মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

জিলকদ মাসের মাহাত্ম্য ও করণীয়

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ২২ মে ২০২৩, ০১:২৪ পিএম

শেয়ার করুন:

জিলকদ মাসের মাহাত্ম্য ও করণীয়

হিজরি সনের ১১তম মাস জিলকদ। এই মাস হজের তিনমাসের (শাওয়াল, জিলকদ, জিলহজ) একটি। জিলকদে (প্রতিদিনের স্বাভাবিক ইবাদত ছাড়া) বিশেষ কোনো ইবাদত নেই এবং এই মৌসুমে প্রাচীন আরবরা তাদের বাণিজ্য থেকে ফিরে আসত, যুদ্ধ বিরতিতে চলে যেত—ইত্যাদি কারণে মাসটি বিশ্রামের মাস হিসেবেও পরিচিত।

তবে, জিলকদ মাসের পর রয়েছে অতিগুরুত্বপূর্ণ জিলহজ মাস। এটি হজ ও কোরবানির মাস। তাই ইসলামে হজ-কোরবানির প্রস্তুতির জন্য এই সময়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও ঐতিহাসিক কিছু কারণে জিলকদের আলাদা মাহাত্ম্য রয়েছে।


বিজ্ঞাপন


জিলকদ মাসের গুরুত্ব
ইসলামের ইতিহাসে বিভিন্ন কারণে এই মাস অনেক গুরুত্বপূর্ণ। প্রিয়নবী (স.) জীবনে যে কয়টি ওমরা করেছেন তার সবকটি ছিল জিলকদ মাসে। এ মাসেই সংঘটিত হয়েছিল হুদায়বিয়ার সন্ধি ও বাইয়াতে রিদওয়ান। নবম হিজরিতে জীবনে একবারের জন্য মুসলমানদের ওপর হজ ফরজ হয়েছিল জিলকদ মাসেই। এই মাসে হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর জন্ম হয়েছে। পবিত্র কাবা শরিফ পৃথিবীতে প্রথম ভিত্তি স্থাপিত হয় বলে জানা যায়। সপ্তম হিজরির জিলকদ মাসে রাসুলুল্লাহ (স.) প্রথম মদিনা থেকে মক্কায় সাহাবায়ে কেরামদের নিয়ে ওমরা পালন করেন। এরকম আরও কিছু বিশেষ ঘটনা এ মাসকে তাৎপর্যমণ্ডিত করেছে।

জিলকদ মাসে করণীয়
জিলকদ মাসের সঙ্গে সম্পৃক্ত বিশেষ কোনো আমল না থাকলেও অন্যান্য আমল রয়েছে এবং এসব আমল গুরুত্বের সঙ্গে পালন করা মুমিনের কর্তব্য। 
অন্যান্য চান্দ্রমাসের মতো এ মাসেরও ১৩, ১৪ এবং ১৫ তারিখের রোজা (আইয়ামে বিজ) রাখা যায় এবং তা অত্যন্ত ফজিলতের। 
সাপ্তাহিক সোম ও বৃহস্পতিবারের রোজা। 
অন্যান্য মাসের সাধারণ নফল নামাজ, তেলাওয়াত, জিকির-আজকার, তসবিহ-তাহলিল ইত্যাদি পাঠ করা যায়। 
বেশি বেশি কোরআন তেলাওয়াত করা। 
দান-খয়রাত বেশি বেশি করা ইত্যাদি জিলকদ মাসে করা যায় এবং এর অনেক সওয়াব রয়েছে। 
জিলহজ মাসের ৯টি সুন্নত রোজা ও মহরম মাসের ১০টি রোজার প্রস্তুতি হিসেবে এই মাসে আরও কিছু নফল রোজা রাখা যায়। নফল রোজার ফজিলত সম্পর্কে হাদিসে এসেছে, রাসুল (স.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য একদিন রোজা রাখবে, আল্লাহ তাআলা জাহান্নামকে তার থেকে ১০০ বছরের দূরত্বে সরিয়ে রাখবেন। (আস সিলসিলাতুস সহিহাহ: ২৫৬৫, খণ্ড-৬) আরও ইরশাদ হয়েছে, যে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য একদিন রোজা রাখবে, আল্লাহ তাআলা তার এবং জাহান্নামের মাঝে আসমান ও জমিনের দূরত্ব সমপরিমাণ খন্দক তৈরি করে দেবেন। (আস সিলসিলাতুস সহিহাহ: ৫৬৩, খণ্ড-২)

আর যাদের সামর্থ্য ও সুযোগ রয়েছে অর্থাৎ যাদের ওপর হজ ফরজ তাদের হজের প্রস্তুতি গ্রহণ করা উচিত। আবার যারা হজ করেন না, তাদের রয়েছে কোরবানির আমল। জিলহজ মাসের শুরুর ১০ দিনের ফজিলত ও গুরুত্ব অসামান্য। হাদিস শরিফে জিলহজ মাসের এই ১০টি দিনের ফজিলত বর্ণিত হয়েছে এভাবে-রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেন, ‘এমন কোনো দিন নেই, যে দিনের নেক আমল আল্লাহর কাছে জিলহজ মাসের এই ১০  দিনের নেক আমলের চেয়ে বেশি প্রিয়’ (তিরমিজি: ৭৫৭)

আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে জিলকদ মাসে নফল রোজাসহ মাসনুন আমলগুলো করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর