রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

রবিউস সানি মাসে যেসব আমলে মনোযোগী হবেন

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ৩১ অক্টোবর ২০২২, ০৩:৩৩ পিএম

শেয়ার করুন:

রবিউস সানি মাসে যেসব আমলে মনোযোগী হবেন

বিশেষ সময়ের বিশেষ ফজিলত বর্ণিত আছে কোরআন ও হাদিসে। সপ্তাহের মধ্যে শুক্রবার, সোমবার ও বৃহস্পতিবার। বছরের বিশেষ রাতগুলোর মধ্যে রয়েছে শবে কদর, শবে বরাত, ঈদের রাত ইত্যাদি। মাসের মধ্যে রমজান, জিলকদ, জিলহজ, মহররম ও রজব। শাবান মাসেরও গুরুত্বের কথা হাদিসে এসেছে। নবীজি এই মাসে বেশি রোজা রাখতেন। একইভাবে রবিউল আউয়াল মাসেরও গুরুত্ব রয়েছে। মহানবী (স.)-এর দুনিয়াতে আগমন, তিরোধান ও হিজরতের মাস রবিউল আউয়াল। আর তারই জোড়া মাস হিসেবে রবিউস সানি মাসটিও বেশ তাৎপর্যময়।

রবিউল আউয়ালেরই জোড়া মাস রবিউস সানি। আরবি বর্ষপঞ্জি ও হিজরি সনের চতুর্থ এই মাসকে ‘রবিউল আখির’ও বলা হয়। ‘রবি’ অর্থ বসন্ত, ‘আউয়াল’ অর্থ প্রথম, ‘সানি’ অর্থ দ্বিতীয়, ‘আখির’ অর্থ শেষ। সুতরাং ‘রবিউস সানি’ অর্থ হলো বসন্তকালের দ্বিতীয় মাস বা রবিউল আউয়ালের জোড়া মাস। এখন চলছে রবিউস সানি। 


বিজ্ঞাপন


ইসলামি শরিয়তে আরবি নতুন মাস ও সপ্তাহের বিশেষ কিছু আমল রয়েছে। যেমন সোম ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখা সুন্নত। তাই এই মাসের প্রতিটি সোম ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখা ইসলামের অনুমোদিত আমল এবং এর ফজিলতও রয়েছে। এই দুদিন রোজা রাখার বিষয়ে নবীজি (স.) বলেন- ‘সোম ও বৃহস্পতিবার আল্লাহর কাছে বান্দার আমল পেশ করা হয়। তাই আমি পছন্দ করি যে, রোজা থাকা অবস্থায় যেন আমার আমলনামা আল্লাহর কাছে পেশ করা হয়।’ (তিরমিজি: ৭৪৭; সহিহুত তারগিব: ১০২৭)

নফল রোজা জাহান্নাম থেকে রোজাদারকে দূরে সরিয়ে দেয়। রাসুল (স.) ইরশাদ করেছেন, যে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য একদিন রোজা রাখবে, আল্লাহ তাআলা জাহান্নামকে তার থেকে ১০০ বছরের দূরত্বে সরিয়ে রাখবেন। (আস সিলসিলাতুস সহিহাহ: ২৫৬৫, খণ্ড-৬)

সুতরাং উম্মতের জন্য এই ‍দুদিন রোজা রাখা অনেক ফজিলতপূর্ণ আমল। এছাড়াও আইয়ামে বিজের তথা প্রতি চান্দ্রমাসের ১৩, ১৪, ১৫ তারিখ রোজার রাখার কথা এসেছে হাদিসে। হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘প্রতি মাসে তিনটি করে রোজা রাখা সারাবছর রোজা রাখার সমান।’ (বুখারি: ১১৫৯, ১৯৭৫)

এছাড়া প্রতি সপ্তাহে অথবা যেকোনো সময় কবর জিয়ারতের কথা আছে হাদিসে। ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি প্রতি জুমায় তার মা-বাবা বা তাদের একজনের কবর জিয়ারত করবে, তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হবে এবং মা-বাবার সঙ্গে সদ্ব্যবহারকারীদের মধ্যে গণ্য করা হবে।’ (আল-মুজামুল আউসাত: ৬১১৪)


বিজ্ঞাপন


তবে কবর জিয়ারতকে শুধু মাসিক বা সপ্তাহিক আমল হিসেবে অবশ্যক বা বিশেষ ফজিলত আছে—এমন মনে করা যাবে না। এমন ভাবনা থেকেই বিদআতের সূত্রপাত হয়। সমাজে কিছু ভিত্তিহীন আমলের প্রচলনও সেকারণেই হয়েছে। এসব থেকে অবশ্যই দূরে থাকতে হবে।  উম্মুল মুমিনিন আয়েশা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আমাদের এ দীনে (ইসলাম ধর্মে) নতুন কিছু সৃষ্টি করে, যা তার মধ্যে নেই তা প্রত্যাখ্যানযোগ্য।’ (সহিহ বুখারি: ২৬৯৭)

সৎ নিয়তে বা ভালো উদ্দেশ্যেও দীনে নতুন কিছু প্রবর্তন করা হারাম। যে ব্যক্তি তা করবে, সে আমলের দায় তাকেই বহন করতে হবে। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই সর্বোত্তম বাণী আল্লাহর কিতাব। আর সর্বোত্তম আদর্শ মুহাম্মদ (স.)-এর আদর্শ। সবচেয়ে নিকৃষ্ট বিষয় হলো, (দীনের মধ্যে) নব-উদ্ভাবিত বিষয়। (দীনের মধ্যে) নব-উদ্ভাবিত সবকিছুই বিদআত। প্রত্যেক বিদআত ভ্রষ্টতা, আর প্রত্যেক ভ্রষ্টতার পরিণাম জাহান্নাম।’ (মুসলিম: ১৫৩৫; নাসায়ি: ১৫৬০)

 আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে শুধুমাত্র সুন্নাহ সমর্থিত আমলগুলো করার তাওফিক দান করুন। শরিয়তের অনুমোদন নেই এমন আমল থেকে দূরে রাখুন। আমিন।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর