বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

‘গোপন একটি নেক আমলের তৃপ্তি লাখো লাইক-কমেন্টেও পাবেন না’

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ২১ মার্চ ২০২২, ০৩:২৯ পিএম

শেয়ার করুন:

‘গোপন একটি নেক আমলের তৃপ্তি লাখো লাইক-কমেন্টেও পাবেন না’

বিশিষ্ট ইসলামিক ব্যক্তিত্ব শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেছেন, লক্ষ লক্ষ লাইক-কমেন্টে তৃপ্তি পাওয়া যায় ঠিক, তবে, সেটির মধ্যে এক ধরনের অপূর্ণতা থাকে, অস্বস্তি থাকে। কিন্তু গোপনে একটি নেক আমল করে দেখেন। আমলটি হতে পারে দুই রাকাত নফল নামাজ বা ১০ টাকা দান। আমলটি শুধু আল্লাহ তাআলা আর আপনি ছাড়া কেউ জানবে না। জীবনে মা-বাবা, স্বামী বা স্ত্রী কাউকে জানতে দেবেন না। মহান আল্লাহর সঙ্গে আপনার এই একান্ত আলাপচারিতার যে পবিত্র ফিলিংস, সেরকম পবিত্র ফিলিংস এবং আনন্দ, লক্ষ লাইক-কমেন্টেও পাওয়া সম্ভব নয়।

রোববার (২০ মার্চ) আরআই মিডিয়া নামক ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত ভিডিওতে তিনি আরও বলেন, বর্তমান সমাজ এমন একটি সময় পার করছে, যখন সবকিছুতেই লৌকিকতা লক্ষণীয়। মিডিয়ার কল্যাণে ভালো যেমন হচ্ছে, তেমনি আমাদের আমলগুলো বরবাদও হচ্ছে। অথচ, মানুষকে দেখানোর জন্য কিছু করলে সেটিকে বলা হয় শিরকে আসগর (সবচেয়ে ভয়ঙ্কর পাপ)।


বিজ্ঞাপন


তিন ব্যক্তিকে দিয়ে জাহান্নাম উদ্বোধন করা হবে, তারা তিনজনই রিয়াকার বা লোক দেখানো আমলকারী। এদের আগে কেউ জাহান্নামে যাবে না। 

লৌকিকতা প্রদর্শনকারীর শাস্তি দুনিয়াতেও হবে উল্লেখ করে শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, মুসনাদে আহমদ বর্ণিত হাদিসে এসেছে, আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বর্ণনা করেন, যে ব্যক্তি মানুষকে দেখানোর জন্য দান করে, মানুষের কাছে বাহবা পাওয়ার জন্য যেকোনো কিছু করে, ওই ব্যক্তিকে আল্লাহ দুনিয়াতেই তুচ্ছ করে ফেলেন। যাকে বলে নগদ শাস্তি।

তাকে আল্লাহ এমনভাবে অপমান করেন এবং ছোট করেন, তার জীবনটাই সংকীর্ণ হয়ে যায়। এই হাদিস যখন বর্ণনা করছিলেন, তখন ভয়ে আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.)-এর দুচোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছিল। অথচ দুঃখজনক বিষয়, বর্তমানে ওয়াজ মাহফিলেও লৌকিকতা চোখে পড়ার মতো।

তবে, প্রকাশ্যেও দান করা যায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, যে দানে অন্যকে দান করতে উৎসাহিত করার উদ্দেশ্য থাকে, সেটি ভালো। আর যদি উদ্দেশ্য থাকে লোক দেখানো, তাহলে সওয়াব তো পাবেনই না, বরং শিরকে আসগরের গুনাহ করে জাহান্নামে যাবেন। নবী (স.) বলেছেন, দাজ্জালের ফেতনার চেয়েও ভয়াবহ ফেতনা হচ্ছে গোপন শিরক। পাঠকের বোঝার সুবিধার্থে হাদিসটি এখানে উল্লেখ করা হলো—


বিজ্ঞাপন


আবু সাঈদ খুদরী (রা.) বর্ণনা করেন,“রাসুল (স.) আমাদের নিকট আসলেন যখন আমরা দাজ্জাল সম্পর্কে আলোচনা করছিলাম। তিনি বললেন, আমি কি তোমাদেরকে এমন বস্তু সম্পর্কে সংবাদ দেবো, যা তোমাদের জন্য দাজ্জালের চেয়েও অধিক ভয়ঙ্কর। আমরা বললাম, হ্যাঁ, অবশ্যই। তিনি বললেন, গোপন শিরক। যেমন, কোনো ব্যক্তি নামাজ পড়ছিলো, অতঃপর কেউ তাকে দেখছে বলে সে নামাজকে খুব সুন্দর করে পড়তে শুরু করলো”। (ইবনে মাজাহ: ৪২৭৯; আহমদ: ৩/৩০; হাকিম: ৪/৩২৯)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে গোপন নেক আমল করার তাওফিক দিন এবং শিরকে আসগর বা লোক দেখানো আমল করা থেকে হেফাজত করুন। আমিন।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর