বিয়ে আল্লাহ তাআলার নির্দেশ ও মহানবী (স.)-এর গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, ‘আল্লাহর নিদর্শনসমূহের মধ্যে অন্যতম হলো—তিনি তোমাদের মধ্য থেকে সৃষ্টি করেছেন তোমাদের জীবনসঙ্গিনী, যাতে তোমরা তাদের নিকট প্রশান্তি লাভ করতে পারো এবং তিনি তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক প্রেম-প্রীতি, ভালোবাসা ও দয়া সৃষ্টি করেছেন।’ (সুরা রুম: ২১)
বিয়ে চারিত্রিক অবক্ষয়রোধের অনুপম হাতিয়ার। হাদিসের ভাষায় এতে রয়েছে নানামুখী বরকত। তবে বর্তমানে বিষয়টিকে কঠিন করে তোলা হয়েছে। এই বরকতময় সুন্নত আজ নানা কুসংস্কারে বন্দী। অনেকে মনে করেন, যে তারিখে জন্ম সে তারিখে বিয়ে করা অমঙ্গলজনক। এমনকি জন্মের মাসে বিয়ে করাও অশুভ। এতে ব্যক্তির ধনপুত্র নাশ হয়। আসলে এসব জাহেলি চিন্তা ছাড়া কিছুই নয়। যা অমুসলিম সমাজ থেকে অনুপ্রবেশ করেছে।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: ক্যারিয়ারের অজুহাতে বিয়ে করতে দেরি নয়
অনেকে তো পঞ্জিকা দেখে, শুভদিন হিসেব করে বিয়ের তারিখ নির্ধারণ করেন। যা কখনো মুসলিমদের বিশ্বাস হতে পারে না। কেননা ইসলামে শুভ-অশুভ দিন বলে কিছু নেই। মুমিনের বিশ্বাস হবে—কল্যাণ-অকল্যাণের মালিক একমাত্র আল্লাহ তাআলা। তা নির্দিষ্ট দিন-তারিখের সঙ্গে যুক্ত নয়। শুভ-অশুভ তো মানুষের আমল দ্বারা নির্ধারিত হয়। সব দিনই শুভ; যদি তাতে আল্লাহর সন্তুষ্টি অনুযায়ী চলা হয়। আর অশুভ-অকল্যাণকর তো ওই সময়, যেসময় আল্লাহর নাফরমানি করা হয়।
ইসলাম পূর্ব যুগে শাওয়াল মাসে বিয়ে করাকে অশুভ অলক্ষুণে মনে করা হতো। আয়েশা (রা.) এ ধারণাকে খণ্ডন করে বলেন- ‘রাসুলুল্লাহ (স.) শাওয়াল মাসেই আমাকে বিয়ে করেছেন এবং শাওয়াল মাসেই আমার রুখসতি (স্বামীর ঘরে আসা) হয়েছে। অথচ তাঁর অনুগ্রহ লাভে আমার চেয়ে অধিক সৌভাগ্যবতী স্ত্রী আর কে আছে?’ (সহিহ মুসলিম: ১৪২৩)
বিজ্ঞাপন
সুতরাং মুসলিম উম্মাহর জন্য বিয়েসহ যে কোনো কাজের জন্য দিনক্ষণ বাছাই করার কোনো প্রয়োজন নেই। আর এর মধ্যে বিশেষ কল্যাণও নেই। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সব ধরনের কুসংস্কার থেকে বেঁচে থাকার তাওফিক দান করুন। সঠিক আকিদা বিশ্বাসে জীবন পরিচালনা করার তাওফিক দান করুন। আমিন।