শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ঢাকা

সামান্য ভুলে কোরবানির পশু হত্যা করছেন না তো?

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪ জুলাই ২০২২, ০৯:২১ এএম

শেয়ার করুন:

সামান্য ভুলে কোরবানির পশু হত্যা করছেন না তো?

ঈদুল আজহার প্রধান আমল হলো কোরবানি করা। কোরবানিকে ‘সুন্নতে ইবরাহিমি’ নামে অভিহিত করা হয়। আল্লাহ তাআলা কোরবানির নির্দেশ দিয়ে বলেন- ‘আপনি আপনার রবের উদ্দেশ্যে নামাজ পড়ুন এবং কোরবানি আদায় করুন।’ (সুরা কাউসার: ২)

আল্লাহ তাআলার নৈকট্য অর্জনের এ ইবাদত নষ্ট হতে পারে সামান্য ভুলে। অনেকেই পশু জবাইয়ের সময় সামান্য একটি ভুল করে থাকেন। যে ভুলের কারণে কোরবানির পরিবর্তে তা হত্যায় পরিণত হয়। ভুলটি হলো—


বিজ্ঞাপন


পশু জবাই করার পর পশু নিস্তেজ হওয়ার জন্য ছুরি বা চাকুর ধারালো আগা দিয়ে জবেহ করার স্থানে (মেরুদণ্ডে) আঘাত করে। দ্রুত পশুটি নিস্তেজ হয়ে যাওয়ার জন্যই অনেকে এ কাজটি করে থাকেন। এ কাজটি কোনোভাবেই ঠিক নয়। এতে পশুটি কোরবানি না হয়ে হত্যায় শামিল হওয়ার আশঙ্কাই বেশি। 

ক্ষতিটি হলো—জবাইয়ের ওই স্থানে মেরুদণ্ডে ছুরির আগা দিয়ে আঘাত করলে, অনেক সময় পশু স্বাভাবিক মৃত্যুর আগেই হার্ট অ্যাটাক করে মারা যায়। তখন এটি আর কোরবানি হয় না বরং তা হত্যায় পরিগণিত হয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতেও তা পশু জবাইয়ের সঠিক পদ্ধতি নয়।

যদি কোনো পশু ওই আঘাতে হার্ট অ্যাটাক করে মারা যায় তবে ওই ব্যক্তির কোরবানি আদায় হবে না। ১০/১৫ মিনিট সময় বাঁচাতে ছোট্ট একটি ভুলের জন্য কোরবানিই বরবাদ হয়ে যায়। 

চিকিৎসা বিজ্ঞানের আলোকে পশু জবাইয়ের যে স্থানে তীক্ষ্ণ ছুরি দিয়ে আঘাত করা হয়, সেটি মূলত- ‘মেরুরজ্জু বা স্পাইনাল কর্ড’ এর অংশ। ছুড়ির আঘাতে পশুর স্পাইনাল কর্ড বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলেই পশুর দেহ থেকে মস্তিষ্কের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ফলে পশুটি হার্ট অ্যাটাক করে এবং মারা যায়। তখন এটি জবাই সাব্যস্ত না হয়ে হত্যায় পরিগণিত হয়।

আরও বড় বিপদ হচ্ছে, স্পাইনাল কর্ডের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে সব রক্ত পশুর দেহ থেকে বের হতে পারে না। পশুর দেহের মাংশপেশিতেই রক্ত জমাট বেঁধে যায়। শিরা উপসিরা থেকে পুরোপুরি রক্ত বের হতে না পারলে গোশত দূষিত হয়ে যায়। কোরবানি করা পশুর এ দূষিত গোশত খেলে অনেক সময় ক্যান্সার, এইচবিএএসসহ অন্তত ১৮ ধরনের জটিল রোগের সৃষ্টি হওয়ার প্রবল আশঙ্কা থাকে। তাই সঠিক পদ্ধতিতে কোরবানি ও স্বাভাবিক জবাই সম্পন্ন করা জরুরি।

সঠিক পদ্ধতি হলো—কোরবানির পশুসহ যেকোনো পশু জবাই সম্পন্ন হওয়ার জন্য পশুর মূল ৩টি রগ কেটে দিতে হয়। ৩টি রগ কেটে দেওয়া হলে পশুর দেহ থেকে সব রক্ত বের হয়ে যায়। ফলে পশু স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় মারা যায়। আর এতে সর্বোচ্চ ১০/১৫ মিনিট সময় অপেক্ষা করতে হয়। এভাবে পশু জবাই করা উত্তম। এতে কোরবানি বা জবাই বাতিল হওয়ার আশঙ্কা থাকে না।

এই নিয়ম মানলে কোরবানি হবে বিশুদ্ধ। আর কোরবানি পশুর গোশতও হবে খাওয়ার উপযুক্ত এবং ঝুঁকিমুক্ত। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সঠিক নিয়মে সুন্নত অনুযায়ী কোরবানির পশু জবাই করার সচেতনতা ও তাওফিক দান করুন। আমিন।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর