শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪, ঢাকা

সওয়াবের ভাণ্ডার যে আমলে

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫ এপ্রিল ২০২২, ০২:৪৪ পিএম

শেয়ার করুন:

সওয়াবের ভাণ্ডার যে আমলে

পবিত্র কোরআন মানবজাতির পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান। আবার এর তেলাওয়াতের রয়েছে অনেক সওয়াব ও ফজিলত। রাতে কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে সওয়াবের ভাণ্ডার লাভকারী হিসেবে চিহ্নিত হন অনেকে। অবশ্য সেই তেলাওয়াতের একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ আছে। হাদিসে এসেছে, আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন—

‘যে ব্যক্তি রাতে ১০টি আয়াত তেলাওয়াত করে, সে গাফেল বলে গণ্য হবে না, আর যে ব্যক্তি একশ আয়াত তেলাওয়াত করে, সে আনুগত্যশীল বলে গণ্য হবে, আর যে ব্যক্তি এক হাজার আয়াত তেলাওয়াত করে, তার জন্য সওয়াবের ভাণ্ডার লেখা হবে।’ (আবু দাউদ: ১৪০০)

অন্য হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি রাতে ১০০ আয়াত তেলাওয়াত করবে, তাকে (আল্লাহর) আনুগত্যশীল বান্দাদের মাঝে লিপিবদ্ধ করা হবে।’ (আলবানি, সিলসিলা সহিহাহ: ৬৪৩; আহমদ, আল-মুসনাদ: ১৬৯৫৮; হাদিসটি সহিহ)

এখানে লক্ষণীয়, হাদিসটির কোথাও রমজান শব্দটির উল্লেখ নেই। তার মানে, রমজান ছাড়াই এক হাজার আয়াত তেলাওয়াতকারীর আমলনামায় সওয়াবের ভাণ্ডার লেখা হয়। তাহলে রমজানে সেই আমলের কেমন সওয়াব অর্জন হবে সেটা নিচের হাদিস থেকে বোঝার চেষ্টা করি।

‘রমজান মাসে যে ব্যক্তি একটি নফল আদায় করল, সে যেন অন্য মাসে একটি ফরজ আদায় করল। আর যে এ মাসে একটি ফরজ আদায় করল, সে যেন অন্য মাসে ৭০টি ফরজ আদায় করল। (শুআবুল ঈমান: ৩/৩০৫-৩০৬)

অর্থাৎ এ মাসে নফল আদায় করলে অন্য মাসের ফরজের মতো সওয়াব হয়। আর এ মাসের এক ফরজে অন্য মাসের ৭০ ফরজের সমান সওয়াব পাওয়া যায়। এখন দেখার বিষয় হলো- কোরআন তেলাওয়াতের যে ভাণ্ডারের কথা বর্ণিত হয়েছে, তা যদি রমজানে আমল করা হয়, তাহলে কমপক্ষে তো ৭০ গুণ হবেই। এরপরও আল্লাহ ইচ্ছা করলে তা আরও বহুগুণ বাড়িয়ে দিতে পারেন।


বিজ্ঞাপন


কোরআন তেলাওয়াত আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের একটি বিশেষ মাধ্যম। রাসুল (স.) পবিত্র রমজানে কোরআন পাঠের প্রতি অধিক গুরুত্ব দিতেন। বিভিন্ন হাদিসের বর্ণনামতে, জিবরাইল (আ.) রমজানের প্রতি রাতে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতেন এবং কোরআন শিক্ষা দিতেন। (নাসায়ি: ২০৯৫)

মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতকারীদের জন্য জান্নাতে রেখেছেন বিশেষ সম্মাননা। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, (কেয়ামতে) কোরআন অধ্যয়নকারীকে বলা হবে, কোরআন পাঠ করতে করতে ওপরে উঠতে থাকো। তুমি দুনিয়াতে যেভাবে ধীরেসুস্থে পাঠ করতে সেভাবে পাঠ করো। কেননা তোমার তেলাওয়াতের শেষ আয়াতেই (জান্নাতে) তোমার বাসস্থান হবে। (আবু দাউদ: ১৪৬৪)

তামিম আদ্দারি (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, যে ব্যক্তি রাতে একশ আয়াত তেলাওয়াত করবে, সে সম্পূর্ণ রাত জাগরণকারী হিসেবে গণ্য হবে।’ (দারেমি: ১৬৯৫৮)

অন্য হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি তাহাজ্জুদের নামাজে ১০টি আয়াত তেলাওয়াত করে, তার জন্য এক কিন্তার সওয়াব, আর এক কিন্তার সওয়াব হলো পৃথিবী এবং পৃথিবীতে যা কিছু আছে তা থেকে উত্তম, কেয়ামতের দিন তোমার রব বলবে, কোরআনের প্রতিটি আয়াতের বদলে এক স্তর উপরে উঠো, এভাবে সর্বশেষ আয়াত তেলাওয়াত করা পর্যন্ত উপরে উঠতে থাকবে, আল্লাহ তায়ালা তাঁর বান্দাকে বলবেন, আমার নেয়ামত গ্রহণ করার জন্য তোমার হাত উন্মুক্ত করো, বান্দা হাত উন্মুক্ত করে বলবে, হে আমার রব! তুমি তোমার দান সম্পর্কে ভালভাবে জানো, আল্লাহ তাআলা বলবেন, ‘এক হাতে স্থায়ী নেয়ামতসমূহ গ্রহণ করো আর অপর হাতে অন্যান্য নিয়ামতসমূহ গ্রহণ করো।’ (মুজামুল কাবির: ১২৫৩)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে পবিত্র রমজান মাসে বেশি বেশি কোরআন তেলাওয়াত করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর