সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

মন খারাপের সময় নবী-রাসুলরা যা করতেন

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩ মে ২০২৩, ০২:১০ পিএম

শেয়ার করুন:

মন খারাপের সময় নবী-রাসুলরা যা করতেন

মানুষের মন সবসময় ভালো থাকে না। বিভিন্ন কারণে মন খারাপ হতে পারে। যেমন আর্থিক দুরবস্থা, বিপদ-মসিবত, আত্মীয় স্বজনের অসুস্থতা ইত্যাদি কারণে মন বিষণ্ণ হওয়া স্বাভাবিক। ঘনিষ্ঠ বন্ধু বা রক্তসম্পর্কীয় কেউ প্রতারণা করলে মনে এমন আঘাত লাগে যে সহ্য করাই কঠিন হয়ে পড়ে। এমনসব অবস্থায় ইসলামের শিক্ষা হলো- ভেঙে পড়া যাবে না। কারণ পৃথিবীটাই আসলে সুখের জায়গা নয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই আমি মানুষকে কষ্টনির্ভররূপে সৃষ্টি করেছি।’ (সুরা বালাদ: ৪)

আমাদের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা সবকিছুর নিয়ন্ত্রক মহান আল্লাহ। তিনি বান্দাকে কখনও কষ্ট দিয়ে পরীক্ষা করেন। আবার মুহূর্তের মধ্যে ক্রন্দনকারীর মুখে হাসি ফোটে তাঁরই ইচ্ছায়। সুতরাং মুমিন কখনও দুঃখের দিনে আশাহত হতে পারে না, তেমনি সুখের সময় গা ভাসিয়ে দিতে পারে না। আসুন জেনে নিই- দুঃখের সময় নবী-রাসুলগণ কী করতেন।


বিজ্ঞাপন


১) পরিবার ও সন্তানকে সৎপথে আনার সব চেষ্টা ব্যর্থ হলে হতাশ হবেন না। চেষ্টা চালিয়ে যান। মনে রাখবেন, নুহ (আ.) সাড়ে ৯০০ বছর দাওয়াত দিয়ে মাত্র ৮০ জনকে হেদায়েতের পথে আনতে পেরেছিলেন। এ কারণে তাঁকে তিরস্কার করা হবে না। বরং তিনি আল্লাহর কাছে প্রতিদান পাবেন।

২) মা-বাবা থেকে কষ্ট পেলে মন খারাপ করবেন না। ইবরাহিম (আ.) নিজ বাবার দ্বারাই আগুনে নিক্ষিপ্ত হয়েছিলেন।

৩) আপনার বিরুদ্ধে অপবাদ ও গুজব রটলে ভেঙে পড়বেন না। আয়েশা (রা.)-এর বিরুদ্ধেও অপবাদ আরোপ করা হয়েছিল। আল্লাহ তাঁকে হেফাজত করেছেন।

৪) যখন আপনি নির্জন ও একাকীত্বে ভোগেন, ভেঙে পড়বেন না। আদম (আ.)-কে, প্রথমে একাকী সঙ্গীবিহীন সৃষ্টি করা হয়েছিল। অথচ তিনিই এ পৃথিবীকে আবাদ করেছেন।


বিজ্ঞাপন


৫) আপনি অবরুদ্ধ, ঘর থেকে বের হতে পারছেন না। মন ভীষণ খারাপ? কত দিন ধরে? তিন মাস? চার মাস? এক বছর? আপনি কি জানেন আমাদের প্রিয়নবী (স.) তিন বছর পর্যন্ত শুআবে আবু তালেবে কাফেরদের দ্বারা অবরুদ্ধ-বেষ্টিত ছিলেন। একসময় খাদ্যের সংকট দেখা দেয়। এমনও হয়েছে, তিনি ক্ষুধার তাড়নায় গাছের পাতা খেয়েছেন। আপনার দুঃখ-কষ্ট কি এর চেয়েও বেশি?

৬) যখন রক্তসম্পর্কীয় কেউ আপনার সঙ্গে প্রতারণা করে, ভেঙে পড়বেন না। মনে রাখবেন, ইউসুফ (আ.) নিজ ভাইদের দ্বারা প্রতারিত ও গভীর কূপে নিক্ষিপ্ত হয়েও জীবনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন।

৭) ঘোর বিপদে চারদিকে অন্ধকার দেখলেও হতাশ হবেন না। ইউনুস (আ.) সাগরে মাছের পেটের অন্ধকার প্রকোষ্ঠ থেকেও উদ্ধার হয়েছিলেন।

৮) তীব্র অসুস্থতায় হতাশ হবেন না। আইয়ুব (আ.) আপনার চেয়ে হাজার গুণ বেশি অসুস্থ ছিলেন। পরে তিনি সুস্থ হয়েছেন।

৯)   মানুষ আপনাকে নিয়ে বিদ্রূপ করলে ভেঙে পড়বেন না। আমাদের নবীসহ যুগে যুগে সব নবীকে নিয়ে অজ্ঞ ও অবিশ্বাসীরা ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ করেছিল, কিন্তু পরিশেষে নবীরাই সফল হয়েছেন।

১০) একের পর এক বিপদে হতাশ হবেন না। আল্লাহ তাঁর প্রিয় বান্দাদের বেশি বেশি পরীক্ষায় ফেলেন। নবী-রাসুলদের তিনি সর্বাধিক পরীক্ষা করেছেন। পরিশেষে তাঁদের উদ্ধার করেছিলেন।

কাজেই আসুন, আমরা আল্লাহমুখী হই, ইনশাআল্লাহ, সব দুঃখ মুছে যাবে। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে নবী-রাসুলদের জীবনী থেকে ধৈর্য ও আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুলের শিক্ষা নেওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর