শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

সুন্দর মৃত্যুর ১০ আমল 

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৩ জুলাই ২০২২, ০৪:২৬ পিএম

শেয়ার করুন:

সুন্দর মৃত্যুর ১০ আমল 

মৃত্যু অবধারিত ও সুনিশ্চিত বিষয়। তবে, ‘...কেউ জানে না কোন দেশে সে মৃত্যুবরণ করবে। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সর্ববিষয়ে সম্যক জ্ঞাত’ (সুরা লোকমান: ৩৪)।

তাই আখেরাতের কল্যাণে জীবন অতিবাহিত করাই হলো বুদ্ধিমানের কাজ। এতেই সুন্দর ও উত্তম মৃত্যু নসিব হয়। অর্জিত হয় প্রকৃত সফলতা। আর যদি পাপাচার করতে করতেই মৃত্যু উপস্থিত হয়, তাহলে তার সুন্দর মৃত্যু নসিব হয় না। মৃত্যুর ফেতনা থেকে বেচে থাকা তার পক্ষে স্বভাবতই সহজ হয় না। কারণ সে তো জীবন কাটিয়েছে শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে।


বিজ্ঞাপন


সুন্দর মৃত্যুর বিশেষ আমলগুলো হলো—
১) ইবাদতের ধারাবাহিকতা ধরে রাখা। (সহিহ মুসলিম: ২৬১৩)
২) কোনো পাপকাজ সংঘটিত হলে দ্রুত তাওবা করা। (সুরা নিসা: ১০৬)
৩) আল্লাহর কাছে সর্বোত্তম মৃত্যুর জন্য দোয়া করা। (সুরা ইমরান: ১৯৩; ইউসুফ: ১০১)
৪) জাহের ও বাতেন তথা প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে আমলের সঙ্গে লেগে থাকা। (বুখারি, আস-সহিহ: ১৪২৩; মুসলিম: ১০৩১)
৫) দীনের ওপর অবিচল থাকা। (সুরা হা মিম সাজদাহ: ৩০-৩১)
৬) আল্লাহ সম্পর্কে ভালো ধারণা পোষণ করা।  (মুসলিম: ২৮৭৭; আবু দাউদ: ৩১১৩; ইবনে মাজাহ: ৪১৬৭; বায়হাকি ও আহমদ: ১৩৭১১ ও ১৩৯৭৭)
৭) তাকওয়া বা খোদাভীতি অর্জন করা। (সুরা আনফাল: ২৯)
৮) বেশি বেশি তাওবা, ইস্তেগফার করা। (নিসা: ২৭)
৯) বেশি বেশি মৃত্যুর চিন্তা করা এবং দীর্ঘ জীবনের আশা পরিত্যাগ করা। ((সুরা ইমরান: ১৮৫; ইবনু মাজাহ: ৪২৫৯; সহিহাহ: ১৩৮৪)
১০) অপমৃত্যু থেকে আল্লাহর কাছে পরিত্রাণ চাওয়া। (মুসাননাফে ইবনে আবি শায়বা: ৩/৩৭০; বায়হাকি: ৩/৩৭৯; আবু দাউদ: ১৫৫২)

উত্তম মৃত্যুর আমল জারি রাখতে সহায়ক
বেশি বেশি মৃত্যুকে স্মরণ করা। এতে দুনিয়ার মোহ কেটে যায় এবং আখিরাতের চিন্তা সৃষ্টি হয়। ফলে তা বান্দার মধ্যে বেশি বেশি নেক আমলের প্রেরণা সৃষ্টি করে এবং ক্ষণস্থায়ী দুনিয়ায় অবৈধ ভোগবিলাস থেকে বিরত রাখে। মহানবী (স.) বলেন, ‘সব ভোগ-উপভোগ বিনাশকারী মৃত্যুকে তোমরা বেশি বেশি স্মরণ করো।’ (তিরমিজি: ২৪০৯)

নেককার লোকের সংস্পর্শ হৃদয়ে ঈমানি চেতনা জাগ্রত করে এবং নেক আমলের হিম্মত ও প্রেরণা বৃদ্ধি করে। কারণ, নেককার ব্যক্তিদের ইবাদত-মগ্নতা, পুণ্যের কাজে উদ্যম ও প্রতিযোগিতা যখন কেউ প্রত্যক্ষ করে, তখন তার মধ্যেও পুণ্যের পথে চলার সাহস ও প্রেরণা জাগে। একইভাবে মানুষ যখন তাদের আল্লাহমুখিতা ও দুনিয়াবিমুখতা প্রত্যক্ষ করে, তখন তাদের মনেও এই বৈশিষ্ট্য অর্জনের আগ্রহ জাগে।

কবর মানুষকে স্মরণ করিয়ে দেয় তার পরিণামের কথা। মৃত্যুর পর আপনজনই তো কবর খনন করে। মৃতকে অন্ধকার ঘরে শায়িত করে। মাটির নিচে রেখে ফিরে আসে। আল্লাহর রাসুল (স.) বলেন, ‘তোমরা কবর জিয়ারত করো। কারণ তা মৃত্যুকে স্মরণ করিয়ে দেয়।’ (মুসলিম: ৯৭৬)


বিজ্ঞাপন


যখন মৃত্যু নিকটবর্তী হয়, তখন বেশি পরিমাণে আল্লাহর রহমতের আশা করা উচিত। আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাতের আগ্রহ প্রবল হওয়া উচিত। কারণ যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাতে আগ্রহী হয়, আল্লাহও তার সাক্ষাতে আগ্রহী হন। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘তোমাদের প্রত্যেকে যেন শুধু এ অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে যে সে আল্লাহর প্রতি সুধারণা পোষণ করে।’ (সহিহ মুসলিম: ২৮৭৭)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সুন্দর মৃত্যুর জন্য উপরোক্ত আমলগুলো যথাযথ আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর