই হতে যাচ্ছে অজি ওপেনারের শেষ টেস্ট সিরিজ।
এ বছরে অ্যাশেজ চলাকালীন সময়েই ওয়ার্নার জানিয়েছিলেন, পাকিস্তানের বিপক্ষে ঘরের মাটিতে টেস্ট সিরিজ দিয়েই সাদা পোশাকে নিজের ক্যারিয়ারের ইতি টানবেন তিনি। অবশেষে তাকে সেই সুযোগ দিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার নির্বাচক কমিটি। পার্থে প্রথম টেস্টের জন্য ঘোষিত দলে জায়গা পেয়েছেন তিনি। তবে ওয়ার্নারের এমন বিদায়ী সিরিজ খেলার সু্যোগ পাওয়াকে ভালো চোখে দেখছেন না তারই সাবেক সতীর্থ মিচেল জনসন।
বিজ্ঞাপন
ভারতের মাটিতে ওয়ানডে বিশ্বকাপটা ব্যাট হাতে দুর্দান্ত কেটেছে ওয়ার্নারের। তবে বেশ কয়েক বছর ধরেই টেস্ট ক্রিকেটে নিজেকে আর মেলে ধরতে পারছিলেন না তিনি। ২০১৯-২০ মৌসুমের পর থেকে সাদা পোশাকে তার গড় মাত্র ২৮ আর ২০২০ সালের পর পেয়েছেন মাত্র একটি সেঞ্চুরি।
ওদিকে ওয়ার্নারের যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে নিজেকে প্রস্তুত করেছেন ক্যামেরন ব্যাক্রফট। ঘরোয়া লিগে দুর্দান্ত খেলে জাতীয় দলের দরজায় কড়া নাড়ছেন তিনি। এছাড়াও আছেন মার্কাস হ্যারিস এবং ম্যাট রেনশও। ক্রিকেটের অভিজাত ফরম্যাটে যে আর চালিয়ে যেতে পারবেন না তা হয়তো বুঝেছিলেন ওয়ার্নার নিজেও।
বিজ্ঞাপন
এ কারণেই গত জুনে বলেছিলন, ‘টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল ও অ্যাশেজে ভালো করে যদি পাকিস্তান সিরিজে সুযোগ পাই, তাহলে সেখানেই টেস্ট থেকে সরে দাঁড়াব। আমি একদম পাকাপাকি বলতে পারি (এরপর) ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ খেলব না।’
এদিকে একই কারণে আসন্ন সিরিজে ওয়ার্নারকে দলে নেয়ার ক্ষেপেছেন জনসন। অস্ট্রেলীয় সংবাদমাধ্যম দ্যা ওয়েস্টার্ণ অস্ট্রেলিয়ায় লেখা এক কলামে সাবেক এই অজি গতি তারকা বলেন, ‘কেউ কি আমাকে বলতে পারবে কেন আমরা ওয়ার্নারের বিদায়ী সিরিজের প্রস্তুতি নিচ্ছি?’
জনসন আরও বলেন, ‘ফর্মে না থাকা একজন ওপেনার কবে দল থেকে সরে দাড়াবেন সেটা ঠিক করার সুযোগ পান কীভাবে? অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারির কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা একজন ক্রিকেটার কীভাবে নিজেই নায়কের বেশে বিদায় নেয়ার সুযোগ পায়?’
সবথেকে বড় কেলেঙ্কারি বলতে জনসন বুঝিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকায় বল টেম্পারিংয়ের কথা। তিনি মনে করেন ওয়ার্নার কখনোই এই ঘটনায় নিজের দায় পুরোপুরিভাবে স্বীকার করেনি। জনসন বলেন, ‘হ্যা, তার রেকর্ড মোটামুটি ভালো এবং অনেকেই তাকে আমাদের সবথেকে সেরা ওপেনারও বলে থাকেন।’
জনসন বলেন, ‘কিন্তু গত তিন বছরে টেস্ট ক্রিকেটে সে খুবই গড়পড়তা পারফর্ম্যান্স করেছে। তার ব্যাটিং গড় টেইল এন্ডার ব্যাটারদের গড়ের সমানই।’
২০০৯ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত সময়ে ওয়ার্নারের সতীর্থ ছিলেন জনসন। এছাড়াও ২০১৩-১৪ মৌসুমে ইংল্যান্ডকে অ্যাশেজে ৫-০ ব্যবধানে হোয়াইট ওয়াশ করার দলেও ছিলেন এ দুজন এবং বর্তমান প্রধান নির্বাচক জর্জ বেইলি। সেই সাথে তিনজনই ছিলেন ২০১৫ বিশ্বকাপজয়ী দলেও।

