ইসলামের একটি সৌন্দর্য হলো- অনিচ্ছাকৃত কোনো বিষয়ই দোষণীয় নয়। একইরকমভাবে অসুস্থতা ও জরুরতের মতো বিষয়গুলোতেও ইসলাম বাধ্য-বাধকতা আরোপ করে না। সে হিসেবে অনিচ্ছাকৃত বমি হলে রোজা ভঙ্গ হয় না, মাকরুহও হয় না। অনিচ্ছাসত্ত্বে কিছু বমি পেটের ভেতরে ফিরে গেলেও রোজা নষ্ট হবে না।
এমনকি যদি মুখভরে বমি হয়, অর্থাৎ বমির পরিমাণ অনেক বেশি হয়, তাতেও রোজার কোনো ক্ষতি হয় না। (দেখুন, আল-মুগনী: ৪/৩৬৮)
ইসলামের প্রত্যেকটি বিধান সহজ ও সুন্দর। অতিরিক্ত বোঝা কাউকে চাপিয়ে দেওয়া হয়নি। শারীরিক ও পারিপার্শ্বিক অবস্থাভেদে রোজা না রাখারও অনুমোদন আছে ইসলামে। যেমন গর্ভবর্তী, দুগ্ধদানকারী মা, অসুস্থ, বার্ধক্যের কারণে দূর্বল, মুসাফির ইত্যাদি।
তবে, ইচ্ছাকৃতভাবে মুখভরে বমি করলে রোজা ভেঙে যাবে; আর মুখভরে না হলে ভাঙবে না। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, অনিচ্ছাকৃতভাবে কোনো ব্যক্তির বমি হলে তাকে রোজা কাজা করতে হবে না (অর্থাৎ তার রোজা ভাঙবে না)। আর যে ইচ্ছাকৃত বমি করবে, সে যেন রোজার কাজা করে। (তিরমিজি: ৭২০; মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা: ৬/১৮০; আল-বাহরুর রায়েক: ২/২৪৭)
ইচ্ছাকৃত বমি করার মানে হলো- মুখে আঙ্গুল দিয়ে বা অন্য কোনো পদ্ধতিতে ইচ্ছেকৃত মুখভরে বমি করা; এতে রোজা ভেঙে যাবে।
অনিচ্ছায় হলে বা ইচ্ছাকৃত মুখভরে না হলে, সেক্ষেত্রে রোজা ভাঙবে না। (ফতোয়া হিন্দিয়া: খণ্ড-০১, পৃষ্ঠা-২০৪; রদ্দুল মুখতার: খণ্ড-০২, পৃষ্ঠা-৪২১)
বিজ্ঞাপন
আবার কেউ যদি অনিচ্ছায় বমি করার পর রোজা রাখতে অপারগ হয়ে যায়, তাহলে সে রোজা ভঙ্গও করতে পারবে। সেক্ষেত্রে শুধুমাত্র কাজা ওয়াজিব হবে, কাফফারা ওয়াজিব হবে না। কাফফারা শুধুমাত্র ওসব ক্ষেত্রেই ওয়াজিব হয়ে থাকে, যেসব ক্ষেত্রে শরয়ি ওজর ছাড়াই রোজাকে ভঙ্গ করা হয়ে থাকে।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে রমজানের বিধি-বিধান যথাযথ পালনের তাওফিক দান করুন। আমিন।

