মৃত্যুর পর আমলের ধারা বন্ধ হয়ে যায়। এ অবস্থায় মৃতব্যক্তির জন্য বিলাপ-কান্নাকাটিতে কোনো কল্যাণ নেই। বরং মাগফেরাতের দোয়া ও ভালো কথাগুলো তাঁর উপকারে আসে। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বর্ণিত হাদিসে রাসুল (স.) বলেন, ‘তোমরা তোমাদের মৃতদের ভালো কাজগুলোর আলোচনা করো এবং মন্দ কাজের আলোচনা থেকে বিরত থাকো।’ (আবু দাউদ: ৪৯০০)
হাদিসে মৃতদেহের সামনে দোয়া পড়ার শিক্ষা রয়েছে। তেমনই একটি দোয়া হলো— اللّٰهُمَّ اغْفِرْ لِي وَلَهُ وَأَعْقِبْنِي مِنْهُ عُقْبًى حَسَنَةً উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মাগফিরলি ওয়া লাহু ওয়া আ‘কিবনি মিনহু উকবান হাসানাহ।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ! তুমি আমাকে ও তাকে ক্ষমা করো এবং আমাকে তার চেয়েও উত্তম প্রতিদান দাও।’ (ইবনে মাজাহ: ১৪৪৭)
উম্মে সালামাহ (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, তোমরা রোগী কিংবা মৃতের কাছে উপস্থিত হলে (তার সম্পর্কে) ভালো কথা বলবে। কেননা তোমরা যা বলবে, ফেরেশতারা তার ওপর আমিন বলবেন। আবু সালামাহ (রা.) ইন্তেকাল করলে, আমি নবী (স.)-এর কাছে এসে বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আবু সালামাহ ইন্তেকাল করেছেন। তিনি বলেন, তুমি বলো, ‘হে আল্লাহ! তুমি আমাকে ও তাকে ক্ষমা করো এবং আমাকে তার চেয়েও উত্তম প্রতিদান দাও।’ বর্ণনাকারী বলেন, আমি তা-ই করলাম। আল্লাহ আমাকে তার চাইতেও উত্তম বিনিময় মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (স.)-কে দান করেছেন। (ইবনে মাজাহ: ১৪৪৭)
এছাড়াও পবিত্র কোরআনে সব মুমিনের জন্য মাগফেরাতের দোয়া করার শিক্ষা রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি দোয়া হলো আল্লাহর নবী ইবরাহিম (আ.)-এর দোয়া—رَبَّنَا اغۡفِرۡ لِیۡ وَ لِوَالِدَیَّ وَ لِلۡمُؤۡمِنِیۡنَ یَوۡمَ یَقُوۡمُ الۡحِسَابُ ‘রব্বানাগ ফিরলী ওয়ালিওয়া-লিদায়্যা ওয়ালিল মু’মিনীনা ইয়াওমা ইয়াকূমুল হিসাব’ ‘হে আমার প্রতিপালক! যেদিন হিসাব প্রতিষ্ঠিত হবে, সেদিন আমাকে, আমার পিতা-মাতা ও সব ঈমানদারকে ক্ষমা করুন।’ (সুরা ইবরাহিম: ৪১)
অন্য জায়গায় নুহ (আ.)-এর এই দোয়া বর্ণিত হয়েছে, رَبِّ اغۡفِرۡ لِیۡ وَ لِوَالِدَیَّ وَ لِمَنۡ دَخَلَ بَیۡتِیَ مُؤۡمِنًا وَّ لِلۡمُؤۡمِنِیۡنَ وَ الۡمُؤۡمِنٰتِ ‘হে আমার প্রতিপালক! আমাকে ক্ষমা করে দিন এবং আমার পিতা-মাতাকেও এবং যে ঈমান অবস্থায় আমার ঘরে প্রবেশ করেছে আর সমস্ত মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীকেও।’ (সুরা নুহ: ২৮)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে মৃতদেহের সামনে হাদিসে উল্লেখিত দোয়া এবং সব মুমিনের জন্য মাগফেরাতের দোয়া করার তাওফিক দান করুন। আমিন।