বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

গুনাহ নেকিতে পরিণত হয় যে আমলে

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ২০ মার্চ ২০২৩, ০৪:৩২ পিএম

শেয়ার করুন:

গুনাহ নেকিতে পরিণত হয় যে আমলে

আল্লাহ তাআলা পরম ক্ষমাশীল। বান্দার গুনাহের বোঝা অতিরিক্ত হয়ে গেলে এমনকি আকাশ-জমিন ছেয়ে গেলেও হতাশ হয়ে বসে থাকা যাবে না। আন্তরিক তওবা করলে তিনি সকল গুনাহ ক্ষমা করে দেন। 

আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেন, ‘আর আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাও, নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাকারী ও অতিশয় দয়ালু।’ (সুরা নিসা: ১০৬) অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘আমার বান্দাদের জানিয়ে দিন, আমি ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।’ (সুরা হিজর: ৪৯)

আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (স.)-কে বলতে শুনেছি— মহান আল্লাহ বলেন, হে আদম সন্তান! তুমি যতদিন পর্যন্ত আমার কাছে দোয়া করতে থাকবে এবং ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকবে, আমি ততদিন তোমার গুনাহ মাফ করতে থাকব, তুমি যা-ই করে থাকো আমি সেদিকে ভ্রুক্ষেপ করব না। হে আদম সন্তান! তোমার গুনাহ যদি আকাশের উচ্চতা পর্যন্তও পৌঁছে যায়, অতঃপর তুমি আমার কাছে ক্ষমা চাও, তবুও আমি তোমাকে ক্ষমা করব, আমি সেদিকে ভ্রুক্ষেপ করব না। হে আদম সন্তান! তুমি যদি পৃথিবী পরিমাণ গুনাহ নিয়ে আমার কাছে আসো এবং আমার সঙ্গে কোনো কিছুকে শরিক না করে থাকো, তাহলে আমিও সমপরিমাণ ক্ষমা নিয়ে তোমার কাছে আসব। ’ (তিরমিজি: ৩৫৪০)

এমনকি তাওবার কারণে আল্লাহ তাআলা বান্দার গুনাহগুলোকে কখনও সওয়াবে পরিণত করে দেন। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে—‘কিন্তু যারা তাওবা করে, বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদের গুনাহসমূহকে নেকি দ্বারা পরিবর্তন করে দিবেন। (সুরা ফুরকান: ৭০)

এর একটা অর্থ এই যে, মহান আল্লাহ তার অবস্থার পরিবর্তন ঘটান। ইসলাম গ্রহণের আগে সে পাপাচার করত, এখন সে সৎকর্ম করে, আগে শিরক করত, এখন শুধুমাত্র আল্লাহরই ইবাদত করে। আগে কাফেরদের সঙ্গে মিলিত হয়ে মুসলিমদের বিরুদ্ধে লড়ত। আর এখন সে মুসলিমদের দলভুক্ত হয়ে কাফেরদের বিরুদ্ধে লড়াই করে ইত্যাদি। এর অন্য একটি অর্থ—তার পাপগুলো নেকি দিয়ে পরিবর্তন করে দেওয়া হয়। এর প্রমাণ হাদিসেও পাওয়া যায়।

আবু জর (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, আমি অবশ্যই চিনি— জাহান্নাম থেকে নাজাতপ্রাপ্ত সর্বশেষ জাহান্নামি এবং সর্বশেষ জান্নাতিকে। এক ব্যক্তিকে নিয়ে আসা হবে, অতঃপর আল্লাহ বলবেন, তার ছোট পাপ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করো। বড় পাপগুলো গোপন রাখো। অতঃপর তাকে বলা হবে- তুমি অমুক অমুক পাপ; অমুক অমুক দিন করেছ। অমুক অমুক পাপ; অমুক অমুক দিন করেছ। তিনি বলেন, অতঃপর তাকে বলা হবে- তোমার জন্য প্রত্যেক পাপের পরিবর্তে একটি করে নেকি। তিনি বলেন, অতঃপর সে বলবে, হে আমার রব আমি অনেক কিছু (গুনাহ) করেছি, এখানে তা দেখছি না। তিনি বলেন, আমি রাসুল (স.)-কে দেখেছি হাসতে। এমনকি তার মাড়ির দাঁত পর্যন্ত বের হয়েছিল। (মুসলিম, হাদিসে কুদসি: ৫৭)

বেশি বেশি তওবা করা অনুগত বান্দাদের বৈশিষ্ট্য। কোনো গুনাহ না থাকার পরও নবীজি প্রতিদিন ১০০ বার তাওবা করতেন। তাওবা করলে আল্লাহ তাআলা খুশি হন। তওবাকে বলা হয় জান্নাতের সোপান। সুতরাং দুনিয়া ও পরকালের সফলতা লাভে কোরআন-সুন্নাহর নির্দেশমতো প্রতিদিন তাওবা করা বান্দার জন্য জরুরি। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে আন্তরিক তওবা করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর