কোরবানি ইসলামি শরিয়তের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। সামর্থ্য থাকার পরও যে কোরবানি করে না, হাদিসে তার নিন্দা করা হয়েছে। ১০ জিলহজ ফজরের পর থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত সময়ে নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলে সুস্থ মস্তিষ্কের প্রাপ্তবয়স্ক স্বাধীন মুসলমানের ওপর কোরবানি ওয়াজিব হবে।
কোরবানির মতো মহান ইবাদতে কাউকে শরিক করার ক্ষেত্রে খুব সতর্ক থাকা জরুরি। কেননা, এক্ষেত্রে অংশীদার নির্বাচন করতে হয় প্রত্যেককে ভালোভাবে জেনে-বুঝে। শরিকের কারো নিয়ত গলদ হলে কারো কোরবানিই (অন্য শরিকদের কারো কোরবানি) শুদ্ধ হবে না। (বাদায়েউস সানায়ে: ৪/২০৮, কাজিখান: ৩/৩৪৯)
তাছাড়া কোরবানি করতে হবে সম্পূর্ণ হালাল সম্পদ থেকে। হারাম টাকায় কোরবানি করা শুদ্ধ নয় এবং এক্ষেত্রে একজনের টাকা হারাম হলে অন্যদের কোরবানিও শুদ্ধ হবে না। কেননা রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন—
‘হে মুমিনগণ! আল্লাহ তাআলা পবিত্র, তিনি হালাল ও পবিত্র ব্যতীত কোনোকিছু গ্রহণ করেন না।’ (সহিহ মুসলিম: ২২১৫)
উপরোক্ত দলিল-প্রমাণের আলোকে এ বিষয়টি স্পষ্ট যে, কোরবানির পশু ক্রয় করার আগে অন্য শরিকদের নিয়ত ও হালাল টাকার বিষয়টি নিশ্চিত হতে হবে। অন্যথায় কোরবানির পশুতে কারো হারাম টাকা অন্তর্ভুক্ত হয়ে যেতে পারে। এতে কোনো শরিকের কোরবানিই শুদ্ধ হবে না।
শরিকে কোরবানি করার ক্ষেত্রে আরো কিছু বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। যেমন—
বিজ্ঞাপন
কোরবানির পশুতে প্রত্যেক অংশ সমান হতে হবে। কারো অংশ অন্যের অংশ থেকে কম হতে পারবে না। যেমন কারো আধা ভাগ, কারো দেড় ভাগ। এমন হলে কোনো শরিকের কোরবানি শুদ্ধ হবে না। (বাদায়েউস সানায়ে: ৪/২০৭)
উট, গরু, মহিষ সাত ভাগে এবং সাতের কমে যেকোনো সংখ্যা যেমন দুই, তিন, চার, পাঁচ ও ছয় ভাগে কোরবানি করা জায়েজ। (মুসলিম: ১৩১৮; বাদায়েউস সানায়ে: ৪/২০৭)। উটের বয়স পাঁচ বছর হতে হবে। গরু ও মহিষের বয়স দুই বছর হতে হবে। (মুআত্তা মালেক: ৭৫৪)
উল্লেখ্য, তিন শ্রেণির চতুষ্পদ জন্তু দিয়ে কোরবানি করা যায়। যেমন ১) ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা। ২) গরু, মহিষ। ৩) উট। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সহিহ সুন্নাহ মেনে কোরবানি করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

