বিশ্বকাপে শুরুটা হয়েছিলো স্বপ্নের। এরপরই দুঃস্বপ্নের শুরু বাংলাদেশের। জয় দিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরুর পর টানা দ্বিতীয় হারের মুখ দেখলো লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের কাছে ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে হেরেছে সাকিব আল হাসানের দল। এদিকে টানা দুই হারের পেছনে ব্যাটিং বিপর্যয়ের কারণ দেখছেন সাবেক তারকা ক্রিকেটাররা। আর ব্যাটারদের এই বিপর্যয়ের কারণ হিসেবে মিরপুরের মন্থর উইকেটকে দুষছেন তারা।
ভারতে চলমান আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপে চলছে রান উৎসব। এখন পর্যন্ত ৪০০-এর উপরেও স্কোর হয়েছে একবার। তিনশ’ পার হওয়া স্কোরও হয়েছে ৬ বার। আছে আরো কিছু বড় ইনিংস। তবে এসবের মাঝে যেন ব্যতিক্রম বাংলাদেশ। দুই ম্যাচে এখন পর্যন্ত পঞ্চাশ ওভার খেলতে পারেনি টাইগাররা। আর ওপেনিং বা ওয়ানডাউনের চিরচেনা রোগ তো আছেই। বাংলাদেশ ক্রিকেটে ব্যাটিং যেন বরাবরই দুশ্চিন্তার নাম। ২০০৩ বিশ্বকাপে ব্যাটারদের ব্যর্থতার কারণে কানাডার কাছেও হারতে হয়েছিল বাংলাদেশকে। চলতি বছর সেই পুরাতন রোগটাই যেন আবার চেপে বসেছে।
বিজ্ঞাপন
অন্যদিকে পরিসংখ্যানের পাতায় চোখ রাখলেই এমন কিছু স্পষ্ট হয়ে ধরা দিবে। ২০২৩ সালে এশিয়া কাপ, ঘরের মাঠে সিরিজ, ঘরের বাইরের সিরিজ মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ২০টি ওয়ানডে খেলেছে বাংলাদেশ। এরমাঝে বৃষ্টির কারণে বাংলাদেশ ব্যাট করতে পারেনি বা ২০০-এর নিচের টার্গেটে ব্যাট করেছে এমন ম্যাচ আছে ৩টি। বাকি ১৭ ম্যাচের মধ্যে বাংলাদেশ ২০০-এর নিচে স্কোর করেছে ৭ ম্যাচে। এর মধ্যে শেষ দশ ম্যাচেই ২০০ রানের নিচে অলআউট হয়েছে ৬ বার। সবমিলিয়ে পরিস্থিতি যে অত্যন্ত নাজুক, যা দিবালোকের মতোই প্রকাশ্য। আর এর পেছনে মিরপুরের বাজে উইকেট।
বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ভরাডুবি হারের পেছনে মিরপুরে উইকেটকে দোষ দিয়ে পাকিস্তান অলরাউন্ডার মালিক বলেন, ‘বাংলাদেশ যে সিরিজগুলো জিতেছে, সবকটিই ছিল লো স্কোরিং। তাদের স্পিনারদের পরিসংখ্যান দেখলে বিষয়টা নজরে আসে। এই ঘটনা কিন্তু আমাদের সঙ্গেও হয়েছিল। একসময় আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেটে শুধু পেস সহায়ক উইকেট বানানো হতো। তাতে ১৪০ এর বেশি গতিতে বোলিং করা পেসার আসা অনেকটাই কমে গিয়েছিল। এর ফলে স্পিনাররাও কম আসতে শুরু করে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা এমন। তাদের মিরপুর এমন একটা মাঠ যেখানে রান করা মোটেই সহজ নয়।’
গতকাল ইনিংসের প্রথম বলেই আউট হন লিটন। পাকিস্তান কিংবদন্তি ওয়াসিম আকরামও লিটনের আউট নিয়ে বলেন, ‘লিটন দাস অনেক দিন ধরে খেলছে। সে এখন আর তরুণ নয়। বুঝতে পারলাম, বলটা বাজে ছিল। ন্যাচারালি শটটা চলে এসেছে। তবে এটা ৫০ ওভারের সংস্করণ। ফাইন লেগ যদি পিছে থাকে, তাহলে সিঙ্গেল নাও। এসব কি লিটনকে আমাদের বলতে হবে?’
অন্যদিকে পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক মিসবাহ উল হক বাংলাদেশের ব্যাটিং সম্পর্কে সেই চিরচেনা কথাই বলেছেন, ‘দায়িত্ব নিতে হবে। ৩০-৪০ করলে আপনার দল জিতবে না। টপ অর্ডারের চারজনের থেকে সেঞ্চুরি আসতে হবে, সেটা হচ্ছে না। এটাই বাংলাদেশের সমস্যা।’

