পৃথিবীর সব শ্রেণী-পেশার মানুষের অনুপম আদর্শ মহানবী হজরত মুহম্মদ (স.)। তাঁকে সৃষ্টিই করা হয়েছে সবার জন্য অনুসরণীয় ও মুক্তির কাণ্ডারি হিসেবে। তিনি শিশু-কিশোর-যুবকের আদর্শ, সৈনিক ও সেনাপতির আদর্শ, স্বামীর আদর্শ, পিতা-নানার আদর্শ, ব্যবসায়ী, শিক্ষক, রাষ্ট্রনায়কের আদর্শ। এতসব মহান গুণের অপূর্ব সমাহার শুধু এই মহামানবের জীবনাদর্শেই বিদ্যমান।
তাঁরই আদর্শ অনুকরণের মধ্যে নিহিত মানবতার মুক্তি এবং মানব জীবনের ঐকান্তিক সফলতা। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেন, ‘..সুতরাং যারা তাঁর প্রতি ঈমান আনে, তাঁকে সম্মান করে, তাঁকে সাহায্য করে এবং তাঁর সঙ্গে যে নূর নাজিল করা হয়েছে তা অনুসরণ করে, তারাই সফলকাম।’ (সুরা আরাফ: ১৫৭)
বিজ্ঞাপন
আল্লাহর ভালবাসা প্রাপ্তি পুরোপুরি নির্ভরশীল নবীজির আনুগত্য ও অনুসরণের ওপর। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে রাসুল! আপনি লোকদের বলে দিন- যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাসো, তাহলে আমার অনুসরণ করো। তাহলে আল্লাহও তোমাদের ভালবাসবেন।’ (সুরা আলে ইমরান: ৩১)
আর রাসুলকে ভালোবাসার নিদর্শন হচ্ছে তাঁর আনুগত্য ও পূর্ণ অনুসরণ করা। জান্নাত প্রাপ্তির পূর্বশর্ত হিসেবে রাসুল (স.)-এর অনুকরণের শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। অন্য কেউ জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করবে, আল্লাহ তাকে এমন জান্নাতসমূহে প্রবেশ করাবেন, যার তলদেশ দিয়ে নদী প্রবহমান। আর সেটিই প্রকৃত সফলতা।’ (সুরা নিসা: ১)
সুতরাং জান্নাত তাদের জন্য নয় যারা অস্বীকারকারী। নবীজি (স.) বলেছেন, ‘আমার উম্মতের সব লোকই জান্নাতি হবে অস্বীকারকারী ছাড়া। জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রাসুল! অস্বীকারকারী কে? রাসুলুল্লাহ (স.) বললেন, যে আমার অনুসরণ করবে, সে জান্নতে প্রবেশ করবে, আর যে আমার নাফরমানি করবে, সেই অস্বীকারকারী।’ (বুখারি: ৬৮৫১)
মহানবী (স.)-এর অনুসরণকারীদেরকে আল্লাহর দল ঘোষণা করা হয়েছে পবিত্র কোরআনে। বলা হয়েছে, তাদের প্রতি আল্লাহ সন্তুষ্ট, তারাই সফলকাম এবং জান্নাত তাদের জন্যই। বিষয়টি পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে এভাবে—‘আপনি পাবেন না আল্লাহ ও আখেরাতে বিশ্বাসী এমন কোনো সম্প্রদায়, যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের বিরুদ্ধাচরণকে ভালোবাসে—হোক না বিরুদ্ধাচরণকারী তাদের পিতা বা পুত্র, ভাই বা জ্ঞাতি-গোষ্ঠী। এদের অন্তরে আল্লাহ সুদৃঢ় করেছেন ঈমান এবং তাদের শক্তিশালী করেছেন তাঁর পক্ষ থেকে রূহ দ্বারা। তিনি তাদের জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত; সেথায় তারা স্থায়ী হবে; আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং তারাও আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট। এরাই আল্লাহর দল। জেনে রেখো, আল্লাহর দলই সফলকাম।’ (সুরা মুজাদালা: ২২)
বিজ্ঞাপন
আল্লাহর হাবিব মুহাম্মদ (স.)-এর আদর্শ বাদ দিয়ে অন্য কারো আদর্শ অনুসরণ করে জীবনে সফল হওয়া যাবে না। প্রকৃতপক্ষে ‘যে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করে, সে অবশ্যই মহাসাফল্য লাভ করবে’ (সুরা আহজাব: ৭১)। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে মহানবী (স.)-এর আদর্শ পুরোপুরি অনুসরণ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।