দুনিয়াবি জীবনে সফল হওয়ার নেশা অনেককে আখেরাত ভুলিয়ে দেয়। অথচ আল্লাহ তাআলা বলছেন, ‘আমি জিন ও মানুষকে কেবল এ জন্যই সৃষ্টি করেছি যে, তারা কেবল আমার ইবাদত করবে’ (সুরা জারিয়াত: ৫৬)। আখেরাত ভুলে দুনিয়ার প্রেমে যারা পাগল, ওসব ভাগ্যহতদের ব্যাপারে আবদুল্লাহ বিন মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে—
যে ব্যক্তি তার সব চিন্তাকে একই চিন্তায় অর্থাৎ আখেরাতের চিন্তায় কেন্দ্রীভূত করেছে, আল্লাহ তার দুনিয়ার চিন্তার জন্য যথেষ্ট। অন্যদিকে যে ব্যক্তি যাবতীয় পার্থিব চিন্তায় নিমগ্ন থাকবে, সে যেকোনো উন্মুক্ত মাঠে ধ্বংস হোক, তাতে আল্লাহর কিছু আসে যায় না। (ইবনে মাজাহ: ২৫৭)
অতিশয় কর্মব্যস্ত লোককে আল্লাহ কর্মের মধ্যেই ডুবিয়ে রাখেন। নিমজ্জিত রাখেন হতাশায়। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন—
মহাপবিত্র আল্লাহ বলেন, হে আদম সন্তান! আমার ইবাদতে মগ্ন হও। আমি তোমার অন্তরকে ঐশ্বর্যমণ্ডিত করব এবং তোমার দারিদ্র্য দূর করব। তুমি যদি তা না করো, তাহলে আমি তোমার অন্তর হতাশা দিয়ে পূর্ণ করব এবং তোমার দারিদ্র্য দূর করব না। (ইবনে মাজাহ: ৪১০৭)
অন্য বর্ণনায় আছে, আল্লাহ তাআলা বলেন, হে আদম সন্তান! তুমি আমার ইবাদতের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করো, আমি তোমার অন্তর ঐশ্বর্যে পূর্ণ করে দেব এবং তোমার অভাব দূর করে দেব। তুমি তা না করলে আমি তোমার দুই হাত কর্মব্যস্ততায় পরিপূর্ণ করে দেব এবং তোমার অভাব-অনটন রহিত করব না। (তিরমিজি: ২৪৬৬)
আমাদের উচিত দুনিয়া অর্জনের পেছনে জীবনটা নষ্ট না করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা করা। দুনিয়ার জন্য যতটুকু দরকার, শুধু ততটুকুই করা। তবেই, আল্লাহ আমাদের দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। ফলে জীবনে স্থিরতা ফিরে আসবে এবং আসল সফলতা অর্জন হবে।
বিজ্ঞাপন
আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন—
যে ব্যক্তির একমাত্র চিন্তার বিষয় হবে পরকাল, আল্লাহ সেই ব্যক্তির অন্তরকে অভাবমুক্ত করে দেবেন এবং তার যাবতীয় বিচ্ছিন্ন কাজ একত্র করে সুসংহত করে দেবেন, তখন তার কাছে দুনিয়াটা নগণ্য হয়ে দেখা দেবে। আর যে ব্যক্তির একমাত্র চিন্তার বিষয় হবে দুনিয়া, আল্লাহ তাআলা সেই ব্যক্তির গরিবি ও অভাব-অনটন দুই চোখের সামনে লাগিয়ে রাখবেন এবং তার কাজগুলো এলোমেলো ও ছিন্নভিন্ন করে দেবেন। তার জন্য যা নির্দিষ্ট রয়েছে, দুনিয়ায় সে এর চেয়ে বেশি পাবে না। (তিরমিজি: ২৪৬৫)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে হেদায়াত দান করুন। দুনিয়ার মরীচিকার মোহ ত্যাগ করে পরকালকে প্রাধান্য দেওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএ/

