রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

হাসিমুখে কথা বলা সদকাস্বরূপ কেন?

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৩:০৯ পিএম

শেয়ার করুন:

হাসিমুখে কথা বলা সদকাস্বরূপ কেন?

ভাইয়ের সঙ্গে হাস্যোজ্জ্বল থাকা মুমিনের গুণ। হাসিমুখ সৌভাগ্যের প্রতীক এবং ভ্রাতৃত্ব-বন্ধনে নীরব সহায়ক। এক টুকরো মুচকি হাসি সীমাহীন ক্রোধের আগুন নিভিয়ে দেয়। মুহূর্তেই শেষ করে দেয় সন্দেহ-সংশয়ের নিকষ কালো অন্ধকার।

এজন্য প্রিয়নবী (স.) উম্মতকে হাসিমুখে কথা বলতে উৎসাহিত করেছেন। হাদিস শরিফে ভাইয়ের সঙ্গে হাসিমুখে থাকাকে সদকাস্বরূপ ঘোষণা করা হয়েছে।


বিজ্ঞাপন


আবু জার (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (স.) বলেছেন, ‘হাস্যোজ্জ্বল মুখ নিয়ে তোমার ভাইয়ের সামনে উপস্থিত হওয়া তোমার জন্য সদকাস্বরূপ। তোমার সৎকাজের আদেশ এবং অসৎকাজ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ তোমার জন্য সদকাস্বরূপ। পথহারা লোককে পথের সন্ধান দেওয়া তোমার জন্য সদকাস্বরূপ, স্বল্পদৃষ্টিসম্পন্ন লোককে সঠিক দৃষ্টি দেওয়া তোমার জন্য সদকাস্বরূপ। পথ থেকে পাথর, কাঁটা ও হাড় সরানো তোমার জন্য সদকাস্বরূপ। তোমার বালতি দিয়ে পানি তুলে তোমার ভাইয়ের বালতিতে ঢেলে দেওয়া তোমার জন্য সদকাস্বরূপ।’ (তিরমিজি: ১৯৫৬)

প্রশ্ন হলো, হাসিমুখে কথা বলা কীভাবে সদকা হয়! এর জবাব হলো- সদকার মাধ্যমে যেভাবে মানুষ অন্যের মনে আনন্দকে জাগিয়ে তোলে, তেমনি হাসিমুখে কথা বলা, পথহারা লোককে পথ দেখানো, পথের কাঁটা সরিয়ে দেওয়া ইত্যাদি কাজে অন্যের উপকার হয়। এতে মানুষ আনন্দিত হয়। তাই হাসিমুখে কথা বলা সদকাস্বরূপ। এমনকি তা অনেকসময় দানের চেয়েও মজবুত ভূমিকা পালন করে।

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (স.) বলেছেন, ‘ধন-সম্পদ দান করে তোমরা ব্যাপকভাবে লোকদের সন্তুষ্ট করতে সক্ষম হবে না; কিন্তু মুখমণ্ডলের প্রসন্নতা ও প্রফুল্লতা এবং চরিত্র মাধুর্যের মাধ্যমে ব্যাপকভাবে তাদের সন্তুষ্ট করতে পারবে।’ (বুলুগুল মারাম : ১৫৩৪)

এজন্যই রাসুল (স.) সাহাবাদের সঙ্গে মুচকি হাসি ছাড়া কখনোই কথা বলতেন না। জারির (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমি যখন ইসলাম গ্রহণ করেছি, তখন থেকে আল্লাহর রাসুল (স.) আমাকে তাঁর কাছে প্রবেশ করতে বাধা দেননি এবং যখনই তিনি আমার চেহারার দিকে তাকাতেন, তখন মুচকি হাসতেন।’ (বুখারি: ৩০৩৫ )


বিজ্ঞাপন


ইমাম বুখারি (রহ.) তাঁর কালজয়ী গ্রন্থে ‘মুচকি হাসি’ নামে একটি অধ্যায় এনেছেন। আল্লামা ইবনে বাত্তাল (রহ.) বলেন, মুচকি হাসির মাধ্যমে সাক্ষাৎ করা রাসুল (স.)-এর আদর্শ এবং এটা অহংকারের পরিপন্থী আর দুজনের মধ্যে ভালোবাসার সহায়ক। (শরহুল বুখারি: ৫/১৯৩)

প্রিয়নবী (স.) সর্বদা মুচকি হাসতেন। আবদুল্লাহ ইবনুল হারিস ইবনে জাজয়ি (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমি রাসুল (স.)-এর চেয়ে বেশি মুচকি হাসি দিতে আর কাউকে দেখিনি।’ (তিরমিজি: ৩৬৪১)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সদা হাস্যোজ্জ্বল থাকার তাওফিক দান করুন। ভাইয়ের সঙ্গে গোমড়ামুখ পরিহার করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর