রোববার, ৫ মে, ২০২৪, ঢাকা

মেরাজ অস্বীকার করায় উতবার পরিণতি

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৪:১১ পিএম

শেয়ার করুন:

মেরাজ অস্বীকার করায় উতবার পরিণতি

মহানবী (স.)-এর মেরাজ কোরআন ও হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। সীরাতের সঙ্গে সম্পর্কিত এই মহাঅলৌকিক ঘটনা ইসলামী আক্বীদা ও বিশ্বাসের অংশ। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেছেন,“তোমাদের সঙ্গী পথভ্রষ্ট হননি, বিপথগামীও হননি। আর তিনি মনগড়া কথা বলেন না।” (সুরা নাজম: ২-৩)

বিশ্ববিখ্যাত মুফাসসির হাফেজ ইবনে কাসীর (রহ.) এক মেরাজ অস্বীকারকারীর ঘটনা বর্ণনায় বলেন, ইবনে আসাকির (রহ.) আবু লাহাবের পুত্র উতবার জীবনীতে বর্ণনা করেছেন—


বিজ্ঞাপন


আবু লাহাব ও তার পুত্র উতবা একবার সিরিয়া সফরের প্রস্তুতি নেয়। তখন হান্নাদ ইবনুল আসআদ তাদের সঙ্গী হন। তিনি বলেন, ওই সময় আবু লাহাবের ছেলে উতবা বলল, আল্লাহর কসম, আমি অবশ্যই মুহাম্মদের কাছে যাব এবং তাঁর পালনকর্তার ব্যাপারে তাঁকে যন্ত্রণা দিয়ে আসব। তাই সে (মুহাম্মদ স.-এর কাছে গিয়ে) বলল—

হে মুহাম্মদ! আমি তাকে অস্বীকার করি, যে (মেরাজে গিয়ে) আল্লাহর নিকটবর্তী হয়েছে কিংবা আরও কাছাকাছি হয়েছে। এ কথা শুনে নবী (স.) বললেন, ‘আল্লাহুম্মা সাল্লিত আলাইহি আলবাম মিন কিলাবিক’ অর্থাৎ হে আল্লাহ! ‘তুমি তোমার কুকুরগুলোর মধ্যে একটি কুকুর তার ওপরে চাপিয়ে দাও।’

অতঃপর সে সেখান থেকে ফিরে তার বাবার কাছে গেল। তারপর যে কথা সে মুহাম্মদ (স.)-কে বলেছিল তার বাবার কাছে সেটি বলল। তখন আবু লাহাব উতবাবে জিজ্ঞেস করল, প্রত্যুত্তরে মুহাম্মদ তোমাকে কী বললেন? সে উত্তরে বললো, আল্লাহুম্মা সাল্লিত আলাইহি কালবাম মিন কিলাবিক। এ কথা শুনে আবু লাহাব বলল, হে বৎস! আমি মুহাম্মদের বদদোয়াটি তোমার জন্য নিরাপদ মনে করছি না।

হান্নাদ ইবনুল আসআদ বলেন, তারপর আমরা সফরে চললাম। পরিশেষে এক সন্যাসীর গির্জার কাছে এক মাঠে নামলাম। তখন সন্যাসীটি বললেন, হে আরবের দল! কীসে তোমাদের এখানে নামিয়েছে? এই জায়গাটা এমন, যেখানে ভেড়া আসে, আবার বাঘও আসে। তখন আবু লাহাব বলল—


বিজ্ঞাপন


আপনারা নিশ্চয়ই আমার বুড়ো বয়স এবং (এ বয়সে) আমার অধিকারটা লক্ষ্য করেছেন। ওই ব্যক্তি (মুহাম্মদ) আমার ছেলেকে অভিশাপ দিয়েছে। আল্লাহর কসম, আমি ওই অভিশাপ থেকে একে নিরাপদ মনে করছি না। তাই আপনারা আপনাদের আসবাবপত্র এ গির্জার কাছে এক জায়গায় জমা করুন এবং এর উপরে আমার ছেলের শোয়ার বিছানা করে দিন। তারপর আপনারা ওর চারপাশে নিজেদের বিছানা বিছিয়ে নেন। 

আমরা তাই করলাম।  অতঃপর রাতে একটি বাঘ এলো। সে আমাদের সবার মুখ শুঁকলো। সে যখন তার কাঙ্ক্ষিত ব্যক্তিকে পেল না, তখন লাফ দিয়ে আসবাবপত্রের উপরে পড়লো। তারপর উতবার মুখ শুঁকলো। অতঃপর তাকে চিড়ে ফেলল এবং তার মাথাটাও চুরমার করে দিল। তখন আবু লাহাব বলল—

আমি অবশ্যই বুঝতে পারছিলাম যে, সে মুহাম্মদের অভিশাপ থেকে বাঁচতে পারবে না। (তাফসিরে ইবনে কাসীর, ৪র্থ খণ্ড, ২৪৯-২৫০ পৃষ্ঠা)

সুতরাং, যুক্তি বা বিজ্ঞান এটাকে স্বীকার করুক বা না করুক, মুমিন মুসলমানকে মেরাজ বিশ্বাস করতেই হবে। কেউ যদি অস্বীকার করে, তার ঈমান থাকবে না। “তাঁর দৃষ্টিভ্রম হয়নি এবং তিনি সীমালঙ্গনও করেননি। নিশ্চয়ই তিনি তার পালনকর্তার মহান নিদর্শনাবলী অবলোকন করেছেন।”(সুরা নাজম: ১৭-১৮)

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর