নবীজির প্রিয় ফল জয়তুন

জয়তুন পবিত্র কোরআনে বর্ণিত ফলগুলোর অন্যতম। সুরা ত্বিনের প্রথম আয়াতে মহান আল্লাহ এই ফলের কসম খেয়েছেন। এই ফলের গাছকে আখ্যা দিয়েছেন মুবারক গাছ হিসেবে। ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ আসমানসমূহ ও জমিনের নুর। তাঁর নুরের উপমা একটি দীপাধারের মতো। তাতে রয়েছে একটি প্রদীপ, প্রদীপটি রয়েছে একটি চিমনির মধ্যে। চিমনিটি উজ্জ্বল তারকার মতোই। প্রদীপটি বরকতময় জয়তুন গাছের তেল দ্বারা জ্বালানো হয়, যা পূর্ব দিকেরও নয় এবং পশ্চিম দিকেরও নয়। এর তেল যেন আলো বিকিরণ করে, যদিও তাতে আগুন স্পর্শ না করে..।’ (সুরা নুর: ২৪)

প্রিয়নবী (স.)-এর পছন্দের ফলগুলোর একটি ছিল জয়তুন। এর তেলও শরীরের জন্য বেশ উপকারী। রাসুলুল্লাহ (স.) তা নিজে ব্যবহার করতেন এবং সাহাবায়ে কেরামকেও ব্যবহার করার তাগিদ দিতেন। ওমর ইবনে খাত্তাব (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা (জয়তুনের) তেল খাও এবং তা শরীরে মালিশ করো। কেননা এটি বরকত ও প্রাচুর্যময় গাছের তেল। (তিরমিজি: ১৮৫১)

মহানবী (স.) যে ধরনের জয়তুন পছন্দ করতেন, সেগুলো আমাদের দেশের জলপাইয়ের মতো নয়। সেগুলো আরেকটু ছোট হয়। দেখতে কালো। একসঙ্গে অনেকগুলো খাওয়া যায়। তবে পরিবেশগত কারণে আমাদের দেশের জলপাই আরবের জলপাইয়ের সঙ্গে হুবহু না মিললেও ঔষধি গুণে কিছুটা মিল পাওয়া যায়।

জয়তুনের বৈজ্ঞানিক নাম Olea europaea। এটি পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের উপকূলীয় এলাকা বিশেষ করে সিরিয়া, লেবানন, তুরস্কের সামুদ্রিক অঞ্চল, ইরানের উত্তরাঞ্চল তথা কাস্পিয়ান সাগরের দক্ষিণে ভাল জন্মে। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ যে জয়তুনের প্রশংসা করেছেন, তার জন্ম সিনাই পাহাড়ে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘আর এক বৃক্ষ যা সিনাই পাহাড় হতে উদ্গত হয়, যা আহারকারীদের জন্য তেল ও তরকারি উৎপন্ন করে।’ (সুরা মুমিনুন: ২০)

তাফসিরবিদরা এই আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন, এখানে জয়তুনের কথা বলা হয়েছে। (তাফসিরে তাবারি)