জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের আধুনিকায়ন, সৌন্দর্যবর্ধন ও অবকাঠামোগত উন্নয়নে প্রায় ১৯৯ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এতে মসজিদের মূল কাঠামো অক্ষুণ্ণ রেখে অভ্যন্তরীণ উন্নয়ন, আধুনিক স্যানিটেশন ব্যবস্থা, বহিরাঙ্গণে আচ্ছাদিত করাসহ অফিস ভবন ও নতুন মিনার নির্মাণের কাজ বাস্তবায়নের পরিকল্পনা রয়েছে।
রোববার (৭ ডিসেম্বর) বায়তুল মোকাররম ইসলামিক ফাউন্ডেশন ভবনে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন।
বিজ্ঞাপন
১৯৯ কোটি টাকার বড় প্রকল্প
ড. খালিদ বলেন, ‘বায়তুল মোকাররমের আধুনিকায়ন, সৌন্দর্যবর্ধন ও উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পই আমাদের সবচেয়ে বড় উদ্যোগ। প্রকল্পের অর্থায়নের অনুমোদন ইতোমধ্যে পাওয়া গেছে। খুব দ্রুতই কাজ শুরু হবে, ইনশাআল্লাহ।’
তিনি আরও জানান, মসজিদটিকে আন্তর্জাতিকমানের ইবাদতবান্ধব পরিবেশে রূপ দিতে সরকার প্রয়োজনীয় সব উদ্যোগ নিচ্ছে। এ জন্য সবার সহযোগিতাও চান তিনি।
ইতোমধ্যে সম্পন্ন হওয়া উন্নয়ন
ধর্ম উপদেষ্টা জানান, দায়িত্ব গ্রহণের পর গত এক বছরে মসজিদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বড় পরিবর্তন আনা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে-
- ১১ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন সাব-স্টেশন ও উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন জেনারেটর স্থাপন
- আধুনিক অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা সংযোজন ও ৮০টি স্পর্শকাতর স্থানে ফায়ার হাইড্রেন্ট বসানো
- সাবমারসিবল পাম্প স্থাপনের মাধ্যমে পানির সংকট সমাধান
- উন্নতমানের সাউন্ড সিস্টেম সংযোজন
তিনি বলেন, মসজিদের ড্রেনেজ ব্যবস্থা সংস্কার ও নতুন ড্রেন নির্মাণ করা হয়েছে। মসজিদের ৪০টি এবং মহিলাদের নামাজকক্ষের সব এসি সার্ভিসিং করে সচল করা হয়েছে।

সুবিধা বাড়াতে নানামুখী কাজ
ড. খালিদ আরও জানান-
- ৪৯ লাখ ১৭ হাজার টাকা ব্যয়ে ১২ হাজার স্কয়ারফুট কার্পেট সংযোজন
- মিনারের নতুন জায়নামাজ ও কার্পেট স্থাপন
- গত এক বছরে ১২০টি নতুন সিলিং ফ্যান, ৩য় ও ৪র্থ তলায় ১০টি পেডেস্টাল ফ্যান স্থাপন
- পূর্বদিকে ৩০টি আধুনিক টয়লেট ও অজুখানা নির্মাণ
- দক্ষিণ ও পূর্ব দিকের ৪টি ক্ষতিগ্রস্ত গেট নতুনভাবে নির্মাণ
- মসজিদে অভারহেড জুতার বক্স স্থাপন
- অজুখানা ও টয়লেট সার্বক্ষণিক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করে ১২ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিয়োগ
মার্কেটে শৃঙ্খলা ও আয় বৃদ্ধি
তিনি জানান, বায়তুল মোকাররম মার্কেট থেকে ২ কোটি টাকার বকেয়া আদায় করা হয়েছে এবং অবৈধ দখলদারদের কাছ থেকে দুটি দোকান উদ্ধার করা হয়েছে।
এ ছাড়া দুই কার পার্কিং ইজারা থেকে ৭০ লাখ ৫০ হাজার টাকা রাজস্ব আয় হয়েছে।
গত এক বছরে মসজিদ ও মার্কেটের মূলধন ৯০ কোটি থেকে বেড়ে ১১০ কোটিতে উন্নীত হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
পরিচ্ছন্নতার আহ্বান
মসজিদে আগত মুসল্লিদের প্রতি দায়িত্বশীল আচরণের আহ্বান জানিয়ে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা যত্রতত্র আবর্জনা ফেলব না, ডাস্টবিন ব্যবহার করব, অজুখানা ও টয়লেট নিজের ব্যবহারের জন্য যেমন পরিষ্কার রাখব, তেমনি অন্যদের ব্যবহারের উপযোগী রাখার দায়িত্বও আমাদের।’
প্রেস ব্রিফিংয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন ধর্মসচিব মো. কামাল উদ্দিন, অতিরিক্ত সচিব ইমতিয়াজ আহমেদ, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক আ. ছালাম খান, ওয়াকফ প্রশাসক নূর আলমসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

