দোয়া মুমিনের হাতিয়ার। দোয়া কবুলের মাধ্যমে অসম্ভবকেও সম্ভব করে দেন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা। ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা আমার কাছে দোয়া করো; আমি তোমাদের দোয়া কবুল করব’(সূরা মুমিন: ৬০)। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘দোয়া ছাড়া আর কিছুই আল্লাহর সিদ্ধান্তকে বদলাতে পারে না।’ (তিরমিজি: ২১৩৯)
দোয়া কবুলের জন্য দোয়ার আগে দরুদ পড়তে বলেছেন প্রিয়নবী (স.)। ফাজালা ইবনে উবাইদ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) এক লোককে নামাজে প্রার্থনা করতে শুনলেন। সে কিন্তু তাতে আল্লাহর প্রশংসা করেনি এবং নবী কারিম (স.)-এর ওপর দরুদও পড়েনি। এটা দেখে রাসুলুল্লাহ (স.) বললেন, ‘লোকটি তাড়াহুড়ো করল। অতঃপর তিনি তাকে ডাকলেন ও তাকে অথবা অন্য কাউকে বললেন, যখন কেউ দোয়া করবে, তখন সে যেন তার পবিত্র প্রতিপালকের প্রশংসা বর্ণনাযোগে ও আমার প্রতি দরুদ ও সালাম পেশ করে দোয়া আরম্ভ করে, তারপর যা ইচ্ছা (যথারীতি) প্রার্থনা করে।’ (সুনানে আবু দাউদ: ১৪৮১; তিরমিজি: ৩৪৭৬)
বিজ্ঞাপন
আরেক হাদিসে এসেছে, ‘নবী (স.)-এর ওপর দরুদ না পড়া পর্যন্ত যেকোনো দোয়া আটকে থাকে।’ (আল-মুজাম আল-আওসাত: ১/২২০), আলবানি ‘সহিহুল জামে’ গ্রন্থে (৪৩৯৯) হাদিসটিকে সহিহ আখ্যায়িত করেছেন)
এমনকি দোয়ার শুরু ও শেষে এবং মাঝখানেও দরুদ পড়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন আলেমরা। এ বিষয়ে আবু সুলায়মান আদ-দারানি সুন্দর একটি কথা বলেছেন যে ‘নবীর প্রতি দরুদ এমনিতেই কবুল হয়। আর আল্লাহ কোনো দোয়ার শুরু এবং শেষ অংশ কবুল করবেন, মাঝখানের অংশ প্রত্যাখ্যান করবেন, এমনটি হতে পারে না।’ তাই কবুলের জন্য দোয়ার আগে ও পরে দরুদ পড়তে যেন আমরা ভুল না করি।
দরুদের প্রতিদান কানায় কানায় পূর্ণ। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, যে চায় আমাদের ওপর অর্থাৎ আহলে বাইতের ওপর দরুদ পাঠের সময় তাকে পাত্র ভরে দেওয়া হোক, সে যেন এভাবে দরুদ পড়ে- اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ النَّبِيِّ وَأَزْوَاجِهِ أُمَّهَاتِ الْمُؤْمِنِينَ وَذُرِّيَّتِهِ وَأَهْلِ بَيْتِهِ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ ‘আল্লাহুম্মা সাল্লে আলা মুহাম্মাদিন্নাবিয়্যি ওয়া আজওয়াজিহি উম্মাহাতিল মু’মিনীনা ওয়াজুররিয়্যাতিহি ওয়া আহলে বাইতিহি কামা সাল্লাইতা আলা আলে ইবরাহীমা ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আপনি নবী মুহাম্মদ, তাঁর স্ত্রী উম্মাহাতিল মুমিনিন, তাঁর সন্তানাদি ও আহলে বাইতের ওপর রহমত বর্ষণ করুন যেমনি রহমত বর্ষণ করেছেন ইবরাহিমের ওপর। নিশ্চয়ই আপনি প্রশংসিত ও মহান।’ (আবু দাউদ: ৯৮২)
আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে দোয়ার আগে আল্লাহর প্রশংসার পাশাপাশি নবীজির প্রতি দরুদ পড়ার তাওফিক দান করুন। হাদিসের ওপর যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
বিজ্ঞাপন
দোয়া কবুলের দরুদ শরীফ, দরুদ শরীফ পড়ার নিয়ম, সবগুলো দরুদ শরীফ বাংলা, সবগুলো দরুদ শরীফ, ইস্তেগফার দরুদ শরীফ, দরুদ শরীফ বাংলা উচ্চারণ, দরুদ শরীফ পড়ার ফজিলত, ছোট দরুদ শরীফ

