সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

এবার মুখ খুললেন সাকিব, ছাড়বেন নেতৃত্বও!

স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১১:৩৪ পিএম

শেয়ার করুন:

এবার মুখ খুললেন সাকিব, ছাড়বেন নেতৃত্বও!
সাক্ষাৎকারের ভিডিও থেকে নেয়া ছবি- ইউটিউব

বিশ্বকাপ দল থেকে তামিম ইকবালকে বাদ দেওয়ার পর গুঞ্জন ওঠে এর পেছনে নেপথ্যে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছেন সাকিব আল হাসান। এরই মধ্যে ভিডিওবার্তায় নির্দিষ্ট কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ না করলেও বড় প্রশ্ন রেখেছেন তামিম ইকবাল। এবার এসব বিষয়ে নিয়ে মুখ খুললেন সাকিব।

সাকিব জানিয়েছেন এ সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না। তামিমকে বাদ দেওয়ার পেছনে তার কোন হাত নেই।


বিজ্ঞাপন


একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নানা প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। তামিমের বিশ্বকাপ খেলতে না যাওয়া অর্থাৎ স্কোয়াড থেকে বাদ পড়া নিয়েও উত্তর দেন সাকিব আল হাসান। তিনি বলেন, টিমের প্রয়োজনে যেকোনো জায়গায় যেকোনো পজিশনে খেলা উচিৎ।

সাক্ষাতকারে বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেন, 'আমি বিশ্বকাপের পর আর অধিনায়কত্ব করবো না। একদিনও না।'

সাকিব বলেছেন, দলের প্রয়োজনে যে কেউ যে কোনো জায়গায় খেলতে রাজি থাকা উচিত। ১৭ সেপ্টেম্বর তিনি পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছিলেন বলেও জানিয়েছেন বাংলাদেশের পোস্টার বয়।

তামিমের বিশ্বকাপে না থাকা প্রসঙ্গে সাকিব বলেন, ‘আমি অন্তত যখন আন্ডার-১৫ থেকে খেলা শুরু করেছি একটি জিনিস খুব ভালো করে দেখে আসছি যে প্লেয়ারটা ভালো করছে, যে দলের জন্য অবদান রাখছে এই প্লেয়ারকে বাংলাদেশ কখনই কোনোদিনই বাদ দেয়নি। সিম্পল একটা উদাহরণ দেই মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ভাই, তিনি এশিয়া কাপে ছিলেন না। হঠাৎ করে বিশ্বকাপ দলে আসলেন। একটা সিরিজ খেললেন। হয়তো ওইভাবে অবদান রাখতে পারেননি যতটা প্রয়োজন ছিল। আমি মনে করি তার আরও সামর্থ্য আছে। আরও ভালো করা উচিত ছিল। যে দুটি ম্যাচ খেলেছে দুই ম্যাচেই। ’


বিজ্ঞাপন


‘উনার জন্য সেই সুযোগটা ছিল এবং ভালো মঞ্চ ছিল আরও ভালো কিছু করার। তার যে ডেডিকেশন ছিল তার দলের প্রতি যে অবদান ছিল। দলের হয়ে খেলার যে ইচ্ছে ছিল সবকিছু সবাই দেখতে পেরেছে। আমার তো দায়িত্ব না পুরো দলটা নির্বাচন করার। এমনটা হলে এশিয়া কাপের একদিন পরেই এনাউন্স করে দল দিয়ে দিতে পারতাম। এটা অনেক প্রসেসের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। অনেক বিষয় চিন্তা করতে হয়। অনেক কিছু চিন্তা করে দলটা গড়তে হয়। ’

তামিমম বিশ্বকাপ থেকে বাদ পড়া নিয়ে অভিযোগ তুলেছেন, প্রথম ম্যাচের একাদশে তাকে না রাখার কথা জানিয়েছিলেন বোর্ডের এক কর্মকর্তা। সেটি পছন্দ হয়নি তার। এ নিয়ে উত্তেজিত হয়েছিলেন বলেও জানান তামিম। সাকিবের অবশ্য দাবি,  তামিমকে প্রথম ম্যাচে না রাখার কোনো আলোচনাই হয়নি।  

তিনি বলেন, ‘এটা নিয়ে (তামিমকে আফগানিস্তানের বিপক্ষে না খেলানোর) আমার কোনো আলোচনাই হয়নি। এমন প্রশ্ন কোথা থেকে এসেছে আমি জানি না। যদি এমন কেউ বলে থাকে আমি নিশ্চিত এমন কেউই বলেছে যে এই দায়িত্বে আছে এটা আগে থেকেই আলাপ করে রাখছিল যেন জানা থাকলে দুই পক্ষের জন্যই ভালো হয়। এরকম কিছু বলাতে খারাপ কিছু আছে আমি মনে করি না। ’

‘এটা তো কেউ কারো খারাপের জন্য বলবে না আমি নিশ্চিত। যদি কেউ বলে থাকে দলের কথা চিন্তা করেই বলেছে যে এরকম যদি আমরা কম্বিনেশন করি, এরকম অনেক কিছুই হয় ম্যাচকে কেন্দ্র করে। আপনি এরকম কম্বিনেশন বানালে কি হতো, ওরকম কম্বিনেশন বানালে কি হয়। আমার মনে হয় না এরকম আলোচনা কোনো দোষের আছে। ’

ব্যাটিং অর্ডারে তামিমের নিচে খেলা প্রসঙ্গে সাকিব বলেন, ‘এরকম প্রস্তাব দিলে কি কোনো দোষের কিছু আছে নাকি এরকম প্রস্তাবই দেয়া যাবে না। দল আগে নাকি কোনো ব্যক্তি আগে? রোহিত শর্মা একটা প্লেয়ার ওপেনিং থেকে নাম্বার সেভেন পর্যন্ত খেলেছে। সে ১০ হাজার রান করে ফেলেছে। ও যদি তিন-চারে খেলে বা ব্যাটিং অর্ডারে ব্যাটিংয়ে নামে তাহলে কী খুব বেশি প্রবলেম হয়? এটা আসলে আমার কাছে মনে হয় বাচ্চা মানুষের মতো... আমার ব্যাট আমিই খেলবো... আর কেউ খেলতে পারবে না। দলের প্রয়োজনে যে কারোর যে কোনো জায়গায় খেলতে রাজি থাকা উচিত। দল সবার আগে। আপনি একশো করলেন দুইশো করলেন এটা কোনো পার্থক্য গড়ে দেয় না। ’

এর আগে বুধবার বিকেলে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক ভিডিও বার্তায় বিশ্বকাপে দল থেকে এক প্রকার বাধ্য হয়েই নিজের নাম সরিয়ে নেওয়ার কথা জানান তামিম।

এমনকি গত ৩-৪ মাস ধরে একটি মহল ইচ্ছাকৃতভাবে তার ওপর সবকিছু চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

ভিডিও বার্তায় তামিম জানান, দলের ফিজিও রিপোর্ট থেকে শুরু করে কোথাও উল্লেখ করা হয়নি ৫ ম্যাচ খেলতে পারবেন তিনি। অথচ, মিডিয়াতে কে বা কারা এই বার্তা ছড়িয়েছে। জানান, শরীরে ব্যথা থাকলেও পুরোপুরি ফিট ছিলেন বিশ্বকাপের প্রতিটি ম্যাচ খেলার জন্য।

ফিজিও রিপোর্ট পাবার দুদিন পর তামিমের কাছে বোর্ডের টপ লেভেল থেকে ফোনকল আসে। সেই বোর্ড কর্মকর্তা ফোনে তামিমকে বলেন, বিশ্বকাপে গেলেও আফগানিস্তানের সাথে প্রথম ম্যাচ না খেলার জন্য। আর খেললেও, ব্যাট করতে হবে লোয়ার অর্ডারে।

তামিম ইকবাল অবাক হন আফগানিস্তানের সাথে লোয়ার অর্ডারে ব্যাটিং করার পরিকল্পনার কথা শুনে। বোর্ডের টপ লেভেলের সেই কর্মকর্তার কথা নিতে পারেননি তিনি। তাই কিছুটা উত্তেজিতও হয়ে যান তামিম।

তামিম মনে করেন, তাকে জোর করে প্রতি পদে পদে বাধা দেওয়া হচ্ছে। এমন ভাবনা থেকেই বোর্ডের টপ লেভেলের সেই কর্মকর্তাকে জানান, বোর্ডের এমন পরিকল্পনা থাকলে তাকে বিশ্বকাপে পাঠানোর দরকার নেই। বলেন, এমন নোংরামির সাথে থাকতে চান না তিনি।

একে

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর