মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

রক্ত দিলে রোজা ভেঙে যায়?

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫ এপ্রিল ২০২২, ১২:৫৩ পিএম

শেয়ার করুন:

রক্ত দিলে রোজা ভেঙে যায়?

রোজা অবস্থায় কাউকে রক্ত দিলে রোজা ভাঙবে না। কারণ, স্বাভাবিক প্রবেশ পথ দিয়ে শরীরে কোনো কিছু প্রবেশ করলেই রোজা ভাঙে। শরীর থেকে কিছু বের হলে ভাঙে না। তাই রক্ত দিলে রোজা ভঙ্গ হবে না।

হজরত ইকরামা (রা.) বলেন, নবী কারিম (স.) হজের জন্য ইহরাম বাঁধা অবস্থায় শরীর থেকে শিঙ্গার মাধ্যমে রক্ত বের করেছেন এবং রোজা অবস্থায়ও শরীর থেকে শিঙ্গার মাধ্যমে রক্ত বের করেছেন। (বুখারি: ১৯৩৮; মুসলিম: ১১০৬; আবু দাউদ: ২৩৭২)

তাই রোজা রেখে পরীক্ষার জন্য কিংবা কোনো রোগীকে দেওয়ার জন্য রক্ত দিলে, রোজার ক্ষতি হবে না। কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে— কেউ যদি শারীরিকভাবে এমন দুর্বল হয় যে, রক্ত দিলে সে রোজা রাখার শক্তি হারিয়ে ফেলবে; তাহলে তার জন্য রক্ত দেওয়া মাকরুহ। (আহসানুল ফতোয়া: ০৪/৪৩৫)

অন্য হাদিসে সাবিত আল-বুনানি (রহ.) বলেন, আনাস ইবনে মালিক (রা.)-কে জিজ্ঞেস করা হলো যে, রোজাদারের জন্য শরীর থেকে শিঙ্গা লাগিয়ে রক্ত বের করাকে কি আপনি অপছন্দ করেন? জবাবে তিনি বলেন- না, আমি অপছন্দ করি না। তবে দুর্বল হয়ে পড়ার ভয় থাকলে ভিন্ন কথা। (বুখারি: ১/২৬০; আহসানুল ফতোয়া: ৪/৪৩৫)

তাছাড়া রক্ত দেওয়ার মাধ্যমে মানুষকে অনুগ্রহ করা হয়। আর অনুগ্রহ করা ইসলামে একটি বড় নেক আমল। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘আর ব্যয় কর আল্লাহর পথে, তবে নিজের জীবনকে ধ্বংসের সম্মুখীন করো না। আর মানুষের প্রতি অনুগ্রহ করো। আল্লাহ অনুগ্রহকারীদেরকে ভালবাসেন।’ (সুরা বাকারা: ১৯৫)

সেটি যদি হয় রমজান মাসে, তাহলে এর সওয়াব নিশ্চয়ই হাদিসের ভাষ্যমতে অনেক গুণ বৃদ্ধি করা হবে। এছাড়াও রক্তদান অন্যতম বড় সেবা। এতে রোগীর জান রক্ষা হয়। আর কারো জান রক্ষা করা মানে পুরো মানবজাতিকে রক্ষা করা। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে—


বিজ্ঞাপন


’যে ব্যক্তি কোনো মানুষের জীবন রক্ষা করল, সে যেন পুরো মানবজাতিকে রক্ষা করল।’ (সুরা মায়েদা: ৩২)

অতএব, রমজান মাসে মানবসেবার নিয়তে রক্ত দিতে প্রস্তুত থাকা উচিত। এতে রোজা রাখার সওয়াব লাভের পাশাপাশি মানবসেবার সওয়াবও লাভ হবে ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে এই বরকতের মাসে মানবসেবা করার তাওফিক দান করুন।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর