সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

বাংলায় জুমার খুতবা দিলে তার পেছনে নামাজ পড়া যাবে?

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৭ মার্চ ২০২৩, ১২:৫১ পিএম

শেয়ার করুন:

বাংলায় জুমার খুতবা দিলে তার পেছনে নামাজ পড়া যাবে?

জুমার নামাজের জন্য খুতবা দেওয়া এবং উপস্থিত মুসল্লিদের জন্য তা শোনা ওয়াজিব। একদল আলেমের মতে, জুমার খুতবা ফরজ। তাদের মতে, খুতবা নামাজেরই অংশ; তাই ঈদ ও জুমার খুতবা আরবিতে দেওয়া হয়।

খুতবা আরবি ভাষায় দেওয়া সুন্নতে মুতাওয়ারাছা তথা যুগ পরম্পরায় চলে আসা অনুসৃত আমল। রাসুলুল্লাহ (স.), খোলাফায়ে রাশেদিন, সাহাবায়ে কেরাম, তাবেয়িন ও আইম্মায়ে মুজতাহিদীনের যুগে আরবিতেই খুতবা দেওয়া হত। অনারবি ভাষায় খুতবা দেওয়ার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না।

ইসলামে সাহাবিদের অনুসরণ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাঁরা উম্মাহর শ্রেষ্ঠ মানুষ। সত্য ও ন্যায়ের মাপকাঠি। কেয়ামত পর্যন্ত সকল মানুষের জন্য তাঁরা অনুসরণীয়। কোরআন ও হাদিসের বিভিন্ন স্থানে সাহাবায়ে কেরামের মর্যাদা বর্ণিত হয়েছে। সাহাবিদের ব্যাপারে আল্লাহর ঘোষণা-  رَّضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ وَرَضُوا عَنْهُ অর্থাৎ আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট এবং তারা আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট।’ (সুরা বাইয়িনা: ৮)

রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘আমার ও আমার খুলাফায়ে রাশেদার সুন্নত দৃঢ়ভাবে ধারণ করা তোমাদের জন্য অপরিহার্য।’ (সুনানে আবু দাউদ: ৪৬০৭, তিরমিজি: ২৬৭৬, মুসনাদে আহমদ: ১৬৬৯২, সুনানে ইবনে মাজাহ: ৪২)

অতএব আরবিতে খুতবা দেওয়া হয়—এমন মসজিদেই জুমার নামাজ পড়া উচিত। অবশ্য গুটিকয়েক মসজিদে বাংলা ভাষায় যে খুতবা দেওয়া হয় তার শুরুতে বা মাঝে হামদ-সানা ও আয়াত তেলাওয়াতের কারণে খুতবার ফরজ আদায় হয়ে যায়। তাই বিগত দিনে এমন মসজিদে ও এমন ইমামের পেছনে নামাজ পড়লে সেই নামাজগুলোর কাজা করতে হবে না। তবে ভবিষ্যতে এমন ইমামের পেছনে নামাজ আদায়ের চেষ্টা করতে হবে, যিনি সুন্নাহ অনুযায়ী নামাজ পড়ান। 

তবে কোথাও যদি এরকম ব্যবস্থা না থাকে তাহলে অনারবি ভাষায় খুতবা দেওয়া খতিবের পিছনেও জুমার নামাজ আদায় হয়ে যাবে। (আলবাহরুর রায়েক: ২/৩০৭; রদ্দুল মুহতার: ১/৪৮৫; মুসাফফা শরহুল মুআত্তা: ১/১৫৪; আহকামুন নাফাহিস: ৪৩-৪৯)

উল্লেখ্য, বলা হয়ে থাকে, ইমাম আবু হানিফা (রহ.) আরবি ছাড়া অন্য ভাষায় খুতবা দেওয়া জায়েজ বলেছেন। আসলে এই জায়েজ বলার উদ্দেশ্য ফিকহে হানাফির অধিকাংশ কিতাবেই উল্লেখ আছে যে, আবু হানিফা (রহ.)-এর মতে অনারবি ভাষায় খুতবা জায়েজ দ্বারা উদ্দেশ্য হলো মাকরুহে তাহরিমির সাথে জায়েজ। (শামি: ২/১৮৩, বাহরুর রায়েক: ১/ ৫৩৫, তাতারখানিয়া: ২/৭৪, সিআয়া: ২/১৫৫)

আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে নামাজের সকল হুকুম আহকাম জানার ও মানার তাওফিক দান করুন। আমিন।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর